….এম শাহাদাত হোসেন
রাগে বাড়িতে চলে আসলাম।সিসি আনি নাই।
চাকরিকে সুটিয়ে লাল করে চলে আসলাম।
বাহ!বাড়িতে খুশির আমেজ।বাড়ির ছোট ছেলে বলে কথা।আমাকে দেখে সবাই বেশ খুশি।কিরে বাপ না বলে যে চলে আসলে?আম্মা বল্লেন।আমি কিছু বলি নাই।
আমি হাসি খুশিই আছি।সিসি নিই নাই,পালিয়ে এসেছি এগুলো আমাকে একদম ঘামাতে পারে নাই।যে ছেলে একদিনও বাড়ির বাহিরে থাকত না সে আজ ছয় মাস এর বেশি হয়ে গেল কিভাবে থাকে?আর মন বসে নাহ!দিনদিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলাম। চলে আসলাম কেইপিযেড অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে।স্যার জানেন না।আমার ফোন বন্ধ করে দিয়েছি।প্রথম দিকে আব্বা আম্মার মুখে হাসি দেখলেও পরে ফ্যাকাসে দেখাচ্ছিল, জানতে পারলাম আমাদের থানা থেকে ফোন করেছিল আব্বার কাছে।
একটি নতুন কুঁড়ি বের হওয়ার পরে পানি বিহীন পিঁপাসায় কাতর অবস্থায়ও চিন্তা করতে হয়,আমাকে টিকে থাকতে হবে। আমাকে বড় হতে হবে। আমার চেয়ে বেশি তৃষর্নাত পথিক কে ছায়া দিয়ে তাদের ক্লান্তি দূর করতে হবে। ক্ষুধার্ত কে ফল দিতে হবে।আচ্ছা আমি হার মানলে কি হবে?
ট্রেনিং সেন্টারে তিন মাস থাকলাম।খুবই কষ্ট করে। নিশ্চিত ছিলাম তিন মাস পরে ছুটি আছে।প্রিয়জনের মুখ দেখতে পারব।কিন্তু এই করোনা কালীন সময়ে ছুটি তো গোল্লায় গেছে। কবে দুনিয়া সুস্থ হবে, কবে প্রিয় জনের মুখ দেখে আত্মা শান্তু করব।প্রিয় জনের মুখ না দেখে,পাশাপাশি বসে কথা না বলতে পেরে কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি।
ঠোঁটের আগায় লেগে থাকা হাসিটা যেন ক্ষীন হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে,বিলুপ্ত হচ্ছে।
এই ভাবনা থেকেই পালিয়ে আসি।
আমার না শুধু সকল পুলিশ সদস্যদেরও এই দুঃখ আছে বটে।
বাড়ির দক্ষিন পাশে গেলাম। নিজ হাতে লাগানো ফুলের বাগানের মনোমুগ্ধকর ফুলের ঘ্রাণ বাড়িময়। বাহ!।কিন্তু আমি কি সেটার সুবাসের অংশে থাকতে পারি?
গাড়ির পিপিপ পিপিপ শব্দে ঘুম ভাঙল।সকালের নাস্তা এসেছে।পুলিশ লাইন্স থেকে এই অস্থায়ী নতুন ক্যাম্পে খাবার পাঠানো হয়।ফজরের নামাজ পরে বালিশে মাথা লাগাতেই কবে যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম মনে নাই।
লিখাঃ১০/০৬/২০
চট্টগ্রাম KEPZ camp