পলাশ পাল স্টাফ রিপোর্টারঃ
গতকাল শুক্রবার বিকেলে তিন বান্ধবী বাড়িতে থেকে ডেকে নেওয়ার পর আজ শনিবার সকালে ইয়াসমিনকে রাস্তায় আধমরা অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার মেরাসানী গ্রামের নূর হোসেন স্ত্রী ও এক মেয়ে সন্তান রেখে আট বছর আগে মারা যান। মৃত্যুর পর থেকে তাঁর স্ত্রী আয়েশা বেগম শিশুমেয়ে ইয়াসমিন আক্তারকে নিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় জীবনযাপন করতেন। এর মধ্যে মেয়ে ইয়াসমিন মাধবপুর উপজেলার মনতলা ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণিতে ওঠে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মনতলা রেলস্টেশন এলাকার ইয়াসমিনের তিন বান্ধবী এসে তাকে তাদের বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়।
আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে ইয়াসমিনের মা খবর পান ইয়াসমিন রাস্তায় পড়ে আছে। তিনি সেখানে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় মেয়েকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক ইয়াসমিনকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিতে বলেন। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্মরত চিকিৎসক ইয়াসমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে ইয়াসমিনের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে মায়ের কাছে ইয়াসমিনের লাশ হস্তান্তর করে।
মেয়ের লাশ পাওয়ার পর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা আয়েশা বেগম। হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের সামনে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ও মা, তুমি আমারে কই থুইয়া গেলা? ও মাই, তুমি কই গেলা? আমি কই যাইতাম? আমি কী করতাম, কিতা না? ও মাই, আমি কিতা করতাম?
আয়েশা বেগম জানান, বান্ধবীদের বাড়িতে পরিকল্পিত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ইয়াসমিন। ধর্ষণের পর বান্ধবীদের সহযোগীরা ইয়াসমিনকে রাস্তায় ফেলে রেখে দুর্ঘটনার নাটক তৈরি করে। অথচ ইয়াসমিনের চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাকে রক্ত আছে।
‘আমার মাইয়ারে তো জিতা (জীবন্ত) নিছে তিন মাইয়া। অহন আমার মাইয়া আধামরা পাইছি। অহন আমি তো মাইয়া চাই। আমার তো দুনিয়াত আর কেউ নাই। আমি মাইয়া চাই। আমি বিচার চাই। বিচার চাই। আমার কেউ নাই।