মশিউর রহমান, টাংগাইল:
টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলাধীন ঝড়কা এলাকায় শিকদার ক্যাডেট একাডেমির প্রধান শিক্ষক শাহজাহান শিকদারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মারপিটের অভিযোগ এসেছে। শিক্ষার্থীদের মারধর করে জখম করার বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাত্র ০৫ অভিভাবক ১লা নভেম্বর, ২০২১ ইং তারিখ সোমবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিকদার ক্যাডেট একাডেমীর ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্র প্রান্ত ইসলাম এবং ঐ স্কুলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হয়রানির স্বীকার। তাদের অভিযোগ, তাদেরকে তিনবেলা যে খাবার সরবরাহ করা হয় তা একেবারেই নিম্নমানের যা খাওয়ার অনুপযুগী। খাবার সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বললেই প্রধান শিক্ষক তাদের ভেধরক মারপিট করেন বলে শিক্ষার্থীরা থানায় গিয়ে এই অভিযোগ দায়ের করে। শুধু তাই নয়, “এসব কিছু যদি বাবা মাকে বলে দিস তবে খুন করে ফেলবো” প্রধান শিক্ষকের এরকম হুমকি দেওয়ার কথাও জানা যায় শিক্ষার্থীদের মুখে। প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পুলিশের ভয় দেখিয়ে বলেন, তোদের খুন করলেও কিছু হবে না থানায় মাত্র ১০,০০০ টাকা দিলেই কেস নিষ্পত্তি পাবে বলে একই শ্রেণীর ছাত্র সানবিন আহমেদের বাবা আমিনুর রহমান থানায় অভিযোগ দেন ও সাংবাদিকদের এমনটি জানান। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারীদের সন্তান শিকদার ক্যাডেট একাডেমির ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া আসাবিক শিক্ষার্থী। ২৯ অক্টোবর, ২০২১ ইং তারিখ শনিবার ৫ জন শিক্ষার্থীকে এলোপাথাড়ীভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়। হয়রানী হওয়া শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি তাদের অভিভাবকদের ফোনালাপের মাধ্যমে জানিয়েছে। পরে অভিভাবকরা তাদের উদ্ধার করে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। অভিযোগকারীদের মধ্য থেকে ইব্রাহীম হোসেন বলেন, এর আগেও শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে, যা আমাদের অজানা ছিল। প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন, যা এখন আমাদের সন্তানরা নিরুপায় হইয়া জানাইছে। অভিভাবকদের কাছ থেকে আরো জানা যায়, আবাসিকের প্রতিজন শিক্ষার্থীর নিকট হতে মাসিক বাবদ ১০-১২ হাজার টাকা খরচ দেন তারা। ভয়ে নাকি শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে চাচ্ছে না, এটা বড়ই চিন্তার বিষয়। কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়নি। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এরা পায়তারা করছে, একটি পক্ষ প্রতিহিংসার বশবর্তি হয়ে চক্রান্ত শুরু করছে বলে শিকদার ক্যাডেট একাডেমির প্রধান শিক্ষক শাহজাহান শিকদার এমনটি জানান। মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীদের দেখতে এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইয়াসমিন গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগতো ছিলেন বলে উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সোহাগ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান। অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।