কানাইঘাট প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন আজ। মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
গ্রামবাংলার ধুলামাটি আর সাধারণ মানুষের সাথে বেড়ে ওঠেন শেখ হাসিনা। গ্রামের সাথে তাই তার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর পরিবারকে তিনি ঢাকায় স্থানান্তর করেন। তিনি পুরান ঢাকার মোগলটুলির রজনি বোস লেনে বসবাস শুরু করেন।
পরে বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচিত হলে আবাসস্থল স্থানান্তরিত হয় ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। এভাবেই শুরু হয় তার শহরবাসের পালা।১৯৬৫ সালে শেখ হাসিনা আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। সে বছরই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজছাত্রী সংসদের সহসভানেত্রী পদে নির্বাচিত হন।
বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে শেখ হাসিনার বিয়ে হয় ১৯৬৮ সালে। বিয়ের কিছু দিন পর শুরু হয় ১১-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান। রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই তার রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশ-মাতৃকার হাল ধরার। ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। দেশে ফিরে ১৬ বছর ধরে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনো কিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি।
১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বার এবং স্বাধীন বাংলাদেশের চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।