আজ রবিবার ২৮ জুন বেলা ২ টায় দক্ষিণ সুরমার কামাল বাজার বাসস্ট্যান্ডে
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা কমিটির
সভাপতি কমরেড সিকান্দর আলীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, সিলেট জেলা
কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইন্দ্রানী সেন শম্পার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন – কোভিড ১৯ করোনা বিশ্বব্যাপি এক মহামারী,
মহাদূর্যোগের নাম। অতিতে অর্থ মন্দার ফলে দূর্ভিক্ষ, বন্যা, খরাসহ নানান
প্রাকৃতিক দূর্যোগের প্রান নাশ, জীবন্যাত্রায় লাগবহীন ক্ষতি হলেও মরনঘাতি এমন
ভাইরাসের সংক্রমনের ফলে বিশ্বব্যাপি লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত ও প্রতিদিনের
মৃত্যুর মিছিল এবারই প্রথম বিশ্ববাসি প্রত্যক্ষ করেছে। করোনা আক্রান্তের ফলে
এমন মরনঘাতি ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে হলে যে পূর্ব প্রস্তুতি, চিকিৎসা
সরঞ্জাম, দক্ষ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী প্রয়োজন তা আমাদের নেই। কিন্তু যেটুকুও
আছে তাও চিকিৎসা খাতে দূর্নীতি, অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যহত হয়েছে। আমরা লক্ষ
করেছি কোভিড ১৯ করোনা পরীক্ষা করার জন্য যে পরিমাণ ল্যাব প্রয়োজন তার ঘাটতি
রয়েছে। এছাড়াও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ১০থেকে ১৪দিন সময় লাগে এতে যিনি
ভাইরাসটি নিরবে বহন করছেন তিনি অন্যদের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে আর যিনি করোনা রোগী
না তিনি সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মানসিক ভাবে হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছেন।
বক্তারা আরো বলেন সরকারের দূর্নীতির ফলে মন্ত্রী, আমলা, ডাক্তার, পুলিশ থেকে
শুরু করে সাধারণ মানুষ প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করছেন। সুষ্ঠু স্বাস্থ
ব্যবস্থাপনা না থাকায় সাধারণ রোগীরাও নানান হাসপাতালে ধর্না দিচ্ছে কিন্তু
চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করছে।
সভাপতির বক্তব্যে কমরেড সিকান্দর আলী বলেন – মানুষ যখন করোনা মহামারিতে বিপন্ন
তখনো এক শ্রেণীর দূর্নীতিবাজ পিপিই, অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দূর্নীতিতে
লিপ্ত।বড় অংকের টাকার বিনিময় করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট কেনা বেঁচা কিন্তু সরকার
নির্বিকার। এ মহামারির কারণ মানুষ যখন তীব্র খাদ্য সংকটে তখনো দূর্নীতিবাজ
ব্যবসায়িরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায়, কিছই জনপ্রতিনিধিরা
প্রকাশ্যে ত্রান চুরি করে কিন্তু সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না।
তিনি আরো সরকার সংক্রমিত এলাকাগুলো জোন অনুযায়ী ভাগ করে যেসব এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ
সেসব এলাকায় সাধারণ ছুটি ও লকডাউন দিলেও সিলেট ঝুঁকিপূর্ণ রেড জুনের আওতায়
পড়লেও শুধুমাত্র সিলেটের স্বাস্থ্যবিভাগ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতার
কারণে লকডাউন হয়নি। তিনি বলেন এতেই বুঝা যায় সরকার আজ আমলাদের হাতে জিম্মি হয়ে
আছে। সবশেষে তিনি দশ দফা দাবী পেশ করেন। দাবীসমূহ হলো-
১. করোনা পরীক্ষার ল্যাবের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নমুনা সংগ্রহ চার রাউন্ডে বৃদ্ধি
করা
২. করোনা পরীক্ষায় ভিআইপি কোটা বাতিল করে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা
৩. করোনা টেষ্টে নেগেটিভ রোগীদের তালিকা প্রকাশ করা
৪. শাহপরান, খাদিম, দক্ষিন সুরমার হাসপাতাল ও বেসরকারী হাসপাতাল গুলোতে করোনা
চিকিৎসা চালু
৫ আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আরো একহাজার বেড এর আইসোলেশন সেন্টার চালু
৬. ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্রমানুসারে করোনা পরীক্ষার ফলাফল দিতে হবে
৭. করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্ত সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত
করতে হবে।
৮.চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করণে প্রয়োজনীয় জনবল বাড়াতে হবে
৯. স্বাস্থখাত সহ সকল ক্ষেত্রে দূর্নীতি প্রতিরোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে
হবে।
১০. তথাকথিত লকডাউন নয় একমাসব্যাপি কার্ফিউ দিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চত ও
প্রয়োজনী খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।
পরিশেষে সভাপতি দশদফা দাবী বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে সভা সমাপ্ত
করেন।
মানব বন্ধনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের চেয়ারম্যান
কবি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী,
পার্টি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সভাপতি আলমগীর হোসেন রুমেল, দক্ষিণ সুরমা যুবলীগের
সভাপতি শফিক আহমেদ, ছাত্র মৈত্রী সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা
চৌধুরী, রাজনৈতিক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সালেহ আহমেদ, খাজাঞ্চি ইউনিয়নের সাধারণ
সম্পাদক মোঃ রবিউল ইসলাম। অন্যানের মধ্য উপস্থিত ছিলেন জামাল আহমেদ, হেলাল
আহমেদ, কামরুল ইসলাম, জাবের আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, সুয়েজ খানসহ জাতীয় শ্রমিক
ফেডারেশন ও কৃষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।