সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতকে রিক্সা চালক থেকে অল্প দিনে অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এখলাছ খাঁন নামে এক ব্যাক্তি অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে। এখলাস খাঁনের জন্ম চাদপুরে। তার বাবার নাম রমজান আলী। স্থানীয় সুুত্রে জানা যায়, উপজেলার বৌলাগ্রামের রিক্সা মালিক কবির মিয়া ও মুক্তিরগাঁও গ্রামের জমির উদ্দিনের গ্যারেজে কিছু দিন আগেও রিক্সা চালিয়েছেন এখলাস খাঁন। তাঁর আয়ের কোনো উৎস ছিলনা।
ছিলনা চাকরি কিংবা ব্যবসা। কিন্ত এত অল্প দিনেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এখলাছ খান। এ যেনো আলাদীনের চেরাগ। অভিযোগ উঠেছে, এখলাস খাঁনের নেতৃত্বে ছাতকে রয়েছে ভূমি ব্যবসার একটি ভূমিখেকো সিন্ডিকেট চক্র। এখান থেকেই কোটিপতি হওয়ার যাত্রা রচিত হয়। এর পর লক্ষ লক্ষ ঘন ফুট বালু পাথর ষ্টক, হাজার মেট্রিক টন চুনা পাথর আমদানী, শাহপরান ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ, রিফাত ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ, শাহপরান সেনেটারী, শাহপরান টেইলার, সাদিয়া নৌ-পরিবহন দুটি, রিফাত থাই অ্যালমুনিয়াম, রিফাত স্টোন ক্রাসারসহ নামে বেনামে গড়ে তুলেন অনেক প্রতিষ্ঠান।
ছাতক শহরে শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায় আলিশান বহুতল ভবন। এক সুত্রে জানা যায়, রিজন্ট হাসপাতালাদের মালিক মো. শাহেদের নিকট ২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে এখলাছ খাঁনের। এ বিষয়টি জানাজানি হলে সর্বমহলে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। রিজেন্ট হাসপাতালাদের মালিক মো. শাহেদের সঙ্গে এত বিরাট অংকের লেনদের বৈধ ব্যাবসায়িক ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে । সুত্র আরো জানায়, লেনদেন করার পর মো. শাহেদের নিকট থেকে টাকা আদায় করতে পারছিলেন না এখলাছ খাঁন। থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রিজেন্ট হাসপাতাল মালিক মো. শাহেদ বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান এখলাছ খাঁন। কিন্ত অভিযোগে কিছু ভুল থাকার কারনে সংশোধন করে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ২০০৩ সালের আগেও রিক্সা চালিয়েছেন এখলাছ খাঁন। অল্প দিনে অবৈধভাবে উপার্জন করে কোটি কোট টাকার মালিক হয়েছেন। তার আয়কর রিটার্ন থেকে আয়ের উৎস ও সম্পদের বিবরন জেনে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট এখালাস খাঁনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তারা।
এখলাছ খাঁনের অবৈধ সম্পদ, অপরাধ আড়াল ও নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে সংঘবদ্ধ ভূমিখেকো সিন্ডিকেট চক্র এ অভিযোগও রয়েছে। তবে এখলাছ খাঁনের অপরাধ জগৎ এতই বিশাল যে তার বিরুদ্ধে মুখ খুরতে নারাজ অনেকেই। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কত কোটির টাকার মালিক হলে দুই কোটি টাকা পাওনাদার হওয়া যায় অনুমান করতে হবে। এখলাছ খাঁন কয়েকদিন আগেই রিক্সা চালিয়েছে। একজন রিক্সা চালক রাতারাতি কিভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হলো তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট দাবি জানান তিনি। এ ব্যাপারে সমালোচিত ব্যবসায়ী এখলাছ খাঁনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
ছাতক থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মঈন উদ্দিন বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল মালিক শাহেদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন এখলাছ খাঁন নামে এক ব্যাক্তি। অভিযোগে কিছু ভুল থাকায় সংশোধন করে আনার জন্য বলা হয়। কিন্ত তিনি সংশোধন করার জন্য গেলে আর আসেননি।