যশোর জেলা প্রতিনিধি:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
যথাবিহীত সম্মান পূর্বক বিনীত নিবেদন, আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধীন “সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ)” কর্তৃক ৬১ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমপিও ভুক্ত, নন-এমপিও ভুক্ত এবং সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৫,২০০ (পাঁচ হাজার দুইশত) জন বিষয়ভিত্তিক (ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান) অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি)। আপনার সদয় অবগতি ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে জানাচ্ছি যে, বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ২০০৮ সালে চালু হওয়া সেকায়েপ প্রকল্পে; ২০১৫ সালে উল্লেখযোগ্য একটি কম্পোনেন্ট “অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি)” যুক্ত হয়। এসিটি কর্তৃক নিয়মিত ক্লাসের বাইরে তিন বিষয়ে মোট ৩৭,২০,০৯৪ টি অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হয়। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে ভীতি দূর করে আধুনিক, সৃজনশীল এবং বিজ্ঞানসম্মতভাবে পড়াশোনার মানোন্নয়নের পাশাপাশি পাবলিক পরীক্ষা গুলোতে ভালো ফলাফল অর্জিত হয়; এই উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল বলা যায়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে স্ব-স্ব উপজেলায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ, কোচিং বাণিজ্য হ্রাস, বাল্য বিবাহ রোধ, দেশপ্রেম, শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সৃষ্টি, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ পরবর্তী প্রজন্মকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষিত এবং আইসিটিতে দক্ষ এসিটিগণ “ডিজিটাল বাংলাদেশ” গঠনে বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত “মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ব্যবস্থা”র সফল প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিমূখী করছে। সর্বোপরি, শিক্ষাখাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
সেকায়েপ শিক্ষকদের চাকুরির মেয়াদ তিন বছর হলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং এসিটি অপারেশন ম্যানুয়াল- ২০১৫ এর ৩৬নং ধারানুযায়ী শিক্ষার মানোন্নয়নের অভিজ্ঞতা এবং কোয়ালিটি বিবেচনা করে উল্লেখ আছে এসিটিদের স্থায়ীকরণের কথা। আমরা ইতোমধ্যে সকল জেলা থেকে আপনার সু-দৃষ্টি কামনায় মাননীয় মন্ত্রী, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, মাননীয় এমপি ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে স্থায়ীকরণের জন্য স্বারক লিপি পাঠিয়েছি।
প্রতিনিধিকে জানান, যশোর জেলার পক্ষে রাকিব আহম্মাদ সোহেল ও মোঃ রাসেল হেসোনের তত্বাবধানে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে স্থায়ীকরণের জন্য স্বারক লিপি পাঠিয়েছি।
আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, ইতোমধ্যে বিশ্ব ব্যাংক মত প্রকাশ করেছে, সেকায়েপ প্রকল্পের এসিটি কম্পোনেন্ট দারুণভাবে সফল। সেকায়েপ কর্তৃপক্ষ ডিসেম্বর, ২০১৭ সালে প্রকল্পভুক্ত সকল এসিটিকে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরবর্তী গভঃমেন্ট অর্ডার (এ.ঙ) না আসা পর্যন্ত স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার লিখিত নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন এবং এ ব্যাপারে স্থায়ীকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, বিগত ৩১ মাসেও সেই গভঃমেন্ট অর্ডারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এবং সেকায়েপ প্রকল্প শেষে এসিটিদের স্থায়ীকরণে সুস্পষ্ট কোন লিখিত নির্দেশনা আসেনি। এমতাবস্থায়, আমরা প্রতিনিয়ত আর্থিক, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। উল্লেখ্য, কর্মরত এসিটিদের সিংহভাগ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরধারী।
কর্মরত এসিটিদের এসইডিপিতে অন্তর্ভূক্ত করলে সরকারের সুবিধাসমূহ:
১। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এসিটিদের তুলনায়; কর্মরত প্রশিক্ষত ও অভিজ্ঞ এসিটিরা কাঙ্খিত ফলাফল অর্জনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
২। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য বেকারত্ব শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা। নতুন করে কাউকে চাকুরিচ্যুতকরণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।
৩। গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকারের প্রতি জনগণের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটবে।
মানবতার মা
আমরা দেশের উন্নয়নের একটা ক্ষুদ্র অংশ হতে চাই। আমরা বিনীত প্রার্থনা করছি, অন্যান্য শিক্ষা প্রকল্পের মতো সেকায়েপ প্রকল্পে এসিটিদের মাধ্যমিক পর্যায়ে বিশেষ অবদান ও মানবিক- দিক বিবেচনা করে বিনা শর্তে দ্রুত এসইডিপি প্রোগ্রামে নেয়া হোক। তাই, আমাদের বিনীত প্রার্থনা, আপনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে মানবিক দিক বিবেচনাপূর্বক মাধ্যমিক শিক্ষাকে মানসম্মত ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রায় ৫,২০০ (পাঁচ হাজার দুইশত) জন তরুণ মেধাবী মডেল এসিটিদের এসইডিপিতে অন্তর্ভূক্ত করা হলে উপকৃত হবে দেশ এবং উন্মোচিত হবে গুণগত শিক্ষার এক নতুন দিগন্ত।
আপনি মানবিক দিক বিবেচনা করে আমাদের সহায়তা করলে চিরকৃতজ্ঞ হবো।
বিনীত
সকল জেলায় কর্মরত এসিটিবৃন্দের