সিলেট নিউজ ডেস্ক:
দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে করোনার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ তথ্য জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,’ প্রতিদিন আক্রান্তের হার বেড়ে যাচ্ছে। ১১ দফা দেবার পরেও সাধারণ মানুষেরা কেউ তা মানছে না। এভাবে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকলে হাসপাতালের বেড খালি থাকবে না। স্কুলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আগামী ২ সপ্তাহ স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি বন্ধ থাকবে ‘।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন,’ সামাজিক,রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি লোক অংশ নিতে পারবে না। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্ধেক জনবল নিয়ে চলবে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে’। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছিলাম। সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বজায় রেখেছিলাম। কিন্তু ইদানীং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহ স্কুল,কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক উক্ত ব্রিফিং-এ বলেন ,’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে,সংক্রমণ কমানো। যাতে শিক্ষার্থীরা সংক্রমিত না হয়। আগামী দুই সপ্তাহ পরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।তিনি আরও বলেন,’১১ দফা বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছিল। সেটা এখনও সেভাবে কার্যকর হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে।জেলাপ্রশাসন,পুলিশ বাহিনী ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি,সরকারের বিধিনিষেধগুলো যেন বাস্তবায়ন হয়।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিষয়টি জানিয়ে শুক্রবার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ নির্দেশনাসহ পাঁচটি জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নির্দেশনাগুলো হলোঃ-
(১) ২১ জানুয়ারি (শুক্রবার) আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।
(২) রাষ্ট্রীয়-সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি সমাবেশ করা যাবে না।এসব ক্ষেত্রে যারা যোগ দেবেন তাদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট বা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর সার্টিফিকেট আনতে হবে।
(৩) সরকারি-বেসরকারি অফিস,শিল্পকারখানায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দায়িত্ব বহন করবে।
(৪) বাজার,মসজিদ,বাসস্ট্যান্ড,লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সবধরনের জনসমাবেশে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
(৫) প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়গুলো মনিটর করবে।
এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরুর দিকে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর বেশ কয়েক ধাপে ছুটি বাড়িয়ে প্রায় ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশে ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিপাঠদান শুরু হয়। দীর্ঘ এই সময়ে টেলিভিশনের পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাস চালু রাখা হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ নতুন করে বেড়ে যাওয়ায় আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি আলোচনায় আসে। অবশ্য শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দিয়ে সীমিত পরিসরে শ্রেণিপাঠদান চালু রাখার কথা বলে আসছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।