রিতেষ কুমার বৈষ্ণব( হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি)
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলায় খিরার বাম্পার ফলন । এই বছরে আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে, প্রতি বছর অক্টোবর মাসে শুরু হয়ে জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে খিরার ফলন, এই তিন মাসের ফলনে কৃষক পরিবারে ঘুম যেন হারাম হয়ে যায়।
সাড়া দিনব্যাপী নারী-পুরুষ সকলে মিলে খিরা ক্ষেতে কাজ করে। জমিতে ছোট্ট কুড়ের ঘর বা ডেরার মতো ঘর তৈরি করে সেখানেই রাত্রীযাপন করে ক্ষেত পাহারা দেয় খিরা চাষী। উপজেলার যেসব এলাকায় খিরা চাষ করা হয়েছে সেই সব এলাকার যেই দিকে তাকাই সে দিকেই দেখি খিরা ক্ষেত সবুজ পাতা আর হলুদ ফুলের সমারোহ পুরো এলাকা সৌন্দর্য দেখে মন প্রাণ ভরে যায়।
উপজেলার যে সমস্ত জায়গা গুলোতে খিরা চাষ বেশি হয় তাদের মধ্যে ২নং ইউনিয়নের আমির খানী, ৩ নং ইউনিয়নের দেশমুখ, ডালি মহল্লা, ৪ নং ইউনিয়নের যাত্রা পাশা, শরীফ খানী, ৫ নং ইউনিয়নের হিলাল নগর, তেল ঘরি, কালি পুর, করচা, আড়িয়াম গুর, ১৩ নং মন্দরী, ১৪ নং মুরাদপু সহ আশপাশের এলাকায় প্রচুর খিরা চাষ করা হয়েছে।
খিরা বাংলা দেশের অর্থকরি ফসলের মধ্যে এটিও একটি। আমাদের সমাজে খিরার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। উপকারী এই শস্যটি অসাধারণ গুণে গুণান্বিত। নিয়মিত খিরা খেলে আমাদের দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ ও বর্জ অপসারণে সাহায্য করে, মানুষের কিডনিতে পাথর গলতে সহযোগিতা করে।
ভিটামিনের অভাব পূরণ করে আমাদের দেহে যেসব ভিটামিনের প্রয়োজন তার বেশীর ভাগই খিরাতে বিদ্যমান যাহা শরীরে রোগ প্রতিরোধ করে ও ক্ষমতা বাড়ায়।
খিরা চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়- তিন জাতের খিরার চাষ এই এলাকায় বেশি চাষ করা হয় এবং ফলন ও ভাল হয় এর মধ্যে ষাইট্যাজাত বপন করার ৪৫ দিনের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করে এবং ফল দেয় ৬০-৭০ দিন যাবত। নওগাঁ গ্রিন জাত এটাও ৪০-৪৫ দিনে ফল দেওয়া শুরু করে। আরেকটি জাত হলো নওয়া-৫। প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৩ থেকে ৪ টন।
স্থানীয় যাত্রা পাশা গ্রামের আয়নাল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান নওগাঁ গ্রীণ জাতের খিরাটা সবচেয়ে ভাল ফলন হয়, তাই এই জাতের খিরার বীজ বেশি বপন করেছি । এই জাতের খিরা চাষে এই বছর প্রচুর লাভ হয়েছে, কিন্তু আমাদের এলাকায় বাজার জাত করার মতো উপযুক্ত জায়গার অভাবে আমাদের এলাকায় খিরা বিক্রি করতে পারছিনা, পাইকারী ব্যবসায়ী গনের মাধ্যমে ঢাকায় এবং চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছে। কৃষি অফিসের সার্বিক নজরদারিতে আমাদের খিরা চাষ ভাল হয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত দাম পাচ্ছি না।
স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করার কোন ব্যবস্থা নেই, ফলে কৃষকদের তুলনায় মধ্যস্বত্ব ভোগীরা লাভবান হয়ে যাচ্ছে বেশি।