শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

দাওয়াতে দ্বীন বা আল্লাহর পথে আহবানকারীদের বৈশিষ্ট্য- গুণাবলী

Coder Boss / ৪৪৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০

এম. এম আতিকুর রহমান ঃ

দাওয়াত এর সাধারণ অর্থ ডাকা বা আহবান করা। জানানো, বুঝানো এবং উপলব্ধি করানো। আর দাওয়াতে দ্বীন বা আল্লাহর পথে আহবান হলো ইসলামের প্রচার প্রসার ও সৌন্দর্য তুলে ধরা। ইসলামের বিধি বিধানের দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করা।

ইসলামই আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা। মানুষের পূর্ণাঙ জীবনের প্রকৃত কল্যাণ শান্তি মুক্তি ও নিরাপত্তা এ জীবন ব্যবস্থার মধ্যেই নিহিত আছে। প্রত্যেক মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনকে সুখ শান্তি, সুন্দর ও সফল করতে ইসলামী জীবনাচারণ প্রয়োজন। আখেরি নবী বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ ‘র অনুসারী উম্মত হিসেবে আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরা। ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মন মস্তিষ্কের সৃষ্ট ভুল ধারণা বা ত্রুটিগুলো সুন্দর ভাবে তুলে ধরে তা অনুধাবন করবার চেষ্টাই দাওয়াতে দ্বীন। যাতে করে মুসলমানরা তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বুঝতে পারে এবং আধুনিক নব্য জাহিলিয়াতের সয়লাব থেকে বাঁচতে পারে। শিরক ও বেদআতমুক্ত সহি আমলের মাধ্যমে সোয়ালেহিনদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি ও বৈশিষ্ট্যঃ
এজন্য ওয়াইজ, বক্তা, খতিব, দায়ী বা আল্লাহর পথে আহবান কারিদের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী থাকা প্রয়োজন।

ব্যক্তিগতভাবে দাওয়াত ও গ্রুপভিত্তিক বা দলবদ্ধভাবে দাওয়াতের কিছু ভিন্নতা থাকে। বাছাইকৃত টার্গেট ভিত্তিক দাওয়াতি কাজে পরস্পরকে জানা, সুসম্পর্ক স্থাপন, নিয়মিত যোগাযোগ, ধৈর্য হেকমত ও বুদ্ধিমত্তার সাথে ধারাবাহিক তৎপরতাসহ কোরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্যের অধ্যয়নের মাধ্যমে উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারলেই সাফল্য আসবে।

এ নিয়ে মহাগ্রন্থের সারমর্ম ও মহানবীর বাণী এখানে অনুসরণের বিকল্প নেই।
হিকমত ও সদুপদেশ দানকারি।
“তোমর রবের পথে আহবান করো-হিকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে” (নাহল ১২৫)
উত্তম পন্থায় বিতর্ক।
“আর বিতর্ক করো অতি উত্তম পন্থায়” (নাহল ১২৫)
নম্রভাষী হওয়া। “তোমরা ফিরাউনের নিকট যাও–তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলবে, হয়তো নসিহত কবুল করবে নয়তো ভয় করবে” (তাহা ৪৩-৪৪)
কোমল হ্রদয়ের অধিকারি।
” আমার অনুগ্রহে তুমি কোমল হ্রদয়ের অধিকারি, পাষাণ হ্রদয়ের হলে লোকজন তোমার চারদিক হতে দূরে চলে যেতো” (ইমরান১৫৯)
ভালো কর্ম দ্বারা মন্দের প্রতিরোধ কারি। “তুমি অন্যায় ও মন্দকে দূর করো অতি উত্তম দ্বারা, দেখবে শত্রুও বন্ধু হয়ে যাবে” (হামিম সেজদা ৩৪)
ক্ষমাশীলতা।
“নম্রতা ও ক্ষমাশীলতার মাধ্যমে ভালো কাজের আদেশ দাও, অজ্ঞ, মূর্খ জাহিলদের এড়িয়ে চলো” (আরাফ১৯৯)
স্বার্থহীন। “বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোন মজুরী প্রার্থী নই, আমার প্রতিদান আল্লাহর নিকট আছে” (শু’আর১০৯)
আল্লাহর আশ্রয় কামনাকরি।
“শয়তান যখন উস্কানি দেয়, আল্লাহর নিকট আশ্রয় ও পানাহ চাও” (আরাফ ২০০)
দাওয়াত অনুযায়ী নিজে আমলঃ
“তোমরা অন্য লোকদের হক বা ন্যায়ের কথা বলো, কিন্তু নিজেদের কে ভুলে যাও”(বাকারা ৪৪)
মধ্যম পন্থা অবলম্ভনঃ
“আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, কঠিন করতে চান না” (বাকারা১৮৫)
ছবর ও ধৈর্যশীলতা।
“তোমরা ছবর করো, ছবরের প্রতিযোগীতা করো” (ইমরান ১৪৫)
সহী নিয়তের অধিকারি।
“ফলাফল নিয়ত অনুযায়ী হয়” (বুখারী)
তাকওয়ার অধিকারি।
“আল্লাহ তায়ালা মুত্তাকিদের বন্ধু” (জাসিয়া ১৯)।

এভাবে কুরআন হাদিসের অসংখ্য বাণীতে দাওয়াতে দ্বীনের পদ্ধতি গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্যেের কথা সমুজ্জলভাবে প্রতীয়মান।
দাওয়াতে দ্বীনের এসকল পদ্ধতি বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী অর্জনে ভিন্নতা ব্যতিক্রম হলেই সংকট সমস্যার মাঝে পড়তে হতে পারে। উগ্রতা ও হটকারিতায় উদ্বিগ্ন হয়ে চেতনা ব্যক্তি-সমাজ ও রাষ্ট্রের অপরিসীম আবেগময় ক্ষতি সাধিত হবে নিঃসন্দেহে।

লেখক ঃ এম. এম আতিকুর রহমান
দাওরায়ে হাদীসঃ জামেয়া মাদানিয়া কাজিরবাজার, সিলেট।
কামিলঃ সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা।
০১৭১৫৭১৮৮৩৩।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন