শিরোনাম
জান্নাতে যেতে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুুর ৬ উপদেশ! যে কারণে তোষামোদ করতে নিষেধ করেছেন রাসূল সা: মৌলভীবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে মশাল মিছিল অনুষ্টিত শাহ সূফী আল্লামা শিঙ্গাইরকুড়ি ছাহেব (রহ.) এর ৪৩ তম ঈসালে সাওয়াব মাহফিল ১লা জানুয়ারি ২০২৪ মৌলভীবাজারের ৪টি আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩৩ জন দোয়ারাবাজারে আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিল ও উল্লাস দোয়ারাবাজারে তরুণদের টিভি উপহার দিলেন অ্যাডভোকেট কানন আলম আমার স্বরচিত কাব্য একক ও যৌথ ১০ টি বই প্রকাশিত হয়েছে ও পরকীয়া নিয়ে আল্লাহর সতর্কবার্তা বিয়ানীবাজারে সৈয়দ নবীব আলী কলেজের নবনির্বাচিত গভর্নিং বডিকে সংবর্ধনা প্রদান
সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৫২ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

ওসমানী নগরের কুরুয়ার টিটুর প্রতারণায় অনেকেই সর্বহারা

Coder Boss / ৩৪৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সিলেটের মানুষের স্বপ্নের শহর লন্ডন। সবারই স্বপ্ন থাকে লন্ডনে যাওয়ার। আর এই স্বপ্নে বিভোর থাকা সিলেটবাসীকে ধোঁকা দিয়ে চলেছে প্রতারক চক্র। কেউ স্টুডেন্ট ভিসা, কেউ ভিজিট ভিসা, আবার কেউ লন্ডনে চাকরি নেয়ার কথা বলে লুটে নিচ্ছে টাকা। মাঝপথে নিঃস্ব হয়ে পথে পথে ঘুরছে মানুষ। তেমনি এক প্রতারক সিলেটের আবুল হাসান জুবেল। বেশ-ভুষায় চাকচিক্য তার। কথা বলে ইংলিশ-বাংলা মিশিয়ে।

নিজেকে এয়ার এরাবিয়ার সাবেক কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। আবার কখনো কখনো বলে ইউনাইটেড এয়ারের কর্মকর্তা। এসব পরিচয় দিয়ে সে লন্ডনে নেয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে লুটে নিচ্ছে টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ বিস্তর থাকলেও তার বিরুদ্ধে কেউ মামলায় যায়নি। অবশেষে প্রতারক আবুল হাসান জুবেলের বিরুদ্ধে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী মাওলানা মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

পুলিশ এখন খুঁজছে আবুলকে। কিন্তু তার টিকিটিও পাচ্ছে না। কোথাও নেই তার স্থায়ী বসবাস। কখনো ঢাকায়, কখনো সিলেটে চুপিসারে বসবাস করে সে। বার বার করছে মোবাইল নম্বর পরিবর্তনও। গত ১১ই সেপ্টেম্বর সিলেটের কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় মাওলানা ফরিদ আরো তিনজনকে আসামি করেছেন।

এরা হচ্ছে- আবুলের ভাই শরিফ আল হাসান পাবেল, ওসমানী নগরের কুরুয়া এলাকার বাসিন্দা টিটু মিয়া ও লন্ডনের হ্যাম্পশায়ার এলাকার বাসিন্দা মিনহাজুল হুদা। মাওলানা ফরিদ উদ্দিনের মূল বাড়ি জকিগঞ্জ উপজেলার উত্তরকুল এলাকা। বর্তমানে তিনি নগরীর শামীমাবাদ এলাকার বাসিন্দা। নগরীর ঘাষিটুলা একটি মাদ্রাসায় তিনি শিক্ষকতা করেন। মামলার এজাহারে মাওলানা ফরিদ উল্লেখ করেছেন- লন্ডন নেয়ার কথা বলে আবুল ও তার সহযোগীরা তার কাছ থেকে তিন দফায় লুটে নিয়েছে ৮ লাখ টাকা। এতেও নিয়েও তারা ক্ষান্ত হয়নি। যখন তাদের প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায় তখনই তারা খুন করে ‘গুম’ করার হুমকি দেয়।

এমন ঘটনায় তার পরিবার বিপর্যস্ত বলে জানান ফরিদ। আবুল ও তার সহযোগীদের প্রতারণার শিকার হওয়ার ঘটনা জানিয়েছেন মাওলানা ফরিদ। তিনি জানান- শুধু তিনি নন, আবুলের প্রতারক সিন্ডিকেটের হাতে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। সে বহু মানুষের পাসপোর্ট নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। জানান- দুই বছর আগে সে বিশ্বনাথের চানবরাং মাদ্রাসার নাজিম ছিলো। সেই সুবাদে ওসমানীনগরের কুরুয়া এলাকার টিটু মিয়ার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। টিটু রঙের কাজ করে। প্রায় দুই বছর আগে টিটুই প্রথমে তাকে লন্ডনের স্বপ্ন দেখায়। জানায়- তার কাছে লোক আছে। টাকা দিলেই লন্ডন নিয়ে যাবে। ওখান থেকে স্পন্সর এনে তাকে লন্ডন নিয়ে যাবে বলে জানায়। টিটুর এই কথায় ফাঁদে পড়েন মাওলানা ফরিদ।

ওই মাদ্রাসায় চাকরির করা কালীন গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আবুল হাসান জুবেল, তার ভাই শরিফ আল হাসান পাবেলকে নিয়ে টিটু তার সিলেট নগরীর বাসায় যায়। সেখানে আসার পর আবুল নিজেকে এয়ার লাইন্সের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। জানায়- বৃটেনের হ্যাম্পশায়ারে তার আত্মীয় মিনহাজুল হুদা রয়েছে। সে ওখানকার স্পন্সর দেবে এবং যাবতীয় সব আবেদন করবে। ভিসা হয়ে গেলে তাকে লন্ডনে নেয়া হবে। এ কথা বলে প্রথমে আবুল পাসপোর্ট ও নগদ এক লাখ টাকা চায়। তার কথামতো মাওলানা ফরিদ উদ্দিন তাকে গত বছরের ৬ই ফেব্রুয়ারি নগদ এক লাখ এবং পাসপোর্ট হাতে তুলে দেন। এরপর টিটু ও পাবেলকে নিয়ে আবুল তার বাসা থেকে চলে যায়। এরপর থেকে মাওলানা ফরিদ মানসিকভাবে লন্ডনে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। ফেব্রুয়ারির শেষদিকে এসে আবুল মাওলানা ফরিদের কাছে আরো দেড় লাখ টাকা চায়। এবং জানায়- তার ভিসা এপ্রিলের মধ্যে হয়ে যাবে। মে মাসের মধ্যেই সে লন্ডনে চলে যাবে। তার কথামতো টাকা জোগাড় করে মাওলানা ফরিদ ওই বছরের ২৭শে মার্চ তার হাতে দেড় লাখ টাকা তুলে দেন। নগরীর শেখঘাটের পূবালী ব্যাংক থেকে ওই টাকা উত্তোলন করে দেয়া হয়। এই টাকা দেয়ার পর ৩০শে মার্চ আবুল হোসেন টিটু ও পাবেলকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় আসে। এসে জাল টিকিট ও স্পন্সরের কাগজ দেয়। এ সময় জানায়- আরো সাড়ে ৫ লাখ টাকা রেডি রাখতে। ভিসা হওয়ার আগেই ওই টাকা পরিশোধ করতে হবে। এ সময় মোবাইল ফোনে মাওলানা ফরিদের পিতা শুয়াইবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে আবুল। মধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ার কারণে টাকা হাতে না থাকায় জমি বিক্রি করেন মাওলানা ফরিদের পিতা। ছেলেকে লন্ডন পাঠানোর স্বপ্ন নিয়ে তিনি জমি বিক্রির সাড়ে ৫ লাখ টাকা তুলে দেন ছেলের হাতে।

এরপর ১০ই এপ্রিল টাকা নিতে আবুল, টিটু ও পাবেল আসে মাওলানা ফরিদের বাসায়। তারা বাসায় এসে ওই টাকা নিয়ে যায়। এবং মে মাসে লন্ডনের ফ্লাইট দেয়া হবে বলে জানিয়ে যায়। মাওলানা ফরিদ উদ্দিন জানান- সর্বশেষ সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেয়ার পর থেকে আবুল ও তার সহযোগীদের আচরণ বদলাতে থাকে। তারা ফোন ধরে না। মাঝে-মধ্যে ফোন বন্ধ রাখে। বিদেশ যাওয়ার কোনো ফাইনাল তথ্যও দেয় না। এতে বিচলিত হয়ে পড়েন তিনি। এরই মধ্যে তার কাছে খবর আসে আবুলের প্রতারণার নানা কাহিনী। লন্ডনে নেয়ার কথা বলে সে অনেকেরই কাছ থেকে এভাবে পাসপোর্ট ও টাকা নিয়ে গেছে। একইভাবে জাল কাগজপত্র দিয়েছে। এই খবর শোনার পর তিনিও বিমর্ষ হয়ে পড়েন। পরে নানা মাধ্যমে যোগাযোগ করে গত বছরের ডিসেম্বরের তিনি খোঁজ পান আবুলসহ তার সিন্ডিকেট সদস্যদের।

এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বললে জানায়- ‘বিদেশ পাঠানো যাবে না। টাকা চাইলে খুন ও গুম করা হবে।’ এদিকে- প্রতারণার এই ঘটনায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেটের আদালতে মামলা করেন মাওলানা ফরিদ। এরপর আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা রেকর্ড করে। কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার হয়নি কোনো আসামি।

মাওলানা ফরিদ জানান- আবুল ও তার ভাই পাবেলে মূল বাড়ি গোলাপগঞ্জের কোনার চক এলাকায়। কিন্তু তারা বাড়িতে থাকে না। প্রতারণা করার কারণেই অনেক আগে থেকে তারা বাড়িছাড়া। এখন কোথায় থাকে কেউ বলতে পারে না। অনেক আগে তারা ফেঞ্চুগঞ্জের সার কারখানা এলাকায়ও বসবাস করতো। এখন সেখানেও নেই। তিনি বলেন- আবুলের নেতৃত্বে সিলেটে তার কয়েকটি প্রতারক চক্র রয়েছে। তারা লন্ডনে নেয়ার কথা বলে মানুষদের এভাবে ধোঁকা দিয়ে চলেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন