গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যার পানিতে সালুটিকর -গোয়াইনঘাট, রাধানগর – গোয়াইনঘাট সড়ক উপজেলা সদরের সাথে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলসহ উপজেলার সিংহ ভাগ এলাকার মানুষ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছেন। পাহাড়ি ঢলের কারণে গোয়াইনঘাটের পিয়াইন,সারী এবং গোয়াইন অববাহিকায় নদ-নদীর পানির বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।গত ৭ দিন থেকে টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় জেলা সদরের সাথে গোয়াইনঘাটের যোগাযোগ রক্ষাকারী সালুটিকর – গোয়াইনঘাট সড়ক, এবং গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী রাধানগর – গোয়াইনঘাট সড়কসহ সবকটি সড়কেই কোথাও হাটু পানি কোথাও কোমর পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। অপর দিকে গোয়াইনঘাট – সারিঘাট সড়কের কিছু কিছু অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।
আকষ্কিক বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় গোয়াইনঘাটের প্রায় সবকটি এলাকায় বিদ্যালয় সমূহ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছেন।
বিপদ সীমার উপর দিয়ে নদ-নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ায় জাফলং, বিছনাকান্দিসহ কোয়ারী এলাকাগুলোতে পাথর,বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল ও হাওর এলাকায় পানি বন্ধী মানুষের দূর্ভোগ হাহাকার মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সারীঘাট পয়েন্টে সারী নদীর পানি বিপদ সীমার ১১.৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৬টায় ১২.৩০ মিটার এবং সকাল ৯টায় ১২.১৯ মিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জাফলং পয়েন্টে পিয়াইন নদীর পানি সকাল ৬টায় ১২.৯৭ মিটার এবং ৯টায় ১২.৭৩ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১২৯ মি.মি.।
গোয়াইনঘাটের বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, আকষ্কিক পাহাড়ি ঢলে বন্যায় পানি বন্ধী হয়ে মারাত্মক দূর্ভোগ ও ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন তারা। বেশিরভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। পানিবন্দি এলাকায় জরুরী ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে প্রায় সবকটি ইউনিয়নের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জানান।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, গোয়াইনঘাটের অসহায় মানুষের জন্য সরকারি ত্রান সহয়তা ত্রিফল ত্রি সেন্টার চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, গোয়াইনঘাট বাসীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রান মজুত রয়েছে।
পাশাপাশি গোয়াইনঘাটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন সমূহের মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের জন্য আগামীকাল ত্রান বরাদ্দ দেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই গবাদিপশুর জন্য ১০০০ কজি গো-খাদ্যের মধ্যে সাড়ে ৩০০ কেজি গো-খাদ্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিজে উপস্থিত থেকে বিতরণ করেছেন।