সত্যজিৎ দাস,সংবাদ প্রতিনিধি।
একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা,কিংবদন্তী গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর। শুক্রবার(২৩ জুলাই ২০২১) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গণমাধ্যমকে ফকির আলমগীরের মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করেন তার ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে মাশুক জানান,’ রাত দশটার একটু আগে লাইফ সাপোর্টে থাকা ফকির আলমগীরের হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর থেকে মুহূর্তেই তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে রাত ১০টা ৫৬ মিনিটের দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘ ।
গত (১৫ জুলাই ২০২১) থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন ফকির আলমগীর। এরমধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুলাই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন ৭১ বছর বয়সী শিল্পী ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠে বেশ কিছু গান তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ” ও সখিনা ” ” নাম তার ছিলো জন হেনরি ” ” দুই পাহাড়ের মাঝে মওলায় মসজিদ বানাইছে ” আরো কিছু গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৪ জুলাই করোনা পজিটিভ হন ফকির আলমগীর।
ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলনে তাকে বহুবার দেখা গেছে। তিনি ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেব ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শামিল হন এ গণসংগীত শিল্পী।
এরপর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে।
স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন এ শিল্পী।
জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করেন। ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয় পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে তার।
ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত ফকির আলমগীর। ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে। স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন ৭১ বছর বয়সী এ শিল্পী। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়।