মোঃ ইকবাল হোসেন মাহদী
স্টাফ রিপোর্টার কুলাউড়া।
আজ ১৫ জানুয়ারী। উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ, শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলা (রহ.)’র ১৩তম ইন্তেকালবার্ষিকী। প্রত্যেক বছর এই দিনকে কেন্দ্র করে বালাই হাওর জুড়ে বয়ে যায় জনসমুদ্র। তবে এবার করোনার প্রকোপে ভিন্নচিত্র। বালাই হাওর জুড়ে বইছে নীরবতার ছাপ। এবছর ১৫জানুয়ারী কেন্দ্রীক ঈসালে সাওয়াব মাহফিলের আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও ইয়াকুবিয়া হিফজুল কোরআন বোর্ডের অধীনে আল্লামা ফুলতলী (রহ.)’র ঈসালে সাওয়াব উপলক্ষ্যে ৩৮৬৮ কোরআন খতম করা হয়েছে। সপ্তাহব্যাপী ফুলতলীতে ছিলো বার্ষিক খানকা। ৬জানুয়ারী থেকে ১৩ জানুয়ারী পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হয় মাহফিলটি। এতে অংশ নেন সহস্রাধিক মুসল্লী। তাছাড়া, ১৫জানুয়ারী অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য ফ্রি চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে লতিফি হ্যান্ডস। আজ দিনভর ফুলতলীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিনামূল্যে সেবা প্রদান করবেন।প্রত্যেক বছর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত মুরিদীন-মুহিব্বীনের পদভারে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে ফুলতলী। লাখো মুসলিমকে বরণ করতে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে বালাই হাওর। খতমে বুখারী, খতমে খাজেগান, দালাইলুল খায়রাত শরীফের খতম, জিকির মাহফিল, বিষয়ভিত্তিক বয়ান ও স্মৃতিচারণমূলক আলোচনায় নিভৃতে অশ্রু ঝরে আগত মুহিব্বীনদের। আল্লামা ছাহেব ক্বিবলা (রহ.)’র স্মৃতিজড়ানো এই হাওরটি লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। তবে এবছর কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অত্যধিক জনসমাগমে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাহফিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা। ফলে দিনটিকে ঘিরে প্রত্যেকবারের ন্যায় বড় ধরণের আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় শুনশান নীরবতা বিরাজ করছে বালাই হাওর জুড়ে।ফুলতলীর ঈসালে সাওয়াব মাহফিলকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মেহমানদের স্বাগত জানাতে প্রত্যেকবছর পুরো সিলেটজুড়ে শোভা পায় তোরণ, ব্যানার আর ফেস্টুন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন মুরিদীনরা। পুলিশসহ কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী থাকেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। তবে করোনার ছোবলে এবারের ১৫জানুয়ারী অনেকটাই অচেনা রূপে ধরা দিলো। প্রসঙ্গত, আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলা (রহ.) ১৯১৩ সালে জকিগঞ্জের ফুলতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনভর তিনি দ্বীনের খেদমতের পাশাপাশি মানবসেবামূলক কর্মের মাধ্যমে নিজেকে আসীন করেছেন অনন্য উচ্চতায়। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারী এ মনীষী ইন্তেকাল করেন।