সত্যজিৎ দাস।
করোনা ভাইরাসের ‘ডেল্টা’ ধরন বাংলাদেশে সনাক্ত হওয়ার পর থেকে বেড়ে গিয়েছে করোনা পজিটিভ রোগীদের সংখ্যা। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মহামারী করোনা রোধে বাংলাদেশ সরকার সর্বাত্মক লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করেছে।কিন্তু জনসাধারণের অসচেতনতার কারণে এই সর্বাত্মক লকডাউন নিশ্চিত করতে দেশের অনেক এলাকাতেই পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ,ম্যাজিস্ট্রেটগণ সবাই হাঁপিয়ে উঠেছেন। বারবার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মাইকিং করা হলেও,কেউই কোন বিধি নিষেধ মানছেনা,ফলে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলেও বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। সকাল ১০ টা থেকে রাত ১১ টা অব্দি কাজ করে যাচ্ছে বাহুবল উপজেলা প্রশাসন। ০১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সর্বাত্মক লকডাউনের আজ সপ্তম দিন। এমতাবস্থায় প্রতিদিনের ন্যায় বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে যৌথবাহিনীকে সাথে নিয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটগণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যাচ্ছেন। বুধবার (৭ জুলাই ২০২১) বাহুবল ভূমি সহকারী কমিশনার খৃষ্টফার হিমেল রিছিলের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়,এসময় যৌথবাহিনীর অভিযানকালে উপজেলার মিরপুর শ্মশানঘাট থেকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় ঐ এলাকার দেবেন্দ্র সাহা’র পুত্র কিষাণ চন্দ্র সাহা(৪৫) ও মোঃ সিরাজুল ইসলাম মানিক মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম ফয়সল(২৪)কে আটক করা হয়। আটককৃতরা মহামারী করোনাকালীন সময়ে বাহুবল উপজেলার মিরপুর শ্মশানঘাটে বসে গাঁজা সেবন করছিলো,দুপুরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও একশত টাকা করে জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতটি পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খৃষ্টফার হিমেল রিছিল।
এসময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও আনসার বাহিনী সদস্যরা।বিভিন্ন হাট বাজারে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ৩ ব্যক্তিকে ১,০০০/= টাকা জরিমানা করা হয়। বুধবার (৭ জুলাই ২০২১) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাহুবল উপজেলার বাহুবল বাজার,মৌচাক, রাজাপুর বাজার,চৈলতাতলা,দুবারাই বাজার, পুটিজুরী বাজার,দিগাম্বর বাজার স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে পুলিশ,সেনাবাহিনী ও আনসার বাহিনীর সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খৃষ্টফার হিমেল রিছিল সিলেট নিউজ24′ কে বলেন ‘ আমরা সর্বাত্মক লকডাউন নিশ্চিত করতে ও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। কোথাও কোথাও কঠোর হতে হচ্ছে । তবুও জনসাধারণের মধ্যে বিন্দুমাত্র সচেতনতা এখনও তৈরী হয়নি। এই চলমান সর্বাত্মক লকডাউন এবং বাংলাদেশ সরকারের আরোপিত বিধি নিষেধ এ দেশের সর্বসাধারণের মঙ্গলের জন্য। তাই আমি মনে করি,শুধু প্রশাসন না।এই কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জনগণকেও নিজ থেকে সচেতন হতে হবে,সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে,অযথা ঘুরাঘুরি বন্ধ করতে হবে।জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবেই নিশ্চিত হবে সর্বাত্মক লকডাউন,নতুবা আমাদের দেশের অবস্থা ভারতের মতোই হবে,তখন চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার থাকবেনা ‘।