বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪১ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সারী রেঞ্জে অনিয়ম-দুর্নীতি : ‘ম্যানেজ’ করতে তৎপর সাদ সিন্ডিকেট!

Coder Boss / ২৪০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ক্রাইম প্রতিবেদক:

সিলেট বনবিভাগের সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন-জাফলংয়ের বিট কর্মকর্তা প্রদীপ অনিয়ম-দুনীতির তদন্তে কমিটি গঠিত হলেও সম্ভুক গতিতে চলছে তদন্ত কার্যক্রম। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেঁধে দেওয়া ৭ কার্যদিবস শেষ হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারনে আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন।

এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন তদন্তে যায় টিম। সেখানে সাদ উদ্দিন ও প্রদীপ স্বশরিলে উপস্থিত হয়ে তাদের বাহিনী দিয়ে তদন্ত কমিটির তদন্ত কাজকে ব্যাঘাাত ঘটান।

সরেজমিন রাতালগুল বিট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সাদ উদ্দিন ও প্রদীপের স্থানীয় লাটিয়াল বাহিনী তদন্ত কমিটি পৌঁছার আগেই তদন্ত স্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দৈর মধ্যে আতঙ্ক সৃস্টি করে। ফলে ভয়ে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অনেক প্রত্যদর্শী স্বাক্ষীই ভয়ে উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষী দিতে পারেন নি। এমনকি অভিযোগকারীদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিল তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষী দিতে বাঁধা দেয়া হয়।

তদন্ত কলে সিলেট থেকে যাওয়া এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকলে বিট অফিস থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করে দেয়া চেষ্ঠা করেন সাদ উদ্দিন। পরে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক এসিএফ আবু বকরের হস্তক্ষেপে তিনি ব্যার্থ হন। তবে রাতালগুল বিট অফিস থেকে বিভিন্ন স্পটে সরেজমিন তদন্ত কালে সেখানে কোন সাংবাদিকদের যেতে দেয়া হয়নি। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তকালে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকলে তদন্তকাজ প্রশ্নবৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ ছিলনা বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।

অভিযোগকারীরা জানান, আমরা অভিযোগের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্যপ্রমাণ সহ এসেছিলাম। কিন্তু সাদ উদ্দিনের কাছ থেকে সুবিধা নেয়া স্থানীয় প্রভাবশালী বাহিনী আতঙ্ক সৃষ্ঠি করে আমাদের কাজে বাঁধা দিয়েছে। তারা এটি না করলে আরো স্বাক্ষ্য প্রমাণ দেয়া সম্ভব হত।

বিশ্বস্থ সূত্রমতে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এবং তদন্ত কমিটির উপর চাপ প্রয়োগ করতে সাদ সিন্ডিকেটরা এখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণাদিয়ে এখন সবকিছু ‘ম্যানেজ’ করতে তৎপরতা শুরু করেছে। তারা চাইছে যেকোন উপায়ে তদন্ত কমিটির উপর চাপ প্রয়োগ করে বিষয়টি এখানেই ধামাচাপা দিয়ে দিতে। এতে করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভূগিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সিলেট বন বিভাগের সারি রেঞ্জের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করেত গত ৩০ জানুয়ারি এ বিষয়ে ৩ সদস্যের পৃথক তিনটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়। টিমের সদস্যরা হচ্ছেন সিলেট বিভাগীয় বনবিভাগের এসিএফ আবু বকর, এসিএফ মারুফ ও এসিএফ মাহমুদ। তাদেরকে ৭ দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কমিটির কোন তদন্ত প্রতিবেদন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করা হয়নি।এমনকি তদন্ত কার্যক্রম শুরুই করা হয়নি। অজ্ঞাত কারণে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে বলে ধারন করা হচ্ছে। ফলে সম্পূর্ণ বেপরোয়া সাদ উদ্দিন।

