সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে ধর্ষণের পর তা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছিলো ধর্ষকরা। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন সরকার দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতাও। পুলিশও প্রথমে এতে সায় দেয়। তবে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার সাহসীকতা আর অনমনীয়তায় ধামাচাপা দেওয়া যায়নি নারকীয় সেই ঘটনা। জানা যায়, শুক্রবার রাতে ছাত্রাবাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর প্রাইভেটকার আটকে রেখে স্বামীসহ তাকে ছেড়ে দেয় ধর্ষকরা। তাদের টাকা-পয়সা এবং স্বর্ণলাংকারও ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। এরপর কাঁদতে কাঁদতে ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে আসেন ওই তরুণী ও তার স্বামী।
টিলাগড় পয়েন্টে তাদের কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন ওই এলাকার বাসিন্দা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা। যিনি বাবলা চৌধুরী নামেই। বাবলা চৌধুরীর কাছে ছাত্রবাসের নারকীয় ঘটনার বর্ণণা দেন ওই তরুণ-তরুণী। এরপর বাবলা ফোন দেন শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। তবে পুলিশ আসার আগেই ওই তরুণ-তরুণীকে নিয়ে ছাত্রাবাসের দিকে রওয়ানা দেন বাবলা। সে রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে বাবলা চৌধুরী সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, ছাত্রাবাসে গিয়ে আমি সাইফুর-রবিউলসহ কয়েকজনকে দেখতে পাই। আমাকে দেখেই তারা ওই দম্পত্তির গাড়ি চাবি ও মোবাইল ফোন আমার হাতে তুলে দেয়। তারা এগুলো ফেলে গেছে বলে সাইফুর আমাকে জানায়। চাবি আর মোবাইল নিয়ে আমি পুনরায় ছাত্রাবাসের গেইটে এসে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।
বাবলা চৌধুরী বলেন, ছাত্রাবাসের গেইটে এসে দেখতে পাই সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক দেবাংসু দাস মিঠু ও যুবলীগের জাহাঙ্গীর ,কামরুল ,নাজমুল সহ কয়েকজন গেইটে দাঁড়িয়ে আছেন। এরপর কিছুক্ষণ পর পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে।
বাবলা বলেন, ছাত্রাবাসে প্রবেশের জন্য পুলিশ কলেজ প্রশাসনের অনুমতির অপেক্ষায় ছিলো। এতে অনেকটা সময় ক্ষেপন। এসময় জড়ো হওয়া সরকারদলীয় নেতারা প্রথমে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন। এরপর তারা আপোষের চেষ্টা চালান। আপোষের চেষ্টায় শাহপরান থানার ওসিও তাদের সহায়তা করেছিলেন। তবে আমি এরকম আপোষের প্রস্তাব মানিনি। এছাড়া কয়েকজন পুলিশ সদস্যও এরকম প্রস্তাবে রাজি হননি। তবে এসব কথাবার্তায় অনেক সময়ক্ষেপন হওয়ার সুযোগে অভিযুক্তরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।