শিরোনাম
মালদ্বীপে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ‘মুইজ্জু’র অভূতপূর্ব জয় গ্যাস সংকটে বন্ধ হল ফেঞ্চুগঞ্জের সারকারখানা ‘সুবর্ণা’ গণধর্ষণ ও হত্যামামলার রহস্য উদঘাটন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আব্দুল গফফার চৌধুরী খসরু জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি’র মৃত্যু জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ’র বার্তা সম্পাদক-এর শুভেচ্ছা বিনিময় ‘সোনার বাংলা সমাজকল্যাণ সংস্থা’র উপদেষ্টা পরিষদ গঠন কিছু কিছু মিডিয়া আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে; ব্যারিস্টার সুমন তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে পুনাকের বার্ষিক বনভোজন উদযাপন জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড ও মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

প্রকৃতি তথা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি বন ধ্বংসের কারণেই জুনোসিস ভাইরাস

Coder Boss / ৫৮৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০

রাইটার মাছুম,বিশ্বনাথ

প্রকৃতি তথা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি বন ধ্বংসের কারণেই জুনোসিস ভাইরাস কোভিড-১৯ এর পৃথিবীতে আত্মপ্রকাশ ঘটে।আদিকাল থেকে মানবজাতি নানা ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে আসছে। সাইক্লোন, হারিকেন থেকে শুরু করে আজকের দিনের রিটা, ক্যাটরিনা কিংবা সুনামি কোনোটাই বাদ যায়নি। এছাড়াও মাঝে মধ্যে নানা অজানা এবং মারাত্মক সব রোগ জীবাণু মানব জাতিকে বিশেষভাবে ভাবিয়ে তোলে।এইডস, বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু, নিপাহ ভাইরাস, সার্স, সম্প্রতি গোটা দুনিয়ার মানুষকে জীবন মৃত্যুর মধ্যে দাঁড় করিয়ে দেওয়া কোভিড-১৯ মানব জাতির অস্তিত্বে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।

বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু, নিপাহ ভাইরাস, সার্স,কোভিড-১৯ এরা সবগুলোই জুনোসিস ভাইরাস। জুনোসিস ভাইরাস নিয়ে আমি নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করব:

জুনোসিস শব্দটি (ZOO+GREEK Nosos disease) গ্রীক শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ প্রাণীর রোগ বালাই। আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বলা যায় যে সব রোগ কোন মেরুদণ্ডী প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে স্থানান্তরিত হয় তাকে জুনোটিক রোগ বলে এবং এ প্রক্রিয়াকে বলে জুনোসিস।

মানুষ নির্বিচারে বন ধ্বংস করে চলছে। বন ধ্বংস করার ফলে প্রাণীকূল লোকালয়ে এসে পড়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে রোগের জীবাণু মানুষের দেহে আসছে।তবে অনেক ক্ষেত্রে সরাসরিও মানুষের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। Microsoft Encarta (2006). অভিধানে জুনোসিসকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে “Disease that animals pass to human ;a disease can be transmitted from vertebrate animals to humans,e.g. rabies,anthrax or ringworm. অর্থাৎ যেসব রোগ বালাই মেরুদণ্ডী প্রাণী থেকে মানুষের দেহে স্থানান্তরিত হয়। যেমন : অ্যানথ্রাক্স, বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু নিপাহ, সার্স, কোভিড-১৯। সম্প্রতি বেশকিছু জুনোসিস রোগ পৃথিবীব্যাপী মানুষকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে।

এর মধ্যে সার্স, সোয়াইন ফ্লু, বার্ড ফ্লু, নিপাহ ভাইরাস, সর্বশেষ কোভিড-১৯ অন্যতম,কিছু আগে আফ্রিকা মহাদেশে ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বাদুড় ও বানরের মাধ্যমে তাও জুনোসিস ভাইরাস। তবে জুনোটিক রোগের জীবাণু বেশিরভাগই ভাইরাস জাতীয় ফলে প্রত্যেকটি রোগের ক্ষেত্রে ফলাফল অত্যন্ত প্রকট হয়ে থাকে। ভাইরাস সনাক্তকরণে আর্থিক সক্ষমতা এবং আক্রমণকারী ভাইরাসের প্রতিষেধক না থাকার কারণেই পশুপাখি ও মানুষের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়েছে। সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণ মানব জাতির অস্তিত্ব পৃথিবীতে হুমকি মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।

