“কলিযুগে ধর্ম হয় নাম সংকীর্ত্তণ;
চারিযুগে চারিধর্মে জীবের কারণ,
অতএব কলিযুগে নামযজ্ঞ সার,
আর কোন ধর্ম কৈলে নাহি হয় পার”
বিশ্বশান্তি ও মানবকল্যাণ কামনায় সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৌড়ী গ্রামের শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গনে অষ্টপ্রহর ব্যাপী মৌড়ীর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ অনুষ্ঠান “শ্রী শ্রী হরিনামযজ্ঞ মহোৎসব” ০৮ ফেব্রুয়ারী রোজ মঙ্গলবার কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য বিধি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অষ্টপ্রহর ব্যাপী হরিনামযজ্ঞ মহোৎসব উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করেছে মৌড়ী গ্রামবাসী ও পারিজাত যুব সংঘ। গত ০৭ ফেব্রুয়ারী সোমবার মঙ্গল ঘট স্থাপন ও পারিজাত গীতা নিকেতনের শতকন্ঠে গীতা পরায়ণ এবং শ্রীল শ্রীমৎ অনন্ত দাস মোহন্ত মহারাজ-এর শ্রীমদভগবদগীতা আলোচনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিলো মহোৎসব।
০৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ব্রাহ্ম মুহূর্ত হতে অষ্টপ্রহর হরিনাম যজ্ঞে বিখ্যাত দল সমূহ শ্রীহরিনাম কীর্ত্তণ করেন। দলগুলো হলোঃ-
(১) শ্রী শ্রী গোপাল সংঘ,চুনারুঘাট,হবিগঞ্জ।
(২) শ্রী শ্রী নিতাইগৌর সম্প্রদায়,মাসকান্দি, মৌলভীবাজার।
(৩) শ্রী শ্রী হরেকৃষ্ণ সম্প্রদায়,হবিগঞ্জ।
(৪) শ্রী শ্রী গৌরবাণী সংঘ,মৌড়ী,বাহুবল,হবিগঞ্জ। তারপর দুপুর ০২ঃ০০ ঘটিকায় অষ্টপ্রহর হরিনামযজ্ঞ মহোৎসবে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভক্তরা আসেন এবং আগত ভক্তদের মাঝে আনন্দবাজারে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
০৯ ফেব্রুয়ারী বুধবার পূণ্য উষালগ্নে কৃষ্ণনাম মহামন্ত্র সংকীর্ত্তণ সহযোগে নগর পরিক্রমা শেষে দধিভাণ্ড ভঞ্জন সহকারে মোহন্ত বিদায় ও মহোৎসবের সমাপন ঘটে। উক্ত দধিভান্ড ভঞ্জন পরিবেশনায় ছিলেন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার জনপ্রিয় শ্রী বিদ্যুৎ মল্লিক। দধিভান্ড ভঞ্জনের পর উপস্থিত গৌর ভক্তবৃন্দের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। মহাপ্রসাদ বিতরণে ছিলেন পারিজাত যুব সংঘের সেচ্ছাসেবীরা।
করোনা মহামারীর সময়ে ১১তম বর্ষে পা দেওয়ায় পারিজাত যুব সংঘ উক্ত অষ্টপ্রহর ব্যাপী হরিনাম যজ্ঞানুষ্ঠান সফল ও স্বার্থক করে তোলার জন্য দায়িত্বে ছিলেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী শশাঙ্ক পাল ও সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রদীপ পাল,সাংস্কৃতিক সম্পাদক শ্রী মোহিত পাল,ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শ্রী প্রদেশ পাল ও সাজসজ্জা সম্পাদক শ্রী নিদুল পাল এবং নিতাই পাল সহ সকল সদস্যরা।
শ্রী শ্রী হরিনামযজ্ঞ মহোৎসব অনুষ্ঠানের সর্বাঙ্গীন সার্থকতার জন্য সকল ভক্তচরণে প্রণতিপূর্বক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পারিজাত যুব সংঘ পরিবারের সকল সদস্য সদস্যাবৃন্দ।
উৎসব পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য শ্রী রামকুমার পাল ডেইলি সিলেট নিউজ 24’কে বলেন,’ প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সর্বপ্রকার বিধি নিষেধ ও কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য বিধি পালন পূর্বক মহোৎসব সুন্দরভাবে সমাপন করতে পেরেছি। বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির দেশ এখানে সব ধর্মের বসবাস। এখানে একে অপরের সাথে ভাতৃত্ব বন্ধনে যুক্ত। একে অপরের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। কোন ধর্মই খারাপ বা মন্দ কাজ কে সমর্থন করে না। আমরা সবাই ভাল কাজ করে যাব অবশ্যই তার ফল ভাল হবে।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ দেশে ধর্ম যারযার হলেও যে কোন উৎসবে আমরা স্বতপূর্ত ভাবে আমরা অংশগ্রহন করি ‘।