শিরোনাম
অসহায়-বিপদগ্রস্তদের পাশে ‘হাজীপুর সোসাইটি কুলাউড়া’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করছেন হবিগঞ্জের ‘শাওন’ কুমিল্লায় ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের ছাতক থানার দোলার বাজার জটি গ্রামের তুমুল সংঘর্ষ ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পঞ্চদশ সমাজ কল্যাণ সংস্হার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ১৭ রামাদ্বান ঐতিহাসিক বদর দিবস মহান স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন তাড়াইলে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন ঘাটাইলে গণহত্যা দিবস পালিত বরিশালে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের বসতবাড়ি দখল ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

লুনার মুখে ইলিয়াস আলী গুমের চাঞ্চল্যকর তথ্য

Coder Boss / ২৫৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

রাজা মিয়া রাজ সিলেট :

সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী এখনো নিখোঁজ। কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তিনি আসলে কোথায়? নাকি তিনি গুমের শিকার হয়েছেন। পরিবার অবশ্য বিশ্বাস করে তিনি আবার ফিরে আসবেন। বিশেষ করে তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার তাহসিনা রুশদীর লুনা। ১০ বছর হয়ে গেল ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের রহস্য এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি। আসলে সেদিন কীভাবে, কোথা থেকে ইলিয়াস আলীকে উঠিয়ে নেয়া হয় তা নিয়ে মিডিয়ায় হাজারও খবর ছাপা হয়েছে। কিন্তু তার স্ত্রী লুনা কখনো মুখ খুলেননি। মানবজমিন অনুসন্ধান টিমের সদস্য কাজী সুমন তার মুখোমুখি হয়েছিলেন সম্প্রতি।

তার কাছে দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। এরই ভিত্তিতে আজকের এই প্রতিবেদন।

২০১২ সালের ১৭ই এপ্রিল। রাত তখন ১২টা। বনানী থানা থেকে একটি ফোন আসে জ্যেষ্ঠপুত্র আবরার ইলিয়াসের মোবাইলে। দৌড়ে মা তাহসিনা রুশদীর লুনার রুমে যান আবরার। কাঁচা ঘুমে আচ্ছন্ন মাকে ডেকে তোলেন। বলেন, পুলিশ জানিয়েছে আমাদের গাড়ি নাকি বনানী থানায়। তখনও স্বামী এম ইলিয়াস আলীর বিপদ আঁচ করতে পারেননি লুনা। অনেকটা স্বাভাবিক চিন্তা নিয়ে পুত্রকে বলেন, আমাদের ড্রাইভার আনসারকে ফোন দাও। পুত্র জানান, আনসারকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন লুনা বলেন, তাহলে তোমার বাবাকে ফোন দাও। উদ্বিগ্ন পুত্র জানান, বাবার ফোনও বন্ধ। পুত্রের জবাব পেয়ে দিশাহারা হয়ে যান লুনা। দু’জনের ফোন একসঙ্গে বন্ধ কেন? তখন থেকে নানা দুশ্চিন্তা তার মাথায় আসতে থাকে। লুনা বলেন, সঙ্গে সঙ্গেই বনানী থানার ঐ পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন করি। জিজ্ঞেস করি, গাড়ি থানায় গেল কীভাবে? তখন ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, টহল পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, বনানীর ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে একটি গাড়ি পড়ে আছে। পরে আমরা গাড়ি থানায় নিয়ে আসি। ফের ওই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাই, গাড়িটির মুখ কোনদিকে ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাসার দিকে মুখ করা ছিল। গাড়িতে চালক আনসার আলীর মোবাইলটি পাওয়া যায়।

কিছুক্ষণ পরই স্থানীয় একজন ছাত্রদল নেতা আসেন বাসায়। তিনি জানান, রাত পৌনে ১২টার দিকে গাড়িচালক আনসার আলী তাকে ফোন করে বলেন, তার মোবাইলে ব্যালেন্স নেই। দ্রুত কিছু টাকা পাঠানোর আকুতি জানান। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই লাইনটি কেটে যায়।