এ কারণ ভাইরাস পোষাক দেহে অতি দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে। বাতাসের মাধ্যমে কিংবা সংস্পর্শে কাছাকাছি বা গাদাগাদি হয়ে বাস করা প্রাণীর মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। দৈনিক খবরের পাতায় প্রায়ই খবর বেরোয় অজ্ঞাত রোগে একই পরিবারের পাঁচজনের প্রাণহানি। এই অজ্ঞাত রোগটি আমাদের দেশে প্রায়ই অজ্ঞাত থাকে। ধারণা করা হয় বন্য প্রাণীর দেহ থেকে কোন অজানা ভাইরাস খাবারের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। যেমনটি হতে পারে গ্রামাঞ্চলে শীতের সকালে খেজুরের কাঁচা রস পানের মাধ্যমে কিংবা বাদুড় কর্তৃক আধা খাওয়া কোন ফল পেয়ারা, কলা সহ বিভিন্ন ফলের অবশিষ্টাংশ ভক্ষণের মাধ্যমে।

শীতকালে আমাদের দেশে খেজুরের রস পানের বিশেষ প্রচলন আছে। মানুষের পাশাপাশি বাদুড় ও রাতের বেলা গাছে ঝুলানো হাঁড়ির মধ্য থেকে রস খেয়ে থাকে। অন্যদিকে এই বাদুড় প্রজাতিরা নিপাহ, ইবোলা ভাইরাস সম্প্রতি কোভিড -১৯ ভাইরাস ও বাদুর ও বন রুই এর দেহে জীন মিউটেশন এর মাধ্যমে চীনের হুয়ান শহর থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়ে মানুষের অসহায়ত্ব সামনে এসেছে। বাদুড় খেজুরের রস খাওয়ার সাথে হাঁড়িতে নিপাহ ভাইরাস মিশে থাকে। সকালে যখন বাড়ির সবাই ধুমধামে ঠান্ডা কাঁচা রস পান করে তখনই দেহে প্রবেশ করে নিপাহ ভাইরাস। সাম্প্রতিকালে জুনোটিক ভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে।

বর্তমানে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ফলে গোটা দুনিয়া বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের সরকারগুলি তাদের গবেষণার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছেন। তার অন্যতম কারণ এসব রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়া। ১৯৯৯ সালে নীল ভাইরাস নিউইয়র্ক সিটিতে ছড়িয়ে পড়ে যেটি ২০০২ সালের মধ্য ভাগ পর্যন্ত দেখা গেছে। বিজ্ঞানী Daszak et al(2001) বলেন নতুন নতুন জুনোটিক রোগের প্রধান কারণ হলো বন্য প্রাণী ও মানুষের মধ্যে কাছাকাছি আসার প্রবণতা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশেও এক সময় প্রাকৃতিকভাবে প্রায় ভূমির ৩৫% বনাঞ্চল ছিল বর্তমানে সেটা ৭% এ এসে দাড়িয়ে আছে। আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ সুন্দরবন যা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি। সুন্দরবন গোটা জাতির অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে বৈশ্বিক উষ্ণতা জনিত কারণে প্রতিবছর তৈরি বড় আকারে প্রবল ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস থেকে ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষা করছে।

অথচ এ বনাঞ্চল আজ কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য হুমকির মুখে। ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ায় নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এটি ঘটে যখন শুকরের ব্যাপক ফার্মিং এর কারণে, শুকররা নিপাহ ভাইরাস বহনকারী ফলভোজী বাদুড় প্রজাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থলে ঢুকে পড়ে এবং পরবর্তীতে বাদুড়ের শরীর থেকে শুকর এবং শুকরের দেহ থেকে মানুষে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। সেসময় ১০৫ জন কৃষক মারা যায়।

চলবে….

দেবব্রত সাহা সহকারী শিক্ষক (কৃষি)
বিএসসি অনার্স (প্রাণিবিদ্যা),এমএসসি (মাৎস্য), বিএড।
বাবেশিকফো সিলেট জেলা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন