শিরোনাম
এনসিপির নতুন নেতৃত্ব:মৌলভীবাজারে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার: সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতার প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দিল কেন্দ্র মিরপুর প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা: সভাপতি আমিরুজ্জামান, সম্পাদক জহিরুল জাতীয় ছাত্রশক্তির বগুড়া জেলা কমিটির মুখপাত্র ঐশী জামান দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির মামলায অবশেষে জামিন পেলেন মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী চলতি বছরের ২৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পান শমশের মুবিন চৌধুরী হবিগঞ্জের নতুন এসপি:গৌতম কুমার বিশ্বাস দৈনিক রুদ্র বাংলা সম্মাননা পদক ২০২৫: খোলা বাজার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মাহাবুব আলমকে সম্মাননা প্রদান মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটি পুনর্গঠন এখন সময়ের দাবি সুনামগঞ্জে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের ৫৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

পলাতক প্রধান আসামি, মাদক-অস্ত্র ব্যবসায়ও জড়িত থাকার অভিযোগ; তদন্তে বেরিয়ে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য

সিলেট নিউজ ডেস্ক / ৬০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম:

Manual7 Ad Code

চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীকে ‘সাংবাদিক পরিচয়ে’ ভয়ভীতি দেখিয়ে এক কোটি বিশ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলায় মাজেদুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। রবিবার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান এ আদেশ দেন।

মাজেদুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ মোল্লাবাড়ী এলাকার জাফর আহমদের ছেলে। তিনি এই মামলার ২ নম্বর আসামি।

মামলার প্রধান আসামি ইফতেখারুল করিম চৌধুরী এখনও পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

মামলার বাদী খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন।

হাইকোর্টে জামিনের আবেদন খারিজ

আদালতে শুনানিকালে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আবদুল্লাহ আল গালিব জানান, “মাজেদুল ইসলাম হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইলে সেটি নাকচ করে আদালত তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী আত্মসমর্পণ করলে আদালত শুনানি শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠান।”

Manual1 Ad Code

তিনি আরও বলেন, “এই আদেশে স্পষ্ট হয়েছে, সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে যারা চাঁদাবাজি করছে, তাদের আর ছাড় নেই। ব্যবসায়ী সমাজের নিরাপত্তার স্বার্থে এমন নজিরমূলক রায় প্রয়োজন ছিল।”

ঘটনার বিবরণ: ভয় দেখিয়ে এক কোটি বিশ লাখ টাকা দাবি

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সাংবাদিক পরিচয়ে ইফতেখারুল করিম চৌধুরী ও তার ক্যামেরাম্যান মোসলেম উদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেন। তারা প্রথমে মোসলেম উদ্দিনের সুনাম ক্ষুণ্ন করা ও রাজনৈতিক মামলায় জড়ানোর হুমকি দেন। এরপর সরাসরি এক কোটি বিশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

চাঁদা না দিলে ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিনকে ‘গুম’ করে ফেলা ও ব্যবসা ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

এরপর ৩ মার্চ, মাজেদুল ইসলাম আলাদাভাবে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে ‘এশিয়ান টিভির সাংবাদিক’ পরিচয়ে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, “আপনার বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারি, আপনি আমাকে ৫০ লাখ টাকা দিন, তাহলে নিউজ করব না।”

তখন উপস্থিত কর্মচারীরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে যায়, পরে মাজেদুল দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

পিবিআই-এর তদন্তে উঠে এলো ভয়ংকর চক্রের তথ্য

ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট। তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সত্যজিৎ বড়ুয়া গত ১৫ জুলাই আদালতে যে প্রতিবেদন জমা দেন, তাতে চাঁদা দাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং সাংবাদিকতার অপব্যবহারের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী ও সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের টার্গেট করে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের চেষ্টায় লিপ্ত।

প্রধান আসামি ইফতেখার: সাংবাদিকতার আড়ালে অপরাধ সাম্রাজ্য

মামলার প্রধান আসামি ইফতেখারুল করিম চৌধুরী নিজেকে ‘দৈনিক মুক্ত খবর’ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন সময় পরিচয় দিতেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, তিনি মাদক, অস্ত্র চোরাচালান, এবং সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের সাথে জড়িত।

তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় মাদক ও প্রতারণাসহ একাধিক অভিযোগে মামলা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ইফতেখার এবং তার চক্রকে না পুষিয়ে ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

Manual8 Ad Code

মাজেদুল ইসলামের অতীত: প্রতারণা, গাঁজা ব্যবসায়ীকে বিয়ে, ইয়াবা পাচার

Manual8 Ad Code

তদন্তে আরও জানা গেছে, মাজেদুল ইসলাম একসময় নোয়াখালীর আলোচিত সাংবাদিক ও সম্পাদক আজগর আলী মানিকের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় তিনি অফিসের আস্থাভাজন হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন এবং গা-ঢাকা দেন।

পরে তিনি ‘বিবি মরিয়ম’ নামে এক নারী গাঁজা ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। এরপর তারা মিলে ইয়াবা ব্যবসায় যুক্ত হন।

বর্তমানে তাদের ৫ কোটিরও বেশি সম্পদের মালিকানা রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। রয়েছে অপ্রদর্শিত গাড়ি, গার্মেন্টস ব্যবসার নামে টাকা পাচারের অভিযোগও।

ব্যবসায়ীরা বলছেন: “আমরা মুক্তি চাই”

খাতুনগঞ্জ, আছাদগঞ্জ, কাজীর দেউড়ি ও আগ্রাবাদের একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই ধরনের সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজদের ভয়ে তারা মুখ খোলেন না। কেউ মুখ খুললেই তার বিরুদ্ধে “নেগেটিভ নিউজ”, ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানির ভয় দেখানো হয়।

তারা বলেন, “মাজেদুল ও ইফতেখার চক্র শুধু ব্যবসা ধ্বংস করছে না, পুরো সাংবাদিকতা পেশাকেই কলঙ্কিত করছে।”

চট্টগ্রামে এই চাঁদাবাজি মামলাটি কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—এটি সাংবাদিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে একটি গোটা চক্রের অপরাধ জগত পরিচালনার চিত্র তুলে ধরছে। আদালতের এ রায় ব্যবসায়ী সমাজকে কিছুটা স্বস্তি দিলেও, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আতঙ্ক শেষ হবে না।

সচেতন মহলের মতে, প্রকৃত সাংবাদিকতা যেন এইসব ভুয়া পরিচয়ধারীদের দৌরাত্ম্য থেকে রক্ষা পায়, সে লক্ষ্যে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

বিভাগের খবর দেখুন

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code