আল-মামুন খান, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে চাল,ডাল,কাঁচামরিচ ও ভোজ্য-তেলের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা নিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ক্ষুব্ধ। আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাত এবং অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এখন লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বাজার। সারাদেশের মতো একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের প্রতিটি বাজারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অতি কষ্টে আছে এ উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল কেজি প্রতি ৬০ টাকা, প্যাকেটজাত আটা ৬৫ টাকা, মুসুরির ডাল ১০০ টাকা, ছোলার ডাল ৬৮ টাকা, মুগের ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতল জাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫-২০০ টাকা লিটার এবং খোলা তেল ১৮০-১৯০ টাকা। ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৫০ টাকা।
এদিকে কাঁচা মরিচ ১৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ টাকা, রসুন ৯০ টাকা, আদা ৯০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, হলুদ ১৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিচ ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৫০ টাকা। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ২১০ টাকা, কক ৩৫০ টাকা, লেয়ার কক ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম উর্ধ্বমুখি। এভাবে সকল পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে আমরা যারা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক তাদের বাজার করে খেয়ে বেঁচে থাকার মতো অবস্থা থাকবেনা। তারা আরো বলেন, গরু ও খাশির মাংসের কাছে তো অনেক আগে থেকেই ঘেষা যাচ্ছে না। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের খাবার তালিকায় থাকে ব্রয়লার মুরগী তারও দাম বেড়ে গেছে। সেজন্য মুরগীর মাংসও কিনতে পারছি না। দিনদিন সবকিছু আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
বাজার করতে আসা দুলাল মিয়াসহ আরো কয়েকজন বলেন, আমাদের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নেই। আয় বাড়েনি অথচ সবকিছু ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মাছ, মাংস, ডিম থেকে শুরু করে সবজির বাজারেও আগুন। দ্রব্যমূল্যের এতো দাম যে, যা কিনতে বাজারে আসছি তার কিছু না কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
এদিকে তাড়াইল সদর বাজারের সবজি ও
মনোহারী ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, চিনির দাম বেড়ে আবার কমেছে। চালের দাম কেজি প্রতি ২-৩ টাকা বেড়েছ। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম একটু বেশি। মৌসুম শেষের সময় সবকিছুর দাম বেশি হয়। দাম বেশি হলেও মানুষের কিনতে হচ্ছে। এতে কৃষক লাভবান হলেও আমাদের বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে। মানুষ আগের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কম কিনছে। তিনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিনি ৫-১০ টাকা করে পাইকাররা দাম বাড়াচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়ায় পাইকাররা দাম বেশি নিচ্ছে। বেশি দামে মাল কিনতে হচ্ছে। ফলে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা শারমিন বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। রমজানকে সামনে রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হবে।