বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

শ্যামনগর উপকূলের শ্রমজীবী শিশুদের হাতে এখন বই

Coder Boss / ২২৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১

শেখ অাবুমুছা সাতক্ষীরাঃ

এক বছর আগেও ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপদজনক শ্রম কখনো চিংড়ী, কখনো কাঁকড়া ও কখনো বিভিন্ন ধরণের মাছ ধরাসহ কঠোর পরিশ্রমের সাথে জড়িত ছিল ফয়সাল শেখ। দিনমান খাটতে হতো ছোট্ট ফয়সালকে। সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে আয় করত মাত্র একশত টাকা। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে তা তুলে দিত মায়ের হাতে। আশপাশে বিদ্যালয় না থাকায় পড়ালেখা হচ্ছিল না। কিন্তু এখন সেসব অতীত। ফয়সাল নিয়মিত বিদ্যালয়ে যায়। আলোর উত্তরণ শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির এই ছাত্রের চোখে এখন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। ফয়সাল শ্যামনগরের মথুরামপুর গ্রামের শেখ আবুজার ও ফরিদা বেগমের সন্তান।
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় এলাকার ফয়সাল শেখের মতো বহু শ্রমজীবী শিশু এখন বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। উত্তরণ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা এসব এলাকার শিশুদের জন্য খুলেছে উত্তরণ শিশু শিক্ষা কেন্দ্র নামের চারটি বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়গুলোতে পড়ছে ৩৫০ শ্রমজীবী শিশু। এরমধ্যে ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী ২৫ জন মেয়ে ইন্ডাষ্ট্রিয়াল সুইং মেশিন ও টেইলরিং এবং ২৫ জন ছেলে ইলেকট্রনিকস ও মোবাইল সার্ভিসিংয়ের বিষয়ে তিন মাসের কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
উত্তরণের শিশু শ্রম নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাজমা আক্তার বলেন, শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ,কাশিমাড়ি, বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়নের চার গ্রামে ৪ টি শিশুকেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এই চার টি ইউনিয়নের চারটি লার্নিং সেন্টারে ৩৫০ জন শ্রমজীবী শিশুকে শিক্ষাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের চিত্রাঙ্কন, সংগীতসহ নানা সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও খেলাধুলায় যুক্ত করা হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে উত্তরণের শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষকের সঙ্গে গলা মিলিয়ে নামতা পড়ছে শিশুরা। চোখে-মুখে শ্রমের ক্লান্তি নেই। আছে দুষ্টুমির হাসি। শিশুদের এমন নির্ভার কষ্টহীন চেহারা দেখে খুশি অভিভাবকেরাও। বিদ্যালয়ের অদূরে দাঁড়ানো কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘আমরা ভাবতেই পারিনি এভাবে ওরা পড়ার সুযোগ পাবে। বাচ্চারা পড়ছে দেখে খুব ভালো লাগছে।’
এ শিখন কেন্দ্রের শিক্ষার্থী নয়ন মন্ডল, তাইজুল সরদার, ফুলঝুরি, সীমা বারুই, সোনামনি সরদারসহ কয়েকজন জানায়, শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে পড়তে তাদের ভালো লাগে। কারণ বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি তারা এখানে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছে। উপকূলীয় এলাকার এই শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে মুক্ত করে শিখন কেন্দ্রে পড়াতে পেরে স্থানীয়দের মাঝেও উৎসাহ দেখা যায়।
শ্যামনগর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সোহাগ হোসেন জানান, মূলত ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিয়োজিত স্কুল বহির্ভূত শিশুদের শিক্ষার মূল স্রোতে আনার জন্যই এ ব্যবস্থা। এটি দুর্গম ও পিছিয়ে পড়া উপকূলীয় এলাকায় অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব আবুল কাশেম মোড়ল বলেন, উত্তরণের এডুকো প্রকল্পের এই কার্যক্রম উপকূলীয় এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। স্কুলটি যাতে স্থায়ীরূপ পায় সেজন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ.ন.ম. আবুজর গিফারী বলেন, শিশু শ্রম নিরসনে এসকল কার্যক্রমে এলাকার শ্রমজীবী ছেলে-মেয়েরা উপকৃত হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

বিভাগের খবর দেখুন