শেখ অাবুমুছা সাতক্ষীরা:
চতুর্থ ধাপে শান্তিপূর্ণভাবে সাতক্ষীরায় শ্যামনগর ও তালা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ ধাপে শ্যামনগরে ১২টির মধ্যে ৯টি ও তালায় ১টি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হলো। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত জেলার চতুর্থ ধাপে জেলায় ৯৮টা কেন্দ্রে অবাধ , সুষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। ভোট চলাকালীন সময়ে কোথাও কোন ধরনের অপ্রিতকর ঘটনা ঘটেনি।
শ্যামনগরের রমজাননগর ইউনিয়নের মানিকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে সকাল ৯ টায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ওই কেন্দ্রের ভোটার রোজিনা বেগম (৬৯) বলেন ‘ মিলাদিন পরে ভোট দিতে আইলাম, খুব ভালো নাগদিছে। মেশিনে গে টিপ দিলাম , সাথে সাথে ভোট হয়িগেলো ( এই ইউনিয়নে ইভিএম এর সাহায্যে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে )। গাবুরা ভোট কেন্দ্রের ভোটার গাজী আজিজুর রহমান (৭৫) বলেন, অনেক দিন এ ধরনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখিনি। ভোট নিরপেক্ষ হয়েছে। আগামীতে এমন ভোটই আমরা চাই।
এবারের ভোটে তরুন ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের তরুণ ভোটার জগলুল ফারুক (১৯) জানান, জীবনের প্রথম ভোট দিলাম। সাতক্ষীরা শহরে লেখাপড়ার পাশাপাশি এশটি কোম্পানিতে চাকরি করি। ভোট দেয়ার জন্য গতরাতে ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অনেক কষ্ট করে রাতে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছি। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে খুশি। শুনেছি ভোট না-কি কারচুপি হয়। কিন্তু জীবনের প্রথম ভোট দিতে এসে তো কোন ধরনের কারচুপি দেখলাম না। ভালো লাগলো।
সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, দুটি উপজেলার মধ্যে শ্যামনগর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯ টি ও এবং তালা উপজেলার ১টিসহ (কুমিরা ইউনিয়ন) মোট ১০টি ইউনিয়নের ৯৮ টি কেন্দ্রে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৯৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ১১ হাজার ১৭১ জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৮ হাজার ৬২৩ জন।
১০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬৯ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪৪৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে লড়ছেন ১৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করে। এরমধ্যে চেয়াম্যান পদে দলীয় প্রতীকে আওয়ামী লীগের ১০ জন (নৌকা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৭জন (হাতপাখা), জাতীয় পার্টির ৫জন (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র হিসাবে আরও ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বিতা করছেন।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভোট চলাকালীন সময়ে কোথাও কোন ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি।