সিলেট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের কৃতিসন্তান, সাবেক অর্থমন্ত্রী, সিলেট-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
ফেসবুকে সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি মুক্তাদিরকে ‘গণধোলাই’ দেওয়ারও ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে। এই অবস্থায় খন্দকার মুক্তাদির আরেকটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি আগের মন্তব্যের স্বপক্ষে ‘সাফাই গেয়ে’ একটি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন।
দ্বিতীয় স্ট্যাটাসে মুক্তাদির বলেন- ‘‘সদ্য প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সম্পর্কে আমার শোকবানীটি হয়ত কারও কারও মন:পুত হয়নি। একটু মনযোগ দিয়ে পড়লেই দেখবেন শোকবানীটির মধ্যে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান হয়েছে, তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়েছে। অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষণ প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যাক্তিগত নয়। জনাব মুহিত আমার চাচার সহপাঠী ছিলেন,আমরা পারিবারিক পর্যায়ে যখন তাঁর সম্মন্ধে আলোচনা করি বা করতাম তখন মুহিত চাচাই সম্বোধন করি, তাঁর সাথে আমাদের পরিবারের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক, সে কারনে তাঁর কাছে প্রত্যাশাও ছিল বেশি। এটিত কোন অমূলক কথা নয়, যে সরকারের তিনি অংশ ছিলেন সেই সরকারের সম্পর্কে আমার উল্লেখিত কথা গুলি দেশে এবং বিদেশে ব্যাক্তি পর্যায়ে -রাস্ট্রীয় পর্যায়ে বহুবার উচ্চারিত হয়েছে, এমনকি সাম্প্রতিক কালেও উচ্চারিত হয়েছে। আর তাঁর অর্থনৈতিক নীতি আমার শুধু না অনেক দেশ বরেণ্য অর্থনীতিবিদের মনপুত হয়নি, আর যে দূর্নীতিগ্রস্থ প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে সে গুলি কোন ব্যাক্তি দূর্নীতি না, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। পারমানবিক বিদুৎ প্রকল্প সহ অনেক গুলি প্রকল্প সেই সময়ে গৃহীত হয়েছে যেগুলির উপযোগিতা এবং প্রকল্পের মূল্যমান নিয়ে গভীর প্রশ্ন রয়েছে৷ কিন্ত কেউই জনাব মুহিতের ব্যাক্তিগত সততা নিয়ে প্রশ্ন নিয়ে তুলেনি এবং সেটি তোলার অবকাশ আছে বলেও আমার মনে হয়না। তিনি একজন দার্শনিক স্বভাবের হাসি খুশী মানুষ ছিলেন। এটিও সত্য তাঁর অনুসৃত অর্থনৈতিক নীতি প্রশ্নবিদ্ধ হলেও এত বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অধিকারী একজন মুহিত সাহেব খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আল্লাহ তাকে মাগফেরাত দান করুন।’’
এর আগে ‘Khandakar Muktadir’ নামক ফেসবুক পেইজ থেকে (এ রিপোর্ট লেখার সময় থেকে) ৯ ঘণ্টা আগে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের দেওয়া একটি পোস্টে বলা হয়- ‘‘জনাব আবুল মাল আব্দুল মুহিত পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। আল্লাহ তাঁকে বেহেশত নসিব করুন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। জনাব মুহিত ছিলেন কলেজ জীবনে আমার চাচার সহপাঠী। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি ছিলেন ভোটার বিহীন জবর দখলকারী একটি সরকারের অংশ, যে সরকার ইলিয়াস আলী সহ অন্তত চারজন সিলেটি এবং সারাদেশে কয়েকশত গুমের জন্য অভিযুক্ত, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকাকালীন তাঁর অনুসৃত ভুল অর্থনৈতিক নীতি এবং একের পর এক দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্প ও ক্রয় প্রস্তাব পাশের দায় এই জাতির পরিশোধ করতে হবে বহু বছর ধরে। তাঁর স্মৃতির সাথে এই পীড়াদায়ক বাস্তবতা জড়িয়ে থাকবে বহুদিন। তাঁর মাগফেরাতের জন্য দোয়া করি।’’
বিএনপি নেতার এমন নেতিবাচক মন্তব্যকে ‘অনুচিত’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন সবাই। খন্দকার মুক্তাদিরের পোস্টের নিচে কমেন্ট বক্সগুলোতেই তার সমালোচনায় মেতে উঠেছেন মানুষ। সমালোচনাকারীরা এই পোস্ট ডিলেট করে সিলেটবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তাদিরের প্রতি।