শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:০০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

শীতের সকালে শাপলা বিলে ভ্রমনপিপাসুরা

ইসমাইল হুসেন শিমুল / ৪০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৪

ইসমাইল হোসেন শিমুল:

সিলেটের জৈন্তায় কুয়াশাচ্ছন্ন কাক ডাকা ভোরে কনকনে শীতের শিশির ভেজা পরিবেশ উপেক্ষা করে বৃহত্তর জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবির হাওরে পানিতে ভাসমান অজস্র লাল শাপলার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগে হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থীদের মিলন মেলায় মুখরিত লাল শাপলার রাজ্য ডিবির হাওর।

হেমন্তের শুরুতে ও শীত মৌসুমে হাজার হাজার লাল শাপলা ফুল দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন স্কুলকলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত বিভিন্ন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রকৃতি প্রেমী ভ্রমণ পিপাসু  দর্শনার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবের কল্যাণে এখন এই ডিবির হাওর  সম্পর্কে অনেকেরই জানা। শুধু আশেপাশের এলাকা থেকে নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা এই লাল শাপলার ডিবির হাওরে ঘুরতে আসেন। দর্শনার্থীদের নৌকা দিয়ে ঘুরিয়ে বেশ কজন সংসারও চালান এই সময়ে। বিলের স্বচ্ছ জলে হাত ভিজিয়ে সুখানুভূতি নিয়ে কেউবা শাপলা তুলে খোঁপায় বেধে ছবি বা সেলফিতে ব্যস্ত। কেউ গলা ছেড়ে গাইছেন গান।

ডিবির হাওর, ইয়াম, হরফকাটা কেন্দ্রীসহ চারটি বিলগুলোকে কেন্দ্র করেই নামকরণ হয়েছে ডিবির হাওর। চারটি বিলের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে। রাজা রাম সিংহের বিলগুলো শাপলার সিজনে শাপলার রাজ্যে রূপ নেয়। বিলে ফুটে থাকে অজস্র লাল শাপলা। লতা-পাতা-গুল্মে ভরা বিলের পানিতে শত-হাজারো লাল শাপলা হার মানায় ভোরের সূর্যের আলোকে। প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করে সময়ের গতিতে সূর্যে যত উপরে উঠে তেজ বাড়তে থাকে ঠিক তখনই সূর্যের আলোকে সমীহ জানিয়ে অজস্র ফোটা  সাদা ও গেলাপি আভার লাল শাপলার পাপড়িগুলো সৌন্দর্যের দরজা বন্ধ করে দেয়।তখনই হতাশ হয়ে ফিরতে হয় সৌন্দর্য পিপাসু দর্শনার্থীদের। সবুজ পাতার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়া বিস্তীর্ণ জলরাশি। ভোরের আলোয় শাপলার হাসি আরও আলোকিত করে দেয় কুয়াশাচ্ছন্ন সবুজ প্রকৃতিকে। প্রকৃতি তার নিজ হাতে লাল শাপলার হাসিতে সাজিয়ে দেয় বিলগুলোকে। বেড়াতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের মনের দুয়ার খুলে দেয় এই লাল শাপলা বিল। জায়গাটা ঠিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে। তাই পিছনে থাকা মেঘালয়ের পাহাড়গুলো জায়গাটার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। এখানেই ডিবির হাওর নিজেকে আলাদা করছে শাপলার চেয়ে। জৈন্তা রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই হাওরে। 

হাওরের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো জীর্ণ একটি মন্দির।কথিত আছে জৈন্তা রাজ্যের রাজা রাম সিংহকে এ হাওরে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল। সেই স্মৃতিতেই নির্মিত দুইশত বছরের পুরাতন এ মন্দিরটি এখন জীর্ণ-শীর্ণ। আগত প্রকৃতি প্রেমী ও দর্শনার্থীদের সেলফিতে জীর্ণ-শীর্ণ মন্দিরের চারিদিকের পরিবেশকে প্রাণবন্ত ও বিমোহিত করে তুলে।

প্রাচীন রাজার স্মৃতিবিজড়িত এ হাওরে শীতকালে থাকে পাখিদের রাজত্ব। বিশাল হাওর শুকিয়ে যেটুকু জলাশয় তার ওপরই পাখিদের বিচরণ বেশি। বালিহাঁস, পাতিসরালি,পানকৌড়ি, সাদাবক ও জল ময়ুরীর মতো অতিথি পাখির ডানা ঝাপটায় অন্যরূপে সাজে এ হাওর।প্রকৃতির বুকে শিল্পীর তুলিতে আঁকা এ যেন এক নকশিকাঁথা।

আগত প্রকৃতিপ্রেমী দর্শনার্থীরা জানান,প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে এখানে এসে সৌন্দর্য উপভোগ করার আনন্দ মনের মাঝে অন্য রকমের অনুভূতির শিহরন জাগে।যত সকাল আসে যাবে, সৌন্দর্য ততো বেশি  উপভোগ করা যাবে।সবুজ প্রকৃতির মাঝে লাল শাপলা, পিছনের পাহাড় পাখিদের কলরব ও দাঁড়িয়ে থাকা জীর্ণ-শীর্ণ পুরানো মন্দির একসাথে এতগুলো সৌন্দর্য একমাত্র লাল শাপলা খ্যাত ডিবির হাওরে উপভোগ করা যায় বলে তারা জানান। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে এই জায়গাকে আরো ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  

বিভাগের খবর দেখুন