সিলেট নিউজ ডেস্ক:ঠাকুরগাঁও জেলা বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। গত বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার মধ্যেও করোনার টিকা দান কার্যক্রম চলছিলো। সদর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক টিকার প্রথম ডোজ নিতে আসলে টিকা কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা লাঠিপেটার শিকার হন অনেক শিক্ষার্থী। অনেকে বিশৃঙ্খলা ও লাঠিপেটা হওয়ার আতঙ্কে টিকা না দিয়েই বাড়ি ফিরে যান বলে জানা গিয়েছে।
সরেজমিনে দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা গিয়ে দেখেন, বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই টিকা নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীরা গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ও বসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন কোভিড-১৯ প্রতিরোধক ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য।সদর হাসপাতালে টিকাদান কেন্দ্রের ধারণক্ষমতার তুলনায় টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় সেখানে হুড়োহুড়ি সৃষ্টি হয় এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড়ে বেশ কয়েকজন অসুস্থও হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে।তখন শিক্ষার্থীরা লাঠিচার্জের আতঙ্কে বিভিন্ন দিকে ছুটোছুটি করতে থাকেন। অনেকে লাঠিপেটা থেকে বাঁচতে ও অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে টিকা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান।টিকা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে বলেন,’ এমনিতেই অতিরিক্ত ভিড়,তার ওপর হাসপাতালের কর্মীরা হঠাৎ করে লাঠি নিয়ে আমাদের পেটাতে শুরু করে। এসময় লাঠিপেটা থেকে বাঁচতে অনেকেই তাড়াহুড়ো করে দৌড়াতে শুরু করে। দৌড়াতে গিয়ে অনেকেই পড়ে আহত হয়েছে,অনেকে টিকা না নিয়েই বাড়ি ফিরে গেছে ‘।
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা শিক্ষকদের অভিযোগ, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে ধাক্কাধাকি করে শিক্ষার্থীদের টিকা নিতে হচ্ছে। যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে করোনা প্রতিরোধ তো হবেই না বরং করোনার সংক্রমণ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে ‘।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা যায় । ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন নূর নেওয়াজ আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান,’ লাঠিপেটার বিষয়টি সত্য নয়। সবাই যেন সুশৃঙ্খলভাবে টিকা গ্রহণ করতে পারে সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল ‘।জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন,’ সকল শিক্ষার্থী যেন সুশৃঙ্খল ভাবে টিকা নিতে পারে সেজন্য টিকা কেন্দ্র বৃদ্ধির বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে এবং উক্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে ‘।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে খবর,’ ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জেলায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। জেলায় ১২-১৭ বছর বয়সী ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৯ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার ৫০২ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ ও ৬২ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।