সিলেট প্রতিনিধিঃ
ডিজিটাল পদ্ধতির অপব্যবহার করে অ্যানড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে জমজমাট হয়ে উঠেছে জুয়ার আসর।
এটাকে নাম দেয়া হয়েছে- অনলাইন জুয়ার আসর। বিভিন্ন অ্যাপ খুলে চালানো হচ্ছে অনলাইন জুয়া।
দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খেলা যায়। এতে দেশের স্কুল-কলেজের ছাত্র, বেকার যুবক ও তরুণ শিক্ষার্থীরা এসব খেলায় জড়িয়ে বখাটে হয়ে যাচ্ছে। তরুণদের অনেকেই কৌতূহল বশত এ খেলা শুরু করার পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় তরুণরা এই জুয়া খেলায় মত্ত্ব।
দিন মজুররা সারাদিন পরিশ্রম করে যেই টাকা উপার্জন করে। সন্ধ্যা হতে না হতেই সেই উপার্জনের টাকা চলে যাচ্ছে তাদের ফুটপাতে গড়া ক্যাসিনোতে।
বিভিন্ন রকম জুয়ার প্রচলন আছে। বর্তমানে জুয়াঘরে ও জুয়াঘর এর বাইরে জুয়া খেলা হয়। ভিডিও জুজু, লোটাখেলা,জান্ডিমুন্ডা,লুডু, ইত্যাদি জুয়াঘরে খেলা যায়। এছাড়া কার্ড,কয়েন টস,পাশা ইত্যাদি খেলা জুয়াঘরের বাইরেও খেলা যায়। বর্তমানে সবচেয়ে বড় জুয়ার আসর হল ক্রীড়া অঙ্গন। ফুটবল, ক্রিকেট, বাসকেট বল ইত্যাদি খেলাতেও জুয়ারীরা বাজি খেলে থাকে।
এছাড়া এক জন আরেক জনের সাথে কোন বিষয়ে সত্য বা মিথ্যা হওয়া নিয়েও বাজি খেলে থাকে। আশ্চর্যের বিষয় হলো মুখোশধারী কিছু লোকেরা
এসব জুয়ারিদের কে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।
যারা কেবল বিনোদনের জন্য জুয়া খেলা শুরু করেছিল তাদের অনেকেই এটাতে আসক্ত হয়ে গেছে। এই আসক্তি তাদের বিভিন্ন কুকর্মের দিকে ঠেলে দেয়। জুয়ার অর্থ জোগাড়ের জন্য তারা খারাপ কাজ করতে শুরু করে। জুয়ায় হারানো অর্থ ফেরত পাবার জন্য জুয়ারীরা বারবার জুয়া খেলে। জুয়া ব্রেইনে মারাত্বক প্রভাব পরে,জোয়াড়ীরা চিন্তাগ্রস্থ ও অসহায়ত্ব অনুভব করে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়।
তরুণরা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন লীগ খেলা ও মোবাইল গেমকে কেন্দ্র করে বেটিং তথা বাজি ধরা চলে। আয়োজকের ভূমিকায় থাকে একটি ওয়েবসাইট। সাইটগুলো নেট দুনিয়ায় ‘বেটিং সাইট’ নামে পরিচিত। দেশে-বিদেশি বিভিন্ন নামে বেটিং সাইট রয়েছে। ওই সাইটগুলোতে প্রথমে অ্যাকাউন্ট খুলে নিবন্ধিত হতে হয়। তারপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কার্ড বা অন্য কোনও মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে জুয়ায় অংশ নিতে হয়। পরে একটি চক্রের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তা ডলারে রূপান্তরিত করে জুয়াড়িদের অ্যাকাউন্টে জমা করে।
অনলাইন জুয়াড়িরা বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে-এরি মধ্যে তাদের একজন ডিলার ও রয়েছে।
সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় উড়তি বয়সী তরুণ-তরুণীরা রাতের আঁধারে বসে আছেন। কয়েক গ্রুপ গ্রুপ করে মোবাইলে গেম খেলছেন।
অথচ তাদের কাছে গিয়ে মোবাইল হাতে নিলে বুঝা যায় যে তারা জুয়ার মাঝে কতটুকু আসক্ত।
বিশেষ করে উঠতি বয়সী তরুণরা অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত হয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন। অনলাইনে অপরাধ সংগঠিত হওয়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন অপরাধীরা।
অনলাইনে জুয়ার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা, সংঘর্ষ এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটছে সারাদেশে।
তবে সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকায় অনলাইনে জুয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এলাকাবাসীরা তাদের ভয়ে কোন ধরনের প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। এবং জুয়া খেলার সম্বন্ধে মিডিয়ার মাধ্যমেও বক্তব্য দিতে,অথবা প্রশাসনকে ইনফরমেশন দিতে নারাজ।
অনলাইনে অংশগ্রহণ করে নগদ টাকা দিয়ে জুয়া খেলা অথবা গেমের ফলাফল হিসেবে বিভিন্ন পুরস্কার বা নগদ টাকা জেতার সুযোগ পাওয়ার জন্য টাকা-পয়সা বা অন্যান্য মূল্যবান আইটেম দিয়ে বা বাজি রেখে ইন্টারনেটে খেলা যায় এমন গেম খেলতে ব্যবহারকারীকে উৎসাহ দেওয়া হয়। অথচ উৎসাহকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এব্যাপারে সিলেটের সচেতন মহল ও সাধারণ মানুষেরা প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাদের মতে বারবার প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা অভিযান করলেও বন্ধ হচ্ছে না এসব জোয়ার আসর