এদিকে তদন্তকাজে বিলম্ব হওয়ায় বনভুমি উজাড় ও লুটপাটের আলামত নষ্ট ও নিশ্চিহ্ন করণ অভিযান শুরু করে দিয়েছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন। সারী রেঞ্জের অধীন জলাবন রাতারগুল থেকে কেটে বিক্রি করা গাছগুলোর মুড়ো মাটি ও ঘাস দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। জাফলং বনভূমিতেও কেটে নেওয়া গাছগুলোর মুড়ো মাটি ও ঘাস দিয়ে ঢেকে ফেলতে রাতদিন কাজ চলছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এমনকি বনের ভূমিতে ৫লক্ষ টাকার বিনিময় গড়ে উঠেছে বিএনপি নেতা ফারুকের দালান ঘর।

এদিকে সরকারি গেজেটে কোন সরকারী কর্মকর্তা একাধারে দুবছরের অধিক সময় এক স্থানে থাকতে পারেন না। কিন্তু সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নানা কৌশলে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে একই রেঞ্জে অবস্থান করছেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, উপরমহলে তদবীর করে আশপাশে স্বল্পকালীন বদলি দেখিয়ে বারবার তিনি এই রেঞ্জে ফিরে আসেন। বরং একই সাথে তিনি সিলেট বনবিভাগের ৭ টি দায়িত্ব নিজের কব্জায় রেখে একাই বনের রাজা হয়ে গেছেন। তিনি একাধারে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তা, সারী, জাফলং ও গোয়াইনঘাটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, এফএফপিসি, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখঘাট এমএফএনটিসি। এছাড়াও তিনি সিলেট টাউন রেঞ্জের বিশেষ টহল বাহিনীর প্রধান। তার দীর্ঘ মেয়াদী পদায়নের ফলে নৈসর্গিক জাফলং বনভূমি উজাড় হয়ে গেছে। হাজার হাজার একর ভূমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। সাদ উদ্দিন নিজেই স্বীকার করেছেন যে, রেঞ্জের প্রায় ২ হাজর একর ভূমি অন্যদের অবৈধ দখলে চলে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, সারী রেঞ্জের গোয়াইনঘাট বিটের দমদমা, কাঠলবাড়িকোনা, সিটিংবাড়ি, কাঠলিকোনার বনভূমির শত শত একর ভূমি রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিনের স্বজনদের দখলে চলে গেছে। আর তা হয়েছে তারই দায়িত্বপালন আমলে। রেঞ্জের সারী বিটে প্রত্যেক বছর শত শত হেক্টর ভূমি বাগান করার জন্য কোটি কোটি টাকা সরকারী বরাদ্দ এনেছেন সাদ উদ্দিন। কিন্তু আদৌ নতুন কোন বাগান করেননি তিনি। পুরনো বাগানগুলো দেখিয়ে বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করেছেন। এমনকি পুরনো বাগানগুলোর গাছ কেটে উজাড় করে নেওয়া হয়েছে তারই শেল্টারে।

অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনে বিলম্বের কারণ সম্পর্কে তদন্ত টিমের সদস্য এসিএফ মারুফ আহমদ জানান, এসিএফ আবু বকরকে আহ্বায়যক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়াক কমিটি গঠনের ৮ দিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে বৃহষ্পতিবার সরেজমিন তদন্তে যাওয়ার পত্র দিয়েছেন। এর আগে তিনি তদন্তের কোন নির্দেশনা পাননি বলে জানিয়েছেন।

তবে তদন্তকালে কমিটির আহ্বায়ক এসিএফ আবু বকর বলেন, তদন্ত কাজ একটি প্রক্রিয়া। এটি শেষ করে প্রতিবেদন দেয়ার আগ পর্যন্ত গণমাধ্যমে কোন বক্তব্য দেয়া যাবেনা। তদন্ত কাজ প্রভাবিত হওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমরা যা পাব তা’ই প্রতিবেদনে তুলে ধরব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন