পবিত্র দেব নাথ মাধবপুর প্রতিনিধিঃ-
শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা থামাতে পাশের কক্ষ থেকে বেত নিয়ে এসেছিলেন শিক্ষিকা। একপর্যায়ে হাতে থাকা বেতটি ছুড়ে মারলে সেটি আঘাত করে এক ছাত্রর চোখে। আঘাতের কারণে সেই স্কুলছাত্র এখন চোখ হারানোর শঙ্কায় আছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মাধবপুর উপজেলার০২ নং চৌমুহনী ইউনিয়নের উওর বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
আহত স্কুলছাত্রর নাম মেহেদী আলম (০৫)। সে ওই বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম মোছাঃ মুর্শেদা বেগম। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেহেদীকে আজ বোধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
স্কুলছাত্রর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশু শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক না থাকায় আজ সকাল১১টার দিকে সহপাঠীদের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে বাহিরে খেলাধুলা করছিলেন মেহেদী ও তার সহপাঠীরা । এ সময় দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে পড়াচ্ছিলেন মোছাঃ মুর্শেদা বেগম। পাশের কক্ষের শিক্ষার্থীদের হইচই শুনে হাতে বেত নিয়ে তেড়ে আসেন মুর্শেদা বেগম। একপর্যায়ে বেতটি ছুড়ে মারলে তা মেহেদীর ডান চোখে আঘাত হানে। এ সময় তার চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে অন্য শিক্ষক ও আশপাশের লোকেরা মেহেদীকে উদ্ধার করে মাধবপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে বিকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মাধবপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার ইশতিকার মাহমুদ বলেন, চোখে আঘাত করায় কারনে ছেলেটি ডান চোখটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য থাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আহত মেহেদী আলম এর বাবা কালন মিয়ার সংঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বললে , ‘স্থানীয় চিকিৎসকেরা বলেছেন আমার ছেলের চোখের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। ছেলের চোখ বাঁচাতে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি।
মেহেদীর চোখের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোছাঃ মুর্শেদা বেগম বলেন, আমি দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছিলেন । সেই সময় বিদ্যালয়ের মাঠে দেখি বহিরাগত কিছু ছোট ছেলেরা খেলাধুলা করতাছে কিছু সময় পরে হটাৎ চিৎকার শুনতে পাই। চিৎকার শুনার সাথে সাথে আমি সহ বিদ্যালয়ে আরো ৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বাহিরে এসে দেখি কয়েক জন ছেলেদের সাথে একটা ছেলেকে মাঠিতে পড়ে থাকতে দেখি। আমরা ছেলেটার মাঠি থেকে তুলে টিউবয়েলের কাছে নিয়ে মাথায় পানি দেই । তার পর তার পরিবারকে খবর দেই। তারা এসে মেহেদী আলমকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। আমার বিরুদ্ধে বেতের আঘাত মারা যে অভিযোগটি আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সে আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র নয়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যাপারে মেয়েটির অভিভাবকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ এখনো তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মাওলা বলেন, এভাবে বেত দিয়ে আঘাত করা তো দূরের কথা, শ্রেণিকক্ষে বেত নিয়ে যাওয়ারই কোনো বিধান নেই। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।