রাতেই আমি বিষয়টি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতাদের জানাই। কথা বলি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও। খবর পেয়ে রাতেই বনানীর বাসায় ছুটে আসেন রিজভী আহমেদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা। সম্ভাব্য সব সোর্সে খোঁজ লাগান তারা। ওদিকে রাতেই বনানীর বাসার চারপাশ ঘিরে রাখে র‌্যাব-পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ততক্ষণে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের খবর চলে যায় মিডিয়ায়। সকাল হতেই গণমাধ্যম কর্মীরা ভিড় করেন বাসায়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আসেন বাসায়। ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার আশ্বাস দেন।

স্বামীর খোঁজে আমি র‌্যাব সদর দপ্তর, ডিবি অফিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দপ্তরে যাই। কিন্তু কোথাও তার হদিস মেলেনি। ইলিয়াস আলীকে গ্রেপ্তার বা আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি কোনো সংস্থাই। বাধ্য হয়ে স্বামী নিখোঁজের বিষয়ে বনানী থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। জিডি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা হামলার শিকার হন বিএনপি নেতারা। হামলা হয় আমাদের বনানীর বাসায়ও। এরপর বাসার সামনের সড়কে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। মনিটর করা হয় আমাদের বাসায় যাতায়াতকারীদের।

এদিকে ঘটনার চারদিন পর র‌্যাব সদর দপ্তরের মোশতাক নামে এক কর্মকর্তা যোগাযোগ করেন আমার সঙ্গে। ফোন করে শোনান আশার বাণী। ওই র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, আমাদের কাছে ইনফরমেশন আছে, উনাকে (ইলিয়াস আলী) পাওয়া যেতে পারে, আপনারা প্রিপারেশন রাখেন। এরপর ওই র‌্যাব কর্মকর্তা আরও একদিন ফোন করে একই কথা শোনান।

এর কিছুদিন পর ইলিয়াস আলীকে পাওয়ার আশার বেলুন ফুটো করে দেন ওই র‌্যাব কর্মকর্তা। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমাদের কাছে যে ইনফেরমেশনটা ছিল সেটা এখন আর নেই। এই বিষয়ে আমরা আর কিছু বলতে পারছি না।

কয়েকদিন পর আমাকে জনৈক এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন, ইলিয়াস আলী জীবিত আছেন। আপনি ইচ্ছে করলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। কীভাবে সাক্ষাৎ করা যায় সেটাও তিনি বলে দিলেন।

স্বামীর সন্ধান পেতে পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সুযোগ চেয়ে আবেদন করি। অনুমতিও মেলে। আমার দুই পুত্র ও শিশুকন্যাকে গণভবনে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় আমাকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপেক্ষা করো, ধৈর্য ধরো, বিষয়টি দেখছি। তখন আমার সন্তানদের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কিছুদিন পর গাজীপুরের পূবাইল থেকে আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে। এক নারী ফোন করে জানান, ইলিয়াস আলীকে পাওয়া যেতে পারে, দ্রুত পূবাইলে আসেন। বেশ কয়েকজন দলীয় নেতা ও র‌্যাব কর্মকর্তা মোশতাকসহ দ্রুত যাই পূবাইলে। সেখানে যাওয়ার পর স্থানীয়রা জানান, একজন লোককে মাইক্রোবাসে করে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে ইলিয়াস আলীর সন্ধান আর পাননি।

এরপর আমার কাছে একটি উড়ো খবর আসে- মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়া যেতে পারে। সেখানে র‌্যাব অভিযান চালায়। পরে আমি জানতে পারি, আমাদের বিভ্রান্ত করতেই এমন খবর রটানো হয়।

স্বামীর সন্ধানের জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হই। দায়ের করি রিট আবেদন। যোগাযোগ অব্যাহত রাখি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে। কিন্তু সব জায়গা থেকেই আসে হতাশার খবর।

ঘটনার কয়েক বছর পর আমার পরিচিত একটি ছেলে এসে আমাকে জানায়, সে এসআইয়ের ট্রেনিং করছিল। তখন তাদের যিনি ট্রেইনার ছিলেন তিনি লেকচার দেয়ার সময় ইলিয়াস আলীর বিষয়টি তুলেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের বলেন, ট্র্যাকিং করে আমরা ইলিয়াস আলীর সন্ধান বের করার চেষ্টা করেছিলাম। কোন জায়গা দিয়ে কোথায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে আমরা সেটা জানত পারিনি নানা কারণে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন