ইউরোপ বা রাশিয়াতে পেট্রল বোমা বা বোতল বোমার একটা আলাদা নাম রয়েছে। সেখানে এটি মোলোটোভ ককটেল নামে পরিচিত। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ভায়াচিসলাভ মোলোটোভ-এর নাম থেকে এই বোমার উৎপত্তি। জানা গিয়েছে, ১৯২০ বা ১৯৩০-এ প্রথম মোলোটোভ ককটেল ব্যবহার করা হয়।
১৯৩৯-র সেপ্টেম্বরে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ওই বছরের শেষের দিকে ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। ব্যাপক গোলাবর্ষণ করা হয়। তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ভায়াচিসলাভ মলোটোভ জানান, ফিনল্যান্ডে বোমাবর্ষণ করছে না তাঁদের দেশ। বরং মানবিক সাহায্য করা হচ্ছে। সোভিয়েত মন্ত্রীর সেই কথাকে কটাক্ষ করেই ফিনল্যান্ডবাসী ওই বোমার নাম দেন “Molotov picnic baskets” এবং তাঁরা প্রতিজ্ঞা করেন সোভিয়েত সেনাকেও ওই মানবিক সাহায্য দিয়েই স্বাগত জানাবেন তাঁরা। এরপর যখন ফিনল্যান্ডে পৌঁছায় সোভিয়েত ট্যাঙ্ক তখন হাজার হাজার পেট্রল বোমা বা মোলোটোভ ককটেল ব্যবহার করেন ফিনল্য়ান্ডবাসী। মোলোটোভ ককটেল-এর প্রতিরোধের মুখে পড়ে সোভিয়েত ট্যাঙ্ক। যদিও লড়াইয়ে পরাজিত হয় ফিনল্যান্ড । কিন্তু থেকে যায় তাঁদের আবিষ্কৃত মোলোটোভ ককটেল। রুশ সেনার বিরুদ্ধে এবারও এই বোমা ব্যবহার করছেন ইউক্রেনিয়রা।
বহু প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পেট্রল বোমা বা বোতল বোমা ব্যবহার হয়ে থাকে। কাঁচের বোতলে গ্যাস, পেট্রল, তার অয়েল ভরে, তার উপরে আগুন ধরিয়ে ছুড়ে দেওয়া হয়। মূলত পুলিশ কিংবা সেনার দিকে সেই বোমা ছুড়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রেও এই ধরনের পেট্রল বা বোতল বোমা ব্যবহার করছেন সাধারণ মানুষ। রুশ সেনার বিরুদ্ধে এভাবেই প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, ১৯২০ বা ১৯৩০-এ প্রথম মোলোটোভ ককটেল ব্যবহার করা হয়। স্প্যানিশ সিভিল ওয়ারের সময় এটি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক বোমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও এই অস্ত্রের বহুব ব্যবহার হয়েছে।
প্রতিবেদনঃ এস.ডি।