সত্যজিৎ দাস(স্টাফ রিপোর্টার):
লতা মঙ্গেশকর ভারতের একজন স্বনামধন্য গায়িকা। তিনি এক হাজারেরও বেশি ভারতীয় ছবিতে গান করেছেন এবং তাঁর গাওয়া মোট গানের সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। এছাড়া ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষাতে ও বিদেশি ভাষায় গান গাওয়ার একমাত্র রেকর্ডটি তাঁরই।
ভারতীয় সঙ্গীত জগত সহ এশিয়া মহাদেশে ঘোর তমসাময় দিন আজ। প্রয়াত হলেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। বহু চেষ্টা করেও ধরে রাখা গেল না বর্ষীয়ান গায়িকাকে। রবিবার (০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ইং) সকালে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। লতা মঙ্গেশকরের বোন উষা মঙ্গেশকর প্রথমে তাঁর মৃত্যুর খবর জানান সংবাদ মাধ্যমকে। গোটা দেশ শোকাহত বর্ষীয়ান গায়িকার প্রয়াণে। টুইটারে শোকবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লিখেছেন, ‘আমি বাকরুদ্ধ। দয়াশীল ও যত্নবান লতা দিদি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তাঁর প্রয়াণে আমাদের দেশে যে শূন্যতা তৈরি হল তা আর কোনোদিন পূর্ণ হবে না। আগামী প্রজন্ম তাঁকে ভারতীয় সংষ্কৃতির একজন দিকপাল হিসাবে চিনবে,যার সুরেলা গলা মানুষকে মুগ্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখত। ’গত ৮ জানুয়ারি করোনার মৃদু উপসর্গ নিয়ে মুম্বইয়ের ব্রিজ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গায়িকা। নিউমোনিয়াও ধরা পড়ে তাঁর। গত সপ্তাহে ভেন্টিলেটর থেকে বের করা হয় প্রবীণ গায়িকাকে। অনেকটাই সুস্থ হয়ে তিনি। তারপরেই আসে দুঃসংবাদ। গতকাল সরস্বতী পুজোর দিনই এসে পৌঁছেছিল খারাপ খবর। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয় সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের। শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হওয়ায় আবারো ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিলো বর্ষীয়ান গায়িকাকে।
করোনামুক্ত হয়েছিলেন,নিউমোনিয়াকেও হার মানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। রোববার(০৬ ফেব্রুয়ারী) সকালেই ৯২ বছর বয়সে মারা গেলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এন সান্থানাম। কোভিড পরবর্তী জটিলতার জেরেই মৃত্যু হলো লতা মঙ্গেশকরের,জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮.১২ মিনিটে মারা যান লতা মঙ্গেশকর। আপতত তার লাশ শিবাজি পার্কে নিয়ে যাওয়ার আয়োজন করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সেখানেই শেষশ্রদ্ধা জানানো হবে লতা মঙ্গেশকরকে।
উল্লেখ্য, লতা মঙ্গেশকর ১৯২৯ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর তৎকালীন ভারতের ইন্দোর রাজ্যের রাজধানী ইন্দোর (বর্তমান মধ্যপ্রদেশ) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকর একজন মারাঠি ও কোঙ্কিণী সঙ্গীতজ্ঞ এবং মঞ্চ অভিনেতা ছিলেন। তার মাতা শেবন্তী (পরবর্তী নাম পরিবর্তন করে সুধামতি রাখেন) বোম্বে প্রেসিডেন্সির তালনারের (বর্তমান উত্তর-পশ্চিম মহারাষ্ট্র) একজন গুজরাতি নারী ছিলেন। তিনি দীনানাথের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। তার প্রথম স্ত্রী নর্মদা শেবন্তীর বড়বোন ছিলেন, যিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
শৈশবে বাড়িতে থাকাকালীন কে এল সায়গল ছাড়া আর কিছু গাইবার অনুমতি ছিল না তার। বাবা চাইতেন ও শুধু ধ্রপদী গান নিয়েই থাকুক। জীবনে প্রথম রেডিও কেনার সামর্থ্য যখন হলো, তখন তার বয়স আঠারো। কিন্তু রেডিওটা কেনার পর নব ঘুরাতেই প্রথম যে খবরটি তাকে শুনতে হয় তা হচ্ছে, কে. এল. সায়গল আর বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গেই রেডিওটা ফেরত দিয়ে দেন তিনি।