শেখ অাবুমুছা সাতক্ষীরা –
সাতক্ষীরায় করোনার উর্দ্ধগতি ঠেকাতে শনিবার (৫ জুন) ভোর ৬ টা থেকে সপ্তাহব্যাপী লক ডাউন শুরু হয়।আজ রবিবার (৬জুন) দ্বিতীয় দিনের লকডাউন চলছে। সাতক্ষীরায় সাতদিনের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। সকাল থেকে সাতক্ষীরা শহরে মানুষের যাতায়াত অন্যদিনের চেয়ে খুবই কম লক্ষ্য করা গেছে। নিত্যপণ্যের দোকানপাট ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। জেলা শহরের চারিপাশ ঘিরে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও চলছে ব্যাটারি ভ্যান, ইজিবাইক, টেমম্পু, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন।
দূরপাল্লার কোন যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক, সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়ক, সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়ক, সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের প্রবেশদ্বারে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল চলছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের কয়েকটি টিম মাঠে রয়েছে। সীমান্তে চলছে বিজিবির টহল। শহর এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, নিম্ম আয়ের মানুষ যাতে কষ্টে না থাকে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে। কোন মানুষ না খেয়ে থাকেব না। গরীব ও দুস্থ মানুষের বিষয়টি আমরা ভেবেছি।
তিনি আরও বলেন, লকডাউন চলাকালে সাতক্ষীরা জেলার সর্বত্র কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে। তবে, রোগী পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরী পণ্য বহনকারী ট্রাক এবং জরুরী সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। ঔষধের দোকান ব্যতীত সকল ধরণের দোকানপাট, শপিংমলসমূহ বন্ধ থাকবে। সাপ্তাহিক হাট ও গরুর হাট বন্ধ থাকবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লকডাউন চলাকালীস সময়ে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে দূরপাল্লার সকল যাত্রিবাহীবাসসহ মোটরসাইকেল, ভ্যান,বিক্য্রা, নছিমন, করিমনসহ জেলার অভ্যন্তরিন সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বিশেষ জরুরি পরিসেবা লক ডাউনের আওতার বাইরে থাকবে। তবে, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চালু থাকলেও বন্দরে সবধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। বন্দর এলাকায় ভারতীয় ট্রাকড্রাইভার, হেলপারসহ সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। না মানলে জরিমানা করা হবে। ব্যাংক বিমা খোলা থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছুই চলবে। মাস্ক না পরলে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। সীমান্তবর্তী এলাকায় কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে যাতে ভারতে অবৈধ ভাবে কেউ যাতায়াত করতে না পারেন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন সাফায়াত বলেন, বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলায় করোনা সংক্রমনের হার ৫৩ ভাগ। দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা সদর, কালিগঞ্জ ও কলারোয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগি সনাক্ত হয়েছে। ঘরে ঘরে মানুষের জ¦র, সর্দি, কাশিসহ করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ফলে জেলা ব্যাপী লকডাউন ঘোষণা ছাড়া এটি নিয়ন্ত্রন করা কোন অবস্থায় সম্ভব নয়। আগামী ১২ জুন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় করোনা পরিস্থিতি পর্যালচনা করে লকডাউন বাড়বে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।