শিরোনাম
কবরের জীবনটা সহজ হবে না! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী জৈন্তাপুর সারী-৩ এলাকায় টাস্কফোর্সের অভিযানে বালু জব্দ  ছাতকে সমতা স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ  বিশ্বনাথে ইউনিয়ন ক্রিকেট এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার স্বর্ণের চালান জব্দ বড়লেখায় আল কোরআন ফাউন্ডেশনের মহা সম্মেলন কাল শনিবার ড্রিমস ফর ইয়ুথের প্রেসিডেন্ট জাবেদ, জেনারেল সেক্রেটারি জিহাদ করলা গাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা! কৃষকের বিশ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন! সিলেট সীমান্তে ৪০ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ জৈন্তাপুরে শ্রদ্ধা ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত প্রবীণ মুরব্বি আব্দুল হাসিমের
সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১১ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

আখেরি চাহার শোম্বা তাৎপর্য ও শিক্ষা

সিলেট প্রতিনিধি / ১২৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সিলেট নিউজ ডেস্ক :
আজ বুধবার ১৩/০৯/২০২৩ ইং পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা। এ দিনটি মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে থাকে। ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবনে এ দিনটি বিশেষভাবে স্মরণীয়। ফারসি ভাষায় ‘আখের’ অর্থ শেষ, আর ‘চাহার শোম্বা’ অর্থ বুধবার। অর্থাৎ হিজরি সনের সফর মাসের শেষ বুধবারকেই আখেরি চাহার শোম্বা বলা হয়। এ দিনে নবিজি (স.) শেষ বারের মতো রোগ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর শোকর আদায় করেছিলেন বলে প্রতি বছর মুসলমানরা শুকরিয়ার দিবস হিসেবে দিনটি পালন করে থাকেন।

রসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজ, তার সব আচরণ, প্রতিটি পদক্ষেপ তথা সমগ্র জীবনই সর্বোত্তম আদর্শ হিসেবে অনুকরণীয় অনুসরণীয়; যা কুরআনুল করিমে নানা আঙ্গিকে ব্যক্ত হয়েছে। তবে নবুওয়াত জীবনের প্রথম অধ্যায় মক্কি জীবনের ১৩ বছর তাকে নির্মম নির্যাতন ও প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাটাতে হয়েছে। হিজরতের পর মদিনায় গিয়েও তাকে ইহুদি-মোনাফেকদের নতুন ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে। মক্কার কাফেররা মদিনার ইহুদি মোনাফেকদের যোগসাজশে তাকে অশান্তিতে রেখেছিল। নানা কৌশলে তার প্রাণনাশের চেষ্টা পর্যন্ত করেছে। ৭ম হিজরিতে হুদায়বিয়ার সন্ধির পর মুহরম মাসে ইহুদিদের একটি চক্র ‘লবিদ ইবনে আসম’ যিনি জাদুবিদ্যায় খুব পারদর্শী ছিলেন, তাকে দিয়ে তারা মুহাম্মদ (স.)-কে জাদু করান। লবিদ কৌশলে নবিজির এক ইহুদি গোলামের মাধ্যমে তার ব্যবহৃত চিরুনি ও চুল সংগ্রহ করে। তারপর মোমের একটি পুতুল বানিয়ে তাতে ১১টি সুচ বিদ্ধ করে একটি সুতায় কুফরি মন্তর পড়ে ১১টি গিট দেয়। সবকিছু পুতুলটির মধ্যে রেখে একটি কূপে পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রেখে দেয়। এই জাদুর প্রভাবে রসুলুল্লাহ (স.) শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। অতঃপর হজরত জিবরাইল (আ.) সুরা ফালাক ও সুরা নাস নিয়ে অবতীর্ণ হন। এ দুইটি সুরার আয়াতসংখ্যা ১১। মহান আল্লাহ ওহির মাধ্যমে তার প্রিয় হাবিবকে জানিয়ে দেন—ইহুদি লবিদ আপনাকে জাদু করেছে, আপনি অমুক কূপ থেকে জাদুর সরঞ্জাম তুলে তাতে এই সুরা দুইটির একেকটি আয়াত পাঠ করে ফুঁক দিতে থাকুন। নবিজি হযরত আলী (রাদ্বি.)-এর মাধ্যমে জাদুর সব সরঞ্জাম উদ্ধার করে সুরা ফালাক ও নাসের ১১টি আয়াত পর্যায়ক্রমে পাঠ করালে জাদুর কার্যকরিতা নষ্ট হয়ে যায়, এতে তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। এরপর নবী (স.) গোসল করেন এবং বলেন আমার শরীরটা এখন অনেক হালকা মনে হচ্ছে, আমি নিজেকে পূর্ণ সুস্থ মনে করছি। এই দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার।

নবিজির সুস্থতার খবর পেয়ে একে একে স্ত্রীগণ তার কাছে আসেন, মেয়ে ফাতেমাতুজ জোহরা (রাদ্বি.), ইমাম হাসান ও হুসাইন (রাদ্বি.)-কে নিয়ে উপস্থিত হন। বিশিষ্ট সাহাবায়ে কেরাম নবিজির হুজরার কাছে এসে ভিড় জমান। নবিজি আবেগজড়িত কণ্ঠে সবাইকে বলেন, ‘হে আমার প্রিয় সাহাবি ও ভ্রাতৃবৃন্দ! আমার মৃত্যুর পর, আমার বিয়োগে তোমাদের অবস্থা কীরূপ হতে পারে?’ এ কথা শুনে সবাই কাঁদতে আরম্ভ করেন। তিনি সবাইকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, কেউ চিরকাল থাকে না, আমাকেও আমার রবের হুকুম মানতে হবে, তার কাছে যেতে হবে। এরপর তিনি মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে হযরত আবু বকর সিদ্দিককে (রাদ্বি.) ইমামতি করার নির্দেশ করেন। রাসূল (স.)-এর জীবদ্দশায় আবু বকর (রাদ্বি.)-কে দিয়ে ইমামতি করিয়ে তিনি ইঙ্গিত করলেন যে, আমার ইন্তেকালের পর তোমাদের প্রথম খলিফা হবেন, আমার প্রিয় সাথি আবু বকর।

নবিজিকে পূর্ণ সুস্থ দেখে সাহাবায়ে কেরাম খুবই আনন্দিত হন, প্রত্যেকে নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী দান-সাদকা করেন। হজরত আবু বকর (রাদ্বি.) তৎকালীন সময়ে ৫ হাজার দিনার গরিবদের দান করে দেন। হজরত উমার ফারুক (রাদ্বি.) ৭ হাজার দিনার সাদকাহ্ করেন। হজরত ওসমান গনি (রাদ্বি.) করেছিলেন ১০ হাজার দিনার। হযরত আলি (রাদ্বি.) দান করেন ৩ হাজার দিনার। সাহাবী আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাদ্বি.) এই খুশির সংবাদে ১০০ উট আল্লাহর রাস্তায় দান করেন। এ থেকে আমরা শিক্ষা পেতে পারি, নবির প্রতি সাহাবিদের ভালোবাসা কেমন ছিল। এক কথায় বলা যায়, নবি (স.)-এর প্রতি তাদের ভালোবাসা ছিল নিখাদ ও অতুলনীয়। তারা নবিজির জন্য নিজের জীবন উত্সর্গ করতে পর্যন্ত দ্বিধা করেননি।

প্রিয় নবি (স.)-এর প্রিয় উম্মতের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে—জীবনের সবকিছুর চেয়ে যেন আমরা নবিজিকে ভালোবাসি, তার অনুসৃত পথে নিজেদের জীবন সাজাই। যেহেতু নবি (স.)-এর রোগমুক্তির দিনটি ছিল সমগ্র জগতের জন্য খুশির দিন, তাই এ দিনে আল্লাহর কাছে আমাদের ফরিয়াদ থাকবে, তিনি যেন যাবতীয় অকল্যাণ থেকে দূরে রেখে আমাদেরকে সুস্থ সুন্দর জীবন দান করেন। আমিন!

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

বিভাগের খবর দেখুন