এম. এম আতিকুর রহমান ঃ
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জু নামে এক হোমিও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্যান্সার রোগীকে ভালো করার নামে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার অপচিকিৎসায় ওই নারী রোগী মৃত্যুমুখে পতিত। আজ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্মাদীপ বিশ্বাসের গঠিত তদন্তদল অভিযোগটি তদন্ত করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার পানিধার এলাকায় নিজ বাড়িতে ঝর্নাময়ী হোমিও হল নামক ফার্মেসিতে চেম্বার খুলে দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার, আলসার, হাড়ভাঙাসহ নানা দুরারোগ্য কঠিন অসুখের চিকিৎসা করছেন সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জু। নামের সাথে হোমিওপ্যাথির নানা ডিগ্রি সংযুক্ত থাকলেও ব্যবস্থাপত্রে তিনি হোমিও ছাড়াও অ্যালোপ্যাথির উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, আয়ুর্বেদিক, কবিরাজিসহ সবধরনের ওষুধ লেখেন। ক্যান্সারসহ কঠিন অসুখ ভালো করার নানা ধরনের প্রচারপত্র বিলি করে তিনি সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে চিকিৎসার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করছেন।
বিভিন্ন মাধ্যমে কথিত চিকিৎসক সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জুর নামডাক শুনে পার্শ্ববর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের মাওলানা রেজাউল করিম রাজু গত ২ ডিসেম্বর গলাব্যথায় আক্রান্ত অসুস্থ মা ছায়ারুন নেছাকে তার নিকট নিয়ে যান। সঞ্জু পরীক্ষা করে জানায়, ক্যান্সার হয়েছে এবং সে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করতে পারবে। কয়েক দফা ওষুধ দিয়ে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার ওষুধে ওই নারীর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি ঘটতে থাকে। গত ২৬ জানুয়ারি রেজাউল করিম রাজু চিকিৎসকের চেম্বারে মায়ের শারীরিক অবস্থা জানাতে গেলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগালা করে চেম্বার থেকে বের করে দেয়।
অভিযোগকারী মাওলানা রেজাউল করিম রাজু জানান, বিভিন্ন জনের মাধ্যমে তার সুনাম শুনে অসুস্থ মাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যান। ক্যান্সার হয়েছে জানিয়ে চিকিৎসার নামে সে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার ওষুধে মায়ের ক্রমশ অবনতি ঘটে। সর্বশেষ জানাতে গেলে মারাত্মক দুর্ব্যবহার করে চেম্বার থেকে বের করে দেয়। তার প্রতারণা ও অপচিকিৎসায় আমার মা এখন মৃত্যুমূখে পতিত। বুঝতে পারছি তার চিকিৎসার সুনাম করা লোকগুলো তারই নিয়োজিত দালাল। অবশেষে তার অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ উর্ধতন কতৃপক্ষ বরাবর আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
উক্ত কথিত চিকিৎসক সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জু জানান, তিনি ক্যান্সার রোগীরও চিকিৎসা করতে পারেন। ওই রোগীর ছেলের সাথে ওষুধ কেনা নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। তবে তিনি কোনো দুর্ব্যবহার করেননি বলে দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস জানান, অভিযোগটি তদন্তের জন্য হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. রামেন্দ্র সিংহকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে উক্ত কমিটি তদন্ত সম্পন্ন করেছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।