হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে গত ১৬ জানুয়ারি ২০২২ইং রোজ রবিবার বাহুবল মডেল থানায় ভিকটিম সুমন মুন্ডা (১৮),পিতা-মৃত পরিমল মুন্ডা হত্যার ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। উক্ত ঘটনার মূল রহস্য দ্রুত সময়ের মধ্যে উদঘাটন ও মামলার যথাযথ তদন্তের লক্ষ্যে অত্র জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব এস এম মুরাদ আলি মহোদয় ০৯ ফেব্রুয়ারী রোজ বুধবার সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি এলাকার লোকজন ও নিহতের আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলেন। তিনি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক দ্রুত সময়ে জড়িতের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য যে, গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ইং ভিকটিম সুমন মুন্ডা নিখোঁজ হলে ১৫ জানুয়ারি ২০২২ইং বাহুবলের সাতকপন ইউনিয়নের মধুপুর চা-বাগানের মধুপুর বনবিটের হাটুভাঙ্গা নামক এলাকার গভীর জঙ্গলের ভিতরে এলাকার লোকজন একটি লাশ দেখতে পায় এবং সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা বানী মুন্ডা (৫০) লাশটি দেখে তার ছেলের বলে নিশ্চিত করেন।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছিল,’ গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ইং ফেইসবুকে ছবি পোস্ট নিয়ে সুমন মুন্ডার সাথে প্রতিবেশী সুনীল মুন্ডার ছেলে বুধু মুন্ডার মাঝে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে বুধু মুন্ডা উত্তেজিত হয়ে সুমনকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করলে পার্শ্ববর্তী লোকজন তাদের থামিয়ে দেয়। পরে দুজন দুই দিকে চলে যায়। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে বনবিটে লাশ পাওয়ার বিষয়ে সুমনের মা বাণী মুন্ডা জানান,’ গত ২৩ ডিসেম্বর আমার ছেলের সাথে বুধু মুন্ডার ঝগড়া হয় বলে আমাকে আমার পাশের বাড়ির মহিলা জানালে আমি বাগান সভাপতিকে জানাই। বাগান সভাপতি আমাকে বলেন অপেক্ষা কর আমি বিষয় টি দেখে দিব। তিনি আর কি দেখবেন ঐ দিন বৃহস্পতিবার থেকে আমার ছেলে বাড়িতে ফিরে নাই। আমি আজ শুনছি পাহাড়ে আমার ছেলের লাশ পাওয়া গেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার ছেলেকে কে বা কারা মেরে পাহাড়ের ভিতরে রেখেছে আইনের কাছে বিচার দাবী করে মৃত সুমনের মা ও ছোট বোন পূজা মুন্ডা কান্নায় ভেঙে পড়েন ‘।
সুমনের পারিবারিক ও তার প্রতিবেশী সূত্রে আরও জানা গিয়েছিলো, ‘কে বা কারা ফেইসবুকে বুধুর বোন মুক্তা মুন্ডার ছবি ট্যাগ করে পোস্ট করে সুমন মুন্ডার প্রোফাইলে। এরই জের ধরে বুধু ও সুমনের মাঝে বাক-বিতন্ডা ঘটে ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর সকালে। এরপর হতে সুমন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনার ২২ দিন পর গত ১৫ ই জানুয়ারি পুটিজুরি বনবিটের বিডিও ফাস্ট টিলা নামক স্থান থেকে অর্ধগলিত ঝুলন্ত অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয় ‘। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম খান জানান,’ সেদিন খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয় এবং বিশেষ অভিযান চালিয়ে সুমন মুন্ডা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেফতারও করা হয় ‘।