মোঃ মশিউর রহমান, টাংগাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাংগাইলের বাসাইল উপজেলায় এক সপ্তাহ ধরে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঝিনাই নদীর ভাঙনে মাত্র ২০ থেকে ২৫ টি ঘর - বাড়ি ও ফসলি জমি ঝিনাই নদী সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে লোকজন ঘর- বাড়ি নিরাপদ স্থান বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। ওখানকার লোকজন চোখের পলকে শেষ সম্বল হারিয়ে ফলছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিল পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ সাহেব'র বীর নিবাস বর্তমানে ভাঙনের শঙ্কায়, ভুক্তভোগীরা ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। টাংগাইলে যমুনা নদী ও ঝিনাই নদীর পানি কমতে শুরু করছে, নদী তীরবর্তী মাত্র ০৫ টি উপজেলার চরাঞ্চলে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এলাকাগুলো হলো- টাংগাইল সদর, কালিহাতী, নাগরপুর, ভূঞাপুর ও বাসাইল উপজেলায় কয়েকদিন ধরে ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে শুরু করছে।
সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের মাত্র ০৩ টি ওয়ার্ডের ঘর - বাড়ি, তাঁত-শিল্প, স'মিল ও হাট যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। মাহমুদনগর ইউনিয়নের মাকরকোল, কেশবমাইঝাইল, তিতুলিয়া, নয়াপাড়া, কুকুরিয়া, বারবাড়িয়া, কাতুলী ইউনিয়নের দেওরগাছা, রশিদপুর, ইছাপাশা, খোশালিয়া, চানপাশা ও নন্দপাশা, হুগড়া ইউনিয়নের মসপুর, বারবেলা, চকগোপাল ও কচুয়া ভাঙনের কবলে পড়েছে। কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের আলীপুর, ভৈরববাড়ী, নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইকশা মাইঝাইল, খাস ঘুণি পাড়া, খাস তেবাড়িয়া, চর সলিমাবাদ, ভূতের মোড়, ভারড়া ইউনিয়নের শাহজানি, ভারড়া, পাঁচতারা, আগদিঘলীয়া, ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা ক্রমাগত বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড হাটখোলা রক্ষার জন্য তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা হিসেবে প্রায় ৩০০ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ফেলছে, জিওব্যাগ সমূহ যমুনার তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।
ভাঙনের শিকার হয়ে কাকুয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের অধিকাংশ জায়গা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, কয়েকদিনের ভাঙনে ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় গ্রাম চরপৌলীর বহু স্থাপনা ও ঘর - বাড়ি যমুনায় চলেছে এবং সদর উপজেলার মাহমুদ নগর ইউনিয়নের গোলচত্তর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছন কাকুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। টাংগাইলের চরাঞ্চলের বিশাল এলাকা প্রতি বছর যমুনা ভাঙনের শিকার, ভাঙনরোধে গত তিন বছর আগে একটি স্থায়ী বাঁধের প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, দীর্ঘ তিন বছরেও প্রকল্পটি অনুমোদন না হওয়ায় কাজ করা সম্ভব হয়নি, এ ব্যাপারে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা হিসেবে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে টাংগাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিককে এ কথা জানান।