রাকিবুল হাসান সুমন, যশোর জেলা প্রতিনিধি:
কেশবপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ের হাত থেকে মুক্তি পেলেন সাবদিয়া গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী পুস্পিতা দাশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাবদিয়া-বাজিতপুর গ্রামে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাবদিয়া-বাজিতপুর গ্রামের স্কুলছাত্রী পুস্পিতা দাশ (১৩) গত ৩০ নভেম্বর (সোমবার) সকালে স্কুলে যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। পরবর্তীতে সে বাড়ী ফিরে না যাওয়ায় পরিবারের লোকজন খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন। অনেক খোজা-খুজির এক পর্যায়ে জানতে পারে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে যশোর জেলার বাহাদুরপুর গ্রামের পাচু দাশের ছেলে বাপ্পী দাশের (১৬) সাথে পালিয়ে গেছে। তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে বলে বাপ্পী দাশের নিজ বাড়িতে পুস্পিতাকে নিয়ে যায় । খবরটি নিশ্চিত করে মেয়ের বাবা নিতাই দাশ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ও মেয়েকে ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য ১ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকালে কেশবপুর থানায় ও ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি ,গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখায় একটি লিখিত অভিযোগও করেন। বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি সেজন্য তাৎক্ষনিকভাবে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দীনের নির্দেশে বুধবার বিকালে উপ-পরিদর্শক লিখন ও সহকারি উপ-পরিদর্শক রহমত আলি সঙ্গীয় ফোর্সসহ গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শামীম আখতার (মুকুল) ও মানবাধিকার বিষয়ক সচিব মৃদুল সরকার, মেয়ের বাবা-মামাসহ বাহাদুরপুর গ্রামের পাচু দাশের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে পুস্পিতা দাশকে উদ্ধার করেন।ওই সময় বাপ্পী দাশ বাড়ী থেকে পালিয়ে যায়।পরবর্তীতে স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সালিশী-বৈঠাকের মাধ্যমে ছেলে-মেয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারবেনা বলে উভয় পরিবারের অভিভাবকদের মুচলেকা নিয়ে আপোষ-মিমাংসা নামায় স্বাক্ষর প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ও মেয়েকে ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য নিতাই দাশ একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ।অভিযোগের ভিত্তিতে বাহাদুরপুর গ্রামের পাচু দাশের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে স্কুলছাত্রী পুস্পিতা দাশকে উদ্ধার করা হয়। বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধী ও আইনত অপরাধ । মেয়েকে বাল্যবিয়ের কুফল ও আইনগত অপরাধের বিষয়ে বুঝিয়ে ও প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেনা এ শর্তে মেয়ের বাবার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে মেয়ের পরিবারের কাছে পুস্পিতাকে তুলে দেওয়া হয়।