তাহিরপুর :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাওর এলাকার মানুষের বর্ষা মৌসুমে চলাচলের একমাত্র ভরসা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও কাঠের ছোট নৌকা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী ও হাওর পারাপার হলেও যাত্রীদের নিরাপত্তায় নেই কোন ব্যবস্থা। প্রতি বছরই নৌকায় অতিরিক্ত মালামাল, নৌকায় অদক্ষ চালক, অসতর্কতা, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও ঝুঁকিপূর্ন ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে যাতায়াতের কারণে হাওর ও নদীতে ঘটছে নৌ দুর্ঘটনা। ঝুঁকিপূর্ণ ট্রলার ও নৌকা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের নেই কোন তদারকি। যাত্রীদের নেই কোন লাইফ জ্যাকেট বা সুরক্ষা সামগ্রী। সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলাটি ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নের মানুষের বসবাস দূর্গম হাওর এলাকায়। বর্ষা মৌসুমে ইউনিয়ন গুলো থেকে উপজেলা সদরে সঙ্গে নেই কোন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ উপজেলায় বাদাঘাট, বালিয়াঘাট, তাহিরপুর সদর, শ্রীপুর, কাউকান্দি, লামাগাও, সহ বেশ কয়েকটি ছোট বড় বাজার রয়েছে।
আর এসব বাজারে হাওর পাড়ের শতাধিক গ্রামের মানুষের যাতায়তের অন্যতম মাধ্যম ট্রলার ও নৌকা। হাওর পাড়ের মানুষ প্রতিদিন জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোন রকম যাত্রী সুরক্ষা ছাড়াই ট্রলার ও নৌকায় করে তারা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাচ্ছেন। এছাড়া ধান, চাল, মাছ, শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য হাওরপাড়ের মানুষ প্রতিদিন ট্রলার ও নৌকায় করে উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন বাজারে যাতায়াত করছেন। ফলে মাটিয়ান, শনি, টাঙ্গুয়া, যাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি, পাটলাই সহ ছোট বড় হাওর-নদী পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায় সময়েই নৌক দুর্ঘটনায় প্রাণ হানির ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি পাটলাই নদী ও চুনখলা হাওরে নৌকা ডুবির ঘটনায় তেল বিক্রেতা স্বপন মিয়া ও চা বিক্রেতা তৌফিক মিয়ার মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। অতিরিক্ত যাত্রী বুঝাই, ঝুঁকিপূর্ণ নৌকা আর লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই যাত্রীরা পারাপার হচ্ছেন। এসবে দেখবালে স্থানীয় প্রশাসনের নেই পর্যাপ্ত নজরদারি। সুজন ও ইসলাম উদ্দিন নামে দুই যাত্রী বলেন, হাওর এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। বর্ষায় হাওরে যখন উত্তাল ঢেউ থাকে তখন সমস্যা আরও তীব্র হয়।
তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হাওর ও নদী এলাকায় সরকারি নৌ-যান চলাচলের মাধ্যমে দুর্ঘটনা এড়াতে তদারকি বাড়ানোর দরকার। তিনি বলেন, হাওর এলাকায় নৌকা ডুবির ঘটনা এড়াতে নিজেদের সতর্কতার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা এখানে খুব বেশী প্রয়োজন। তাহিরপুর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান বলেন, হাওর এলাকায় পুলিশের নজরধারি আছে। তবুও পুলিশের পাশাপশি যাত্রীদের সতর্ক থাকা উচিত। ঝুঁকিপূর্ণ নৌকা ও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে হাওর ও নদী যাতায়াত না করতে সবার প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন।