শিরোনাম
মৌলভীবাজারে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান আব্দুল মতিন খান কুরআনে যাদেরকে আল্লাহর ওলি বলা হয়েছে বানারীপাড়ায় ন্যাশনাল সার্ভিসের কমিটি গঠন। সুমন দেবনাথ সভাপতি, সজল চৌধুরী সম্পাদক সিলেটের জৈন্তিয়া রাজ্যের প্রাচীন পুরাকীর্তি  সংরক্ষণ ও সংস্কার করা এখন সময়ের দাবী-অধ্যাপক সজল নাগ জনপ্রতিনিধিরা কারা হবেন ইসলামের আলোকে! জৈন্তাপুর সদরে বাস-স্টেশন এলাকায় ভারতীয় পন্যের উপর রপ্তানী ট্যাক্স আদায়-কে কেন্দ্র করে দু’টি গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া জৈন্তাপুরে কাপ-পিরিচ প্রতীক পেলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল গফফার চৌধুরী খসরু জৈন্তাপুরে ঘোড়া প্রতীক পেলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল , সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাইলেন আমি তোমার জম মালাকুল মউত আজরাইল ৫নং কলাতলীতে বাজার ব্যবসায়ী নির্বাচন সম্পূর্ণ হয়
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১২:১২ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

” শ্রী কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী বিরচিত চৈতন্য চরিতামৃত “

Satyajit Das / ৪৫৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২২

রেখা পাঠক(কানাডা):

১ম পর্বঃ-                                                     কৃষ্ণদাসের ‘চৈতন্যচরিতামৃত’ প্রথম বাংলা গ্রন্থ যা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গ্রন্হাবলীর মধ্যে গণ্য হওয়ার যোগ্য। এই গ্রন্হের বিষয় চৈতন্যের ধর্মভাবনা এবং তাঁর বহিরঙ্গ ও অন্তরঙ্গ জীবন। কৃষ্ণ দাসের গ্রন্থ চৈতন্যের ধর্ম ভাবনার মর্মে পৌঁছবার একমাত্র পথ। চৈতন্যের বহিরঙ্গ জীবন তথ্যপ্রধান ইতিহাস। সে ইতিহাস রচনায় কৃষ্ণদাস সত্যনিষ্ঠ ও নিরাসক্ত। চৈতন্যের অন্তরঙ্গ জীবন ভাষায় বর্ণনার যোগ্য নয়।তথাপি যা ভাষার অতীত, কৃষ্ণদাসের ভাষায় তা ধরা পড়েছে। দর্শন, ইতিহাস, সাহিত্য এক হয়ে মিলে গেছে কৃষ্ণদাসের এই গ্রন্থে।

আধুনিক ভারতীয় ভাষার যে দু’খানি গ্রন্থের মর্ম ব্যাখ্যায় সংস্কৃত টীকার প্রয়োজন হয়েছিল,’চৈতন্য চরিতামৃত’ তাদের অন্যতম। এই গ্রন্থের প্রথম টীকাকার বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। আর একজন  টীকাকার রামচন্দ্র তর্কালঙ্কার। ‘চৈতন্যচরিতামৃত’ নিয়ে প্রথম গবেষণা করেন একজন জার্মান। ১৯০৭ সালে বার্লিন থেকে তাঁর গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। সাম্প্রতিকালে Edward C.Dimock-  কৃত ‘চৈতন্যচরিতামৃত’র ইংরেজি অনুবাদ হার্ভার্ড ওরিয়েন্টাল সিরিজে প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। এই সিরিজে কৃষ্ণদাসের গ্রন্থ-ই আধুনিক ভারতীয়    ভাষার প্রথম গ্রন্থ।”শ্রী তারপদ মুখোপাধ্যায়”।

শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত সম্পর্কে ডঃসুকুমার সেনের মন্তব্য -“এখনকার দিনে আমরা ‘বই'( ইংরেজি —-) বলতে সাধারণত যা বুঝি,সে অর্থে প্রথম বাংলা বই হল কৃষ্ণদাসের চৈতন্য চরিতামৃত।অর্থাৎ বিষয়ের বিস্তারে ও ব্যাখ্যায় নিজের চিন্তার ঠেলা দিয়ে গেছেন। নিজের বিশিষ্ট উক্তির সমর্থনে যুক্তি দিয়েছেন,যুক্তির সমর্থনে প্রমাণ উদ্ধৃত করেছেন। এসব হল আধুনিক কালের বইয়ের লক্ষণ।

কৃষ্ণ দাস চৈতন্যচরিতামৃত লিখেছিলেন অনেকটা আধুনিক কালের ঐতিহাসিক পণ্ডিতের দৃষ্টি নিয়ে।
সর্বত্র তিনি প্রমাণ উদ্ধৃত করে গেছেন। এমন দৃষ্টি নিয়ে আর কোনো দ্বিতীয় বই বাংলায় লেখা হয়নি  ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের পূর্ব পর্যন্ত।
চৈতন্যচরিতামৃত হল প্রথম বাংলা বই যা গান করবার জন্য বা সুরের তালে আবৃত্তি করবার জন্য  লেখা হয়নি,লেখা হয়েছিল পড়বার ও পড়ে শোনাবার জন্য। সেই বইটির ‘খণ্ড’-৩ বিভাগের পর হয়েছে’পরিচ্ছদ’ বিভাগ। চৈতন্যচরিতামৃতের আগে আমি কখনও কোনো বাংলা বইয়ে পরিচ্ছেদ -বিভাগ দেখিনি।

চৈতন্যচরিতামৃত সবশুদ্ধ বাষট্টি পরিচ্ছেদে লেখা।
আদিখণ্ডে সতেরো পরিচ্ছদ,মধ্য খণ্ডে পঁচিশ,আর অন্ত(বা শেষ) খণ্ডে বিশ। প্রত্যেক খণ্ডের শেষে আছে সেই খণ্ডের বিষয়ে ‘অনুবাদ’ অর্থাৎ সূচী।এ-ও বাংলা বইয়ে এক অভিনবত্ব। চৈতন্যচরিতামৃত আদ্যন্ত পদ্যে লেখা। প্রত্যেক পরিচ্ছেদের প্রথমে একটি বা দুটি করে গ্রন্থাকার রচিত মঙ্গলাচরণ শ্লোক আছে সংস্কৃতে। –তা ছাড়া প্রচুর প্রমাণ -শ্লোক উদ্ধৃত হয়েছে গীতা, ভাগবত, বিষ্ণুপুরাণ,ব্রহ্মসংহিতা, শ্রীমদ্ভগবদগীতা, উজ্জ্বলনীলমণি প্রভৃতি বিবিধ গোস্বামী গ্রন্থ এবং অপর অনেক গ্রন্থ থেকে।চৈতন্যচরিতামৃত সহজ অথচ দুরূহ গ্রন্থ। যখন  কৃষ্ণদাস চৈতন্যের কথা বলেছেন,তখন ভাব যেমন গভীর,বিবেচনা তেমনি সূক্ষ্ম এবং ভাষা তদুচিত। যখন তত্ত্ব কথা বলেছেন,তখন ও ভাষাকে রেখেছেন সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তির বোধের গণ্ডিমধ্যে।

কৃষ্ণদাসের বাহাদুরি কঠিন বস্তুকে সহজ প্রকাশে। এইভাবে দেখলে তাঁকে বাংলার লেখকদের আদিপুরুষ বলতে হয়। কৃষ্ণদাসের কলমের শক্তি দুভাবে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর বাংলা রচনায়। পয়ারের দৌড়ে তাঁর বুদ্ধির জোর আর তর্কের গাঁটছড়ার প্রকাশ,ত্রিপদীর প্রসন্ন প্রবাহে তাঁর  ভাবুকতার প্রবাহ।”ডঃ সুকুমার সেন”।

ডঃ সুকুমার সেন শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের রচয়িতা শ্রীকৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর নিবাস এর পরিচয় দিয়েছেন নৈহাটির নিকটে ঝামটপুর গ্রামে এবং এক রাতে কৃষ্ণদাস প্রভু নিত্যানন্দকে স্বপ্নে দর্শন করেন।কৃষ্ণদাস সেদিন শেষ রাত্রিতে স্বপ্নে দেখলেন নিত্যানন্দকে। অপূর্ব মোহন মূর্তি। কৃষ্ণদাস ভূমিষ্ট  হয়ে প্রণাম করলেন। প্রভু তাঁর মাথায় পা ঠেকালেন আর ‘অভয় দিয়ে বললেন, “ওঠো, ওঠো, কোনো ভয় নেই।তুমি বৃন্দাবনে যাও। সেখানে তুমি সব পাবে। “এই বলে চলে যাবার হাতছানি দিয়ে প্রভু অন্তর্হিত হলেন। ঘুম থেকে উঠে কৃষ্ণ দাস দেখলেন সকাল হয়েছে।
তাঁর পরেই তিনি  বৃন্দাবনে চলে এলেন। পথে কোনো কষ্ট পাননি।এসে মিলিত হলেন সনাতন ও রূপের সঙ্গে। পরে(?)মিলত হলেন রঘুনাথদাসের সঙ্গে। কৃষ্ণদাস সংসার ত্যাগ করে অর্থাৎ বৈরাগী হয়ে বৃন্দাবন যাননি। বৃন্দাবনে এসে তিনি রূপ গোস্বামীর
সেক্রেটারির মতো হয়েছিলেন। কৃষ্ণ দাস নিজেই স্বীকার করেছেন- “কৃষ্ণদাস রূপগোঁসাইর ভৃত্য ‘।
রঘুনাথদাস বৃন্দাবনে এলে পর তাঁকে দেখাশোনার সব ভার নিয়েছিলেন কৃষ্ণদাস। চলবে……………

 

প্রেরকঃ- সত্যজিৎ দাস(স্টাফ রিপোর্টার)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন