শিরোনাম
জৈন্তাপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী’র স্টল পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান  রাষ্ট্র ও সমাজের কল্যাণে ইমামগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন-জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান ছাতকে সেবা ব্লাড ফাউন্ডেশন ইসলামপুর ইউপি’র উদ্যোগে ঈদ সামগ্রী বিতরণ ৮৮,০০০ টাকার জাল নোটসহ চুনারুঘাটের ‘জামাল মিয়া’ গ্রেফতার বছর ঘুরে আইলো আবার ‘বৈশাখ’ জৈন্তাপুর প্রবাসী গ্রুপ কাতার শাখার ঈদ আনন্দ ভ্রমণ বিশারকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি গঠন আবুল কালাম আহবায়ক, ফিরোজ সদস্য সচিব ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে জুবায়ের আহমদ মনি তালুকদার ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী জুবের লস্কর
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

বাংলা সঙ্গীত জগতে নক্ষত্র পতন;বাপ্পি দা’র পরলোকগমন।

Satyajit Das / ৬১১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

সিলেট নিউজ ডেস্ক:হিন্দী চলচ্চিত্র শিল্প-সহ বাংলা গানের গীতিকার, সুরকার,সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব অলোকেশ বাপ্পি লাহিড়ি। সঙ্গীত জগতে তিনি বাপ্পি-দা নামেও সমধিক পরিচিত।

বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার(১৫ ফেব্রুয়ারী) সকালে ৬৯ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। গত বছর তিনি কোভিড আক্রান্ত হন। যদিও সেই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। আগামীদিনে বেশ কিছু প্রজেক্ট হাতে থাকলেও শেষ করা হলনা কোনওটাই। হাসপাতালের ডিরেক্টর ডাঃ দীপক নামজোশি জানিয়েছেন,”বাপ্পি লাহিড়ি গত এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সোমবার তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার(১৫ ফেব্রুয়ারী) তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তাঁর পরিবারের তরফে ডাক্তারকে তাদের বাড়িতে দেখার জন্য ডাকা হয়। এরপরেই তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। একাধিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা ছিল তাঁর। মধ্যরাতের কিছু আগে ওএসএ (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া) এর কারণে তিনি মারা যান।” 

বাপ্পি লাহিড়ির মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পরেন সঙ্গীত শিল্পী ঊষা উত্থুপ। তিনি জানিয়েছেন যে তার জীবনের অন্যতম জনপ্রিয় গানগুলি বাপ্পি লাহিড়ির সুরে। কোভিডের আগেই শেষবার কথা হয় তার সঙ্গে। ঊষা উত্থুপ জানিয়েছেন যে ভারতীয় সঙ্গিতের জগতে ডিস্কো কিং ছিলেন তিনি। তার প্রয়ানের কথা মেনে নিতেই খুব কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

ডিস্কোর পাশাপাশি বিভিন্ন অসাধারণ গানে সুর দিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি। এর মধ্যে রয়েছে “শারাবি”, “চালতে চালতে মেরে ইয়ে গীত ইয়াদ রাখনা, কাভি আলবিদা না কেহনা”। এছাড়াও বাংলা সিনেমা জগতের বিভিন্ন গান যেগুলি প্রায় কাল্টের তকমা পেয়েছে যেমন “অমর সঙ্গি”, “চিরদিনই তুমি যে আমার”, “গুরুদক্ষিনা” এই সব গানের সুরেও ছিল বাপ্পি লাহিড়ির ছোঁয়া। ১৯৭০ দশকের শেষ থেকে ১৯৮০ দশকের পুরোটা এবং তার পরেও বলিউড এবং টলিউড দুই জায়গাতেই সমানতালে চলেছে বাপ্পি লাহিড়ির যুগ।তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করে টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি লিখেছেন, “কিংবদন্তি গায়ক এবং সুরকার বাপ্পী লাহিড়ী জি-র মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরে আমি বেদনাহত। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। বাপ্পি দা তার বহুমুখী গান এবং প্রাণবন্ত প্রকৃতির জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর পরিবার ও ভক্তদের প্রতি আমার সমবেদনা। ওম শান্তি।”

সুরকার জিৎ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, “সঙ্গীত জগতে পর পর নক্ষত্র পতন। কালকে সন্ধ্যা দি আজ বাপ্পি দা। বলার মতন কোনও ভাষা নেই। পরিবারের সদস্যকে হারালে যেরকম অনুভুতি হয় সেরকমই মনে হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন যে বাপ্পি লাহিড়ির গানের ভাষায় বলতে গেলে তাঁকে কখনও ‘আলবিদা’ বলতে পারবেন না তিনি।

বাপ্পি লাহিড়ির পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সমৃদ্ধ এক পরিবারে জন্মগ্রহণ। তাঁর ডাক নাম আলোকেশ বাপ্পি লাহিড়ি। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ছিলেন একজন বাংলা সঙ্গীতের জনপ্রিয় গায়ক। মা বাঁশরী লাহিড়িও ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও গায়িকা যিনি শাস্ত্রীয় ঘরাণার সঙ্গীত এবং শ্যামা সঙ্গীতে বিশেষ পারঙ্গমতা দেখিয়েছিলেন। তাদের পরিবারেরই একমাত্র সন্তান বাপ্পী লাহিড়ি। তিন বছর বয়সেই তবলা বাজাতে শুরু করেন। তার মায়ের আত্মীয় হিসেবে ছিলেন – বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমার এবং এস. মুখার্জী। পিতা-মাতার সান্নিধ্যে থেকেই তিনি সঙ্গীতকলায় হাতে খড়ি ও প্রশিক্ষণ নেন। এরপর তিনি ১৯ বছর বয়সে দাদু (১৯৭২) নামক বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন। বাপ্পী ল্যাহড়ী বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। সংসারে তাঁর স্ত্রী – চিত্রাণী,কন্যা – রিমা এবং পুত্র – বাপ্পা রয়েছে। তিনি অলঙ্কারের ভক্ত হিসেবে পরিচিতি। সাধারণতঃ তাকে পোশাকের সাথে স্বর্ণের অলঙ্কার এবং কালো চশমা পরিধান করতে দেখা যায়। সংগীত শিল্পী কিশোর কুমার সম্পর্কে তাঁর মামা।

বাপ্পি লাহিড়ি ১৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ে স্থানান্তরিত হন। ১৯৭৩ সালে হিন্দী ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারী ছবিতে তিনি প্রথম গীত রচনা করেন। এরপর তাহির হুসেনের জখমী (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এতে তিনি গীত রচনাসহ গায়কের দ্বৈত ভূমিকায় অংশ নেন। অসম্ভব কিছু নয় শিরোনামে মোহাম্মদ রফি এবং কিশোর কুমারের সঙ্গেও দ্বৈত সঙ্গীতে অংশ নেন। তার পরের চলচ্চিত্র হিসেবে ‘ চালতে চালতে’ ছবিটির গানও দর্শক-শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। রবিকান্ত নাগাইচের সুরক্ষা ছবিতে গান গেয়ে সঙ্গীতকার হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। বাপ্পি দা ভারতীয় চলচ্চিত্রে ও ভারতীয় ধাঁচে ডিস্কো সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। তার রচিত গানগুলো কিশোর কুমার এবং আশা ভোঁসলে’র নৈপথ্য কণ্ঠ সঙ্গীতের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের পর্দায় এসেছে। বিজয় বেনেডিক্ট এবং শ্যারন প্রভাকরকেও তিনি সঙ্গীত শিল্পে অভিষেক ঘটান।এছাড়াও তিনি আলিশা চিনয় এবং ঊষা উত্থাপের সাথেও কাজ করেন। বাপ্পি রচিত সঙ্গীতগুলো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম, এক বার কহো (১৯৮০); সুরক্ষা; ওয়ারদাত; আরমান; চলতে চলতে; কমাণ্ডো; ইলজাম; পিয়ারা দুশমন; ডিস্কো ড্যান্সার; ড্যান্স ড্যান্স; ফিল্ম হি ফিল্ম; সাহেব; টারজান; কসম পয়দা করনে ওয়ালে কি; ওয়ান্টেড: ডেড অর এলাইভ; গুরু; জ্যোতি; নমক হালাল; শরাবী (১৯৮৫: ফিল্মফেয়ার সেরা সঙ্গীত পরিচালকের পুরস্কার); এইতবার; জিন্দাগী এক জুয়া; হিম্মতওয়ালা; জাস্টিস চৌধুরী; নিপ্পু রাব্বা; রোদী ইন্সপেক্টর; সিমহাসনম; গ্যাং লিডার; রৌদী অল্লাদু; ব্রহ্মা; হাম তুমহারে হ্যায় সনম এবং জখমী।
এছাড়াও তিনি মালায়ালম চলচ্চিত্র (কেরালা) দ্য গুড বয়েজ ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।এছাড়াও, বাপ্পী লাহিড়ী নিজের লিখিত বেশ কিছু গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে অন্যতম,রাহি হু মে (ওয়ান্টেড: ডেড অর এলাইভ); বোম্বাই সে আয়া মেরা দোস্ত (আপ কি খাতির); মৌসম হ্যায় গানে কা (সুরক্ষা); তুম জো ভি হো (সুরক্ষা); তু মুঝে জান সে ভি পিয়ার হ্যায় (ওয়াদাত); ইয়াদ আ রাহা হ্যায় (ডিস্কো ড্যান্সার); সুপার ড্যান্সার (ড্যান্স ড্যান্স); দেখা হ্যায় ম্যায়নে তুমহে ফির সে পলাতকে (ওয়ারদাত); দিল মে হে তুম (সত্যমেব জয়তে); জে লা লা (টারজান); বাম্বাই নাগারিয়া (ট্যাক্সি নং ৯২১১)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন