শিরোনাম
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

উত্তর সিলেটের বেকারত্বের ছায়া, নিম্ন আয়ের পরিবারের বুকচাপা কান্না

ইসমাইল হোসেন শিমুল / ২৩০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ

 

সিলেটের প্রান্তিক জনপদ গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার খনিজ সম্পদে অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পাথর রয়েছে ভরপুর। যা থেকে সরকারে সিংহভাগ রাজস্ব পেয়ে থাকেন। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিছনাকান্দি, জাফলং, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারী বন্ধ থাকায় পাথর সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমজীবী মানুষের জীবিকা নির্বাহকারী ও শ্রমিক ব্যবসায়ী রোজগার থেকে বঞ্চিত হয়ে পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর অভাব যেন ছাড়ছেই না।উত্তর সিলেটের বেকারত্বের ছায়া, নিম্ন আয়ের পরিবারের বুকচাপা কান্না

গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ কোন শিল্প কার খানা না থাকায় বেশি ভাগ মানুষের বিকল্প রোজি- রোজগার নেই  বিকল্প কর্ম ক্ষেত্র। অত্র এলাকার বেশির ভাগ জনাসাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ, শতকার বেশি ভাগ মানুষের তাদের একমাত্র রোজি রোজিগা করে থাকেন পাথরের কোয়ারি  থেকে । বর্তমানে এ পরিচয়টুকু এখন হারিয়ে যাচ্ছে বিছনাকান্দি ,জাফলং,ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারী পাথরের ভান্ডার থেকে পাথর আহরন করে নৌকা এবং ট্রলি দিয়ে তা পরিবহন করে যে মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল, আজ তারা কর্ম ক্ষেত্র হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা ।

স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের আবকাটামোগত উন্নয়নের নিমার্ন কাজে সিলেটের পাথর ব্যাবহার হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন যাবত , সিলেটের জাফলং,বিছনাকান্দি,ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারীগুলোই যোগান দিয়ে আসছিলো ।

গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম পাথর কোয়ারীতে পাথর আহরন করে এ অঞ্চলের মানুষগুলো পরিজন নিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দেই জীবিকা নির্বাহ করতো। শ্রমিক কর্তৃক আহরিত এ পাথর বিপনন এবং প্রক্রিয়া করণে এ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় হাজারো স্টোন ক্রাশার। এসব স্টোন ক্রাশারে আরও লক্ষাধিক শ্রমজীবি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়ে থাকে।

পাথর পরিবহনের জন্য আত্র এলাকার ট্রাক পরিবহন শ্রমিকরাও পরেছেন বিপাকে । পাথর পরিবহনের সাথে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়ে অত্র এলাকায় তারও আজ বেকার। এক সময়ের অবহেলিত অঞ্চল ক্রমশঃ সমৃদ্ধ জনপদে রুপান্তরিত হয়। স্থানীয়ভাবে পাহরিত পাথরের গুনগত মান ভালো হওয়ায় প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হয়। পাথরের আর্শীবাদে সিলেটের এ প্রান্তিক জনপদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিপুলাংশে বৃদ্ধি পায়।

বৃহৎ কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকায় একমাত্র পাথরকে কেন্দ্র করেই সৃষ্ট জীবিকা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্র সিলেটের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। কাজ নেই, রোজগার নেই এ অবস্থায় বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত গোয়াইঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীক লাখো সহস্রাধিক মানুষের জীবন আজ চরম দুর্বিষহ।

বিকল্প কোন রোজগার না থাকায় ও উপুর্যুপরি বন্যা এবং অতিবৃষ্টির কারণে ফসল বিনষ্ট হওয়ায় গোয়াইনঘাটও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় শোনা যাচ্ছে দুর্ভিক্ষের পদ ধ্বনি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের বেশকয়েক জন পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ী সাথে কথা বলে, পাথর শ্রমিক ও ব্যাবসায়ীরা জানায় একদিকে করোনার অন্যদিকে কোয়ারি বন্ধ কাজ নেই পাথর শ্রমিক জুুুুবেল বলেন “এমনই আছি আমরা কোন রকম পরিবার ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোন মতন দিন পার করছি” বিসনা কান্দি পাথর শ্রমিক নেহের বেগম বলেন আমার স্বামী নেই আমি কোয়রিতে চা বিক্রয় করতাম কোয়ারি যদি না হয় তাহলে ছেলে মেয়েকে কি খাওয়াব।

বিছনাকান্দি পাথর ব্যবসায়ীদের কয়েকজনে সাথে কথা হলে তারা বলেন দেশে করোনা মহামারি ও পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় ব্যবসাও বন্ধ সবমিলিয়ে ভাল নেই আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে বড় কষ্টে আছি। হাদার পারের বাজার ব্যবসায়ী মানিক আহমদ বলেন পাথরে কাজ বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসাও ভাল হচ্ছে না দোকান কোঠার ভাড়া টিক মতে দিতে পারছিনা। তাছাড়া কোয়ারি ভিত্তিক এলাকাগুলো ঘুুুরে দেখা যায় আশ পাশের কলনি গুলোতে কেউ শুয়ে দিন পার করছেন।

তাদের সাথে কথা বলে জানাযায় কাজ কর্ম না থাকায় ঘর ভাড়া পর্যন্ত দিতে পরছি না বসে ধারদেনা করে চলছি। নাম প্রকাশে অনিছুক কয়েক জন পাথর শ্রমিক  বলেন গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ এলাকায় সীমন্তবর্তী হওয়া কারণে কর্মহীন পাথর শ্রমিকরা অনেকে জীবিকার জন্য চোরা কারবারিরা তাদেরকে ব্যবহার করছেন মালামাল আনা নেওয়ার জন্য।

এতে করে অন্ধকার পথে জরিয়ে যাচ্ছে অনেকেই গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় আইন-শৃংঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। স্হানীয় হাদারপার ও বিছনাকান্দি এলাকার কিছু পাথর ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন একদিকে মহামারী করোনা দখল শেষে ভয়াল  বন্যায় জর্জরিত সেই সাথে কোয়ারী বন্ধ থাকায় আমরা যারা পাথর এর সাথে সংশ্লিষ্ট আছি তারা অনেকেই আজ বেকার হয়ে পড়েছি অনেকে আর্থিক ঋণগ্রস্ত কিছু পরিবেশবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ শুনা যায়, তারা বলেন পরিবেশের দোহায় দিয়ে আমাদের পেটে লাথি মারছে এসব সংগঠন  ও তাছাড়া গোয়াইনঘাট কোম্পানীগঞ্জে পাথর শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ায় ও বারবার বন্যার কারণে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ দিশেহারা পয়ে পরছে আত্র এলাকার জনসাধারণ।

তাদের সাথে এক আত্মা পোষণ করেন কোম্পানিগঞ্জ ও জাফলং পাথর ব্যবসায়ী বৃন্দ।  যারা ট্রাক মালিক আছেন তারা অনেকেই ট্রাকের কিস্তি দিতে পারছেন না অনেক ঋন- গ্রস্ত হয়ে পরছেন। সিলেট জেলার ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, গুলো কাজ না থাকায় অচল প্রায় ।

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের   মন্ত্রী প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, সিলেট ৪ নং আসনের বার বার নির্বাচিত এমপি ইমরান আহমদের দিকে আশার আলোর পথ দেখছে এলাকার জনসাধারণ গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ এ অঞ্চলের মানুষের দাবী-পরিবেশের নির্মলতা বজায় রেখে সনাতন পদ্ধতিতে নিরাপদে পাথর আহরনের সুযোগ দিয়ে রক্ষা করা হোক লাখো সহস্রাধিক পাথর শ্রমিকের জীবন। তাইতো সরকারি অনুমতির আশায় এখনো আশার আলো নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন উত্তর সিলেটের জনসাধারণ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  

বিভাগের খবর দেখুন