আল-মামুন খান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে সোনালী আঁশ পাট চাষে সুদিন ফিরেছে কৃষকের। শস্য ভান্ডার খ্যাত তাড়াইল উপজেলায় এ বছরের পাট মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় ৭৯৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গতবছর ৭৪৮ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। এমৌসুমে উপজেলায় দেশি ১২৫ হেক্টর,তোষা ৬৩ হেক্টর,কেনাফ ৪৩২ হেক্টর এবং মেস্তা ১৭৫ হেক্টরসহ মোট ৭৯৫ হেক্টর জমিতে কৃষকরা পাট চাষ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে তাড়াইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিচ্ছে কৃষক। কৃষকরা পাট কেটে নদী-নালা, খাল-বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং বাজারে বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে, নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পাটের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। চরতালজাঙ্গা গ্রামের কৃষক খাইরুল ইসলাম বলেন, গত মৌসুমে পাটের দাম বেশি পাওয়ায় এ বছর পাট চাষে ঝুঁকেছে কৃষক। অনেক কৃষকই বলছেন পাট চাষিদের সুদিন ফিরেছে। উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের দেওথান গ্রামের কৃষক মেনু মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মণ। যার বাজার দর প্রায় ২২-২৪ হাজার টাকা। এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাট কাঠি পাওয়া যায়। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাট ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ক্রমশই পাটের দাম বাড়তে থাকে। গত বছর সর্বশেষ প্রায় ৪ হাজার টাকা মণ পাট বিক্রি হয়েছে। ফলে যারা পাট ভরা মৌসুমে বিক্রি নাকরে রেখে দিয়েছিলেন তারা বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ১০-২০ হাজার টাকা লাভবান হয়েছেন। এ বছর ভালো দামে পাট বিক্রি করতে পারবে এমনটাই আশা করছেন পাট চাষিরা।
তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা জানান,গত বছর পাটের আবাদকৃত জমির পরিমান ছিল ৭৪৮ হেক্টর যা এবছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭৯৫ হেক্টরে পৌঁছেছে। উপজেলার ধলা, জাওয়ার, দিগদাইড় ও তালজাঙ্গা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পাট চাষিদের সুদিন ফিরেছে। পাট চাষ করে কৃষক এখন অনেক লাভবান হচ্ছেন। তাই অনেক কৃষক পাট চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামীতে পাট চাষিদের নিয়ে আরো ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে।