আল-মামুন খান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে সোনালী আঁশ পাট চাষে সুদিন ফিরেছে কৃষকের। শস্য ভান্ডার খ্যাত তাড়াইল উপজেলায় এ বছরের পাট মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পাটের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। এ বছর উপজেলায় হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে তাড়াইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিচ্ছে কৃষক। কৃষকরা পাট কেটে নদী-নালা, খাল-বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং বাজারে বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে, নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে।
জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলায় হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।গত বছরের চেয়ে এ বছর হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর পাট চাষে ঝুঁকেছে কৃষক। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক পাট চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছিলেন। অনেক কৃষকই বলছেন পাট চাষিদের সুদিন ফিরেছে।
উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মণ। যার বাজারদর প্রায় ২২-২৪ হাজার টাকা। এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাট ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ক্রমশই পাটের দাম বাড়তে থাকে। গতবছর সর্বশেষ প্রায় ৪ হাজার টাকা মণ পাট বিক্রি হয়েছে। ফলে যারা পাট ভরা মৌসুমে বিক্রি না করে রেখে দিয়েছিলেন তারা বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ১০-২০ হাজার টাকা লাভবান হয়েছেন। এ বছর ভালো দামে পাট বিক্রি করতে পারবে এমনটাই আশা করছেন পাট চাষিরা।
তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, এ মৌসুমে উপজেলায় দেশি ১৩০ হেক্টর, তোষা হাজার ৩৩ হেক্টর, কেনাফ ৪১০ এবং মেস্তা ১৭৫ হেক্টর উপজেলায় মোট ৭৪৮ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে । তিনি আরো বলেন, গত বছর পাট আবাদকৃত জমি পরিমান ছিল ৭১০ যা এবছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭৪৮ হেক্টরে পৌছেছে। উপজেলার ১নং তালজাঙ্গা, ৫নং দামিহা ও ৬নং দিগদাইড় ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ করা হয়েছে। পাট চাষিদের সুদিন ফিরেছে।পাট চাষ করে কৃষক এখন অনেক লাভবান হচ্ছেন। আগামীতে পাট চাষিদের নিয়ে আরো ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে।