রিপন মিয়া বিশেষ প্রতিনিধি মৌলভীবাজারঃ
মৃত্যুর হলি খেলায় নিমগ্ন কোভিড-১৯ এর অন্ধকার কালো ঘনঘটা মেঘে ছেঁয়ে গেছে গোটা বিশ্ব। সুবাসিত সুন্দর ও সুনির্মল বাতাসে স্বস্তির শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে আজ উৎকন্ঠা বিরাজ করে। বৈশ্বিক ও জাতীয় অবস্থা অধিকতর খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে, মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। দেশের প্রায় ১৮৮ টি দেশে ছড়িয়ে গেছে এ মহামারি। বাংলাদেশও এ থেকে রেহায় পায়নি কিন্তু সম্প্রতি দেশে এটি প্রকট আকার ধারণ করছে। লক্ষ্যণীয় একটি বিষয় হলো, দেশে দিন দিন সংক্রামণের হার বাড়লেও সচেতনার মনোভাব কমে যাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশে করোনায় মোট শনাক্ত ১,২২৬৬০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১৫৮২ জন। সরকার দেশে লকডাউন এবং বিভিন্ন অঞ্চলকে রেডজোন ঘোষণা করেও লোকজনের অবাদ বিরচন নিয়ন্ত্রনে আনতে পারছে না এবং ফলশ্রূত তা কার্যকরও হচ্ছে না শুধুমাত্র মানবজমিনে সরাসরি হস্তক্ষেপের অভাবে। যেহেতু এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসটির নিদিষ্ট কোন ঔষধ বা ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করা যায় নি সেহেতু সচেতনাই এ থেকে মুক্তির মূলমন্ত্র হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের প্রতিটি গ্রামাঞ্চলে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, গ্রাম- গঞ্জের প্রায় ৮০ শতাংশ লোকজন অসচেতন। নিত্যনিয়মিত শহরে যাওয়া-আসা, এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে চলাফেরা, রাস্তাঘাট ও হাট-বাজারে সামাজিক দূরত্ব না মানা এবং টং দোকানের চা-সিগারেটের আড্ডায় তাদের অবাদ বিচরণ কিন্তু তাদের মুখে নেই কোন মাস্ক, মানছেন না প্রয়োজনীয় বিধি-নিষেধ । ফলে আক্রান্তের সংখ্যা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকের করোনার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ – জ্বর, সর্দি, গলা ব্যাথা থাকলেও হোম কোয়ারান্টাইনে তো দূরে থাক তারা স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত, দলগত এবং সরকারি প্রচার-প্রচারণায় গ্রাম-গঞ্জে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, সচেতনার ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার এবং সাবান-পানি দিয়ে বেশি বেশি হাত ধোয়ার তাগিদ দিয়ে আসলেও জনসাধারণের বিন্দু পরিমাণ টনক নড়ছে না। গ্রাম-গঞ্জে জনসাধারণের এমন অবাদ বিচরণ ও অসচেতনা থাকায় শঙ্কা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে । যেহেতু গ্রামাঞ্চলে খুব বেশি করোনা প্রভাব এখনো বিস্তার হয় নি সেহেতু এখনই সঠিক সময় এই বৃহৎ অংশের জনগোষ্ঠী কে সুস্থ ও নিরাপদ রাখার । অন্যথায় দেশের প্রতিটি গ্রামবাংলা মৃত্যুপুরীতে রূপ নিতে দীর্ঘ সময় নিবে না। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝা উচিত। অতএব, আমি সবিনয়ে অনুরোধ মাফিক প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অতি দ্রুত যেন দেশের প্রতিটি গ্রাম-গঞ্জে সরকারি হস্তক্ষেপ এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এছাড়াও পাশাপাশি প্রতিটি এলাকার শিক্ষিত ও সচেতন যুবসমাজ কে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাই।