রিতেষ কুমার বৈষ্ণব (হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি)
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নে ঐতিহাসিক কমলা বতীর দিঘি ( সাগর দিঘি) অবস্থিত।
প্রায় ৬৬ একর জায়গা জুড়ে এই দিঘির অবস্থান। চারদিকে সবুজের ছায়া ঘেরা।
প্রকৃতির সাথে সাথে যেন এই দিঘিটি ও রূপ বদল করে।
জানা যায় - প্রায় দ্বাদশ শতাব্দীতে রাজা পদ্মনাভ প্রজাদের জলকষ্ট নিবারণের জন্য বানিয়াচং গ্রামের মধ্য ভাগে একটি বিশাল দিঘিটি খনন করেন।
এই দিঘি খননের পর পানি না উঠায় স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে রাজা পদ্মনাভের স্ত্রী রাণী কমলাবতী এ দিঘিতে আত্মবিসর্জন দেন এবং তাৎক্ষণিক দিঘি টি পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে বলে একটি উপাখ্যান এ অঞ্চলে প্রচলিত আছে।
এ জন্য এ দিঘিকে কমলারাণীর দিঘি বলা হয়ে থাকে। এ দিঘি নিয়ে বাংলা ছায়াছবিসহ রেডিও মঞ্চ নাটক রচিত হয়েছে।
এর পাড়ে বসে পল্লী কবি জসিমউদ্দিন ‘রাণী কমলাবতীর দিঘি’ নামে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন। সে কবিতাটি তার ‘সূচয়নী’ কাব্য গ্রন্থে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
এ দিঘিটি বাংলা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিঘি বলে খ্যাতি রয়েছে। ১৯৮৬ সালে দিঘিটি পুনঃখনন করান তৎকালীন মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী সিরাজুল হোসেন খাঁন।
সাগর দিঘির পূর্ব পাড়ে রয়েছে হায়দার শাহ' র মাজার, আমবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আম বাগান উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম পাড়ে রয়েছে এল. আর. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ফুটবল খেলার মাঠ, সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজ, সুফিয়া মতিন টেকনিক্যাল কলেজ, প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী সিরাজুল হোসেন খাঁন মহোদয়ের বাস ভবন, ঐতিহাসিক এড়ালিয়া মাঠ।
উত্তর পাড়ে রয়েছে বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হেদায়েত উল্বাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে সরকারি জনাব আলী ডিগ্রী কলেজ গ্যানিং গঞ্জ বাজার সহ অারও অনেক প্রতিষ্ঠান।
ঐতিহাসিক কমলা বতীর দিঘি পর্যটকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে বহু বছর আগে থেকেই, প্রতি দিন বিকেলে এই দিঘির পাড়ে দূর দূরান্ত থেকে ছুুটে আসা দর্শনার্থীদের মিলন মেলায় পরিনত হয়।
দিঘির পশ্চিম পাড়ে দারা গুটি গুলো উল্লেখ যোগ্য।
বানিয়াচং বাসির দীর্ঘ দিনের দাবী এবং প্রত্যাশা এই ঐতিহাসিক কমলা বতীর দিঘি কে যেন পর্যটন কেন্দ্র করা হয়।