গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি-
কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাটে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ¯স্রোতের তীব্রতায় অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়ে এবং পানিতে তলিয়ে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষের বসতবাড়িসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে কিছু সংখ্যক কৃষকের জমিতে পাকা ধান অতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে কাটতে পারছেন না, অনেকে ধান কাটলে রোদ না থাকায় ফসল রক্ষা নিয়ে পরছেন বিপাকে।
এর আগে গত ২৬ মার্চ আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে প্রথমে ৫০ হেক্টর এবং পরবর্তীতে ৫০০ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে যায়। আর অসময়ে দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে উপজেলাবাসীর মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাটের ডাউকি, সারি এবং পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার সীমান্তবর্তী রুস্তমপুর, পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, গোয়াইনঘাট সদর ও পূর্ব আলীরগাঁও এবং পশ্চিম আলীরগাঁও, ডৌবাড়ী ইউনয়নের অধিকাংশ এলাকাসহ উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়ে। বানের পনিতে বেশ কয়েকটি রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি এলাকা।
তাছাড়া গোয়াইনঘাটে অবস্থিত জাফলং ও বিছনাকান্দি পর্যটনের জিরো পয়েন্টে পানি এখন উচ্চ মাত্রা রয়েছে। যার ফলে অনেক পর্যটক এসেও জিরো পয়েন্টে নিচে নামতে পারছেন না।
বিশেষ করে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সারী-গোয়াইনঘাট, ফতেহপুর-হাকুরবাজার ও রাধানগর-গোয়াইনঘাট, বঙ্গবীর- গোয়াইনঘাট সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় এসব এলাকা থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে গেছে। বেশকিছু রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমি বন্যা কবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং সবকটি ইউনিয়নের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছি। বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।