স্টাফ রিপোর্টার:
হবিগঞ্জের বাহুবলের বহুল-আলোচিত হতদরিদ্র কৃষক দুলাল মিয়া হত্যা মামলার পলাতক মূল আসামী সহ আরও দুজনকে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে বাহুবল মডেল থানা পুলিশের চৌকস দল।
গত ২৪ জুলাই বাহুবল উপজেলার শংকরপুর গ্রামে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের আঘাতে ৮ সন্তানের জনক দিনমজুর নিরীহ কৃষক দুলাল মিয়া খুন হন। হবিগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব এস.এম.মুরাদ আলি মহোদয় দ্রুত উক্ত মামলার মূল আসামীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বাহুবল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মূল আসামি কবির সহ তার সহযোগী অপর দুই আসামিকে বুধবার (০৩ আগষ্ট) ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য যে,বাহুবল উপজেলার ০৩ নং সাতকাপন ইউনিয়নের অন্তর্গত শংকরপুর গ্রামে রাস্তার উপর ঝড়ে বাঁশ হেলে পড়ে রাস্তা চালাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। একই গ্রামের সিএনজি চালক জুলহাস মিয়া উক্ত বাঁশ নিজ দায়িত্বে কাটাকে কেন্দ্র করে শংকরপুর গ্রামে দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল ঝগড়া ও বিরোধ সৃষ্টি হয়। তারই জের ধরে গত ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসামীগণ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র সহ অতর্কিত আক্রমন করে দুলাল মিয়া এবং তার অন্যান্য লোকজনদের আহত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় জখমীদের চিকিৎসার জন্য বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়ার পথে দুলাল মিয়া পথেই মৃত্যুবরণ করে। অন্যান্য জখমীদের উন্নত চিকিৎসার্থে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
উক্ত মারামারির সংবাদ পাওয়ার পর তাৎক্ষনিক সহকারী পুলিশ সুপার,বাহুবল সার্কেল ও অফিসার ইনচার্জ সহ থানার অন্যান্য অফিসার ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে । ঐ রাতেই অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত ০৫ জন আসামী গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে নিহত হতদরিদ্র কৃষক দুলাল মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ আমিনা খাতুন বাদী হয়ে কবির মিয়া সহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে বাহুবল মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে প্রধান আসামী কবির মিয়া,তার ভাই শাহীন মিয়া ও আয়িদ মিয়া পালিয়ে ঢাকায় এবং কুমিল্লা জেলায় আত্নগোপন করে থাকে।
এরপর হবিগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় এস আই আল আমিন সহ বাহুবল মডেল থানার একটি চৌকস টিম বিভিন্ন সময়ে ঢাকা সহ আশপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখেন এবং গত মঙ্গলবার (০২ আগষ্ট) তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মূল আসামি কবির সহ তার ভাই শাহীন মিয়া ও আয়িদ মিয়া’কে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি সহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। তারপর ০৩ আগষ্ট রোজ বুধবার হত্যা মামলার সাথে জড়িত আগের গ্রেফতার করা ৫ আসামী ও ঢাকা থেকে গ্রেফতারকৃত ৩ জন সহ মোট আটজনকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
হবিগঞ্জ,সিলেট,কুমিল্লা ও ঢাকা পুলিশের
সকল অফিসারদের সার্বিক প্রচেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ একটি সফল অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের অল্প সময়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এতে নিহত দুলাল মিয়ার পরিবার সহ শংকরপুর গ্রামবাসী বাহুবল মডেল থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।