সেলিম মাহবুব,ছাতকঃ
দোয়ারাবাজারে নৌকা ডুবিতে নিখোঁজের দুইদিন পর সুরমা নদীতে ভেসে উঠলো শীতেশ রঞ্জন দাশ কদম (৩৪)লাশ।শনিবার গভীর রাতে উপজেলার নুরপুর গ্রাম লাগোয়া সুরমা নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। নিহত শীতেশ রঞ্জন দাশ কদম (৩৪) দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত রসিক লাল দাশের পুত্র। জানাযায়, নিজের ঘরবাড়ি নেই। নেই কোনো ফসলি জমিও। বড় ভাইয়ের বসতঘরের সাথে জোড়াতালি দিয়ে বাঁশের বেড়ার একচালার একটা টিনসেডে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকতেন শীতেশ রঞ্জন দাস কদম (৩৪)। সবার কাছে কদম দাস নামেই পরিচিত। ঘরের সামনেই নদীর পাড়ে একটা টং দোকানের ওপর নির্ভর করে চলতো তার ছোট্ট সংসার। আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে জীবিকার তাগিদে টং দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি দিনমজুরিও করতেন তিনি।শীতেশ রঞ্জন দাশ কদমের দুই সন্তান। বড় সন্তান ডলি রানী দাশকে বিয়ে দিয়েছেন পার্শ্ববর্তী এলাকায়। ছেলে অনিক বাবু দাশ (১৭) ঢাকায় একটি দোকানে সামান্য বেতনে কাজ করে যে কয় টাকা পেতেন তা দিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করতেন।
ছেলে অনিক বাবু দাশ জানান, অভাবের কারণে আমাদের পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি। বাবা তার সাধ্যমতো পরিশ্রম করে এতোদিন ধরে আমাদের সংসারকে টিকিয়ে রেখেছেন। সংসারের সবকিছু তিনিই দেখভাল করতেন। এখন আমাদের মাথার ছায়াটুকুও হারিয়ে গেলো। ইউপি সদস্য দীপক দাশ জানান, অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ ছিলেন কদম দাস। অভাব অনটনের মধ্যেই স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন পার করেছেন। তার অনুপস্থিততে পরিবারটির ওপর বড় ধরনের সংকট নেমে এলো। আমি আমার সাধ্যমতো তাদেরকে সহযোগিতা করব। সমাজের সুহৃদয়বান ব্যক্তিদেরকে পরিবারটির পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানাই।
দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নাজির আলম সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল দুইদিন সুরমা নদীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে শনিবার গভীর রাতে শীতেশ রঞ্জন দাস কদমের লাশ পাওয়া গেছে।প্রসঙ্গত,অন্যদিনের মতো শুক্রবার (২৩ এপ্রিল ) ব্যবসার কাজ বের হন শীতেশ রঞ্জন দাশ কদম। দুপুরে দোয়ারাবাজারের নুরপুর এলাকায় সুরমা নদীতে খেয়া পারাপারের সময় বাল্কহেডের ধাক্কায় নদীর মাঝখানে খেয়া নৌকা ডুবে যায়। ওইসময় নৌকায় থাকা অন্যদেরকে উদ্ধার করা গেলেও খোঁজে পাওয়া যায়নি শীতেশ রঞ্জন দাশ কদমকে।