সত্যজিৎ দাস,সংবাদ প্রতিনিধি।
আজ (১৯ জুলাই ২০২১) রোজ সোমবার বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মাসকান্দি গ্রামের প্রণব ভট্টাচার্য্য (৫০) করোনা উপসর্গ নিয়ে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন। ” দিব্যান লোকান স গচ্ছতু “।
মৃতের পরিবারের সদস্যবর্গ ও আত্মীয়স্বজনদের ডাকে সাড়া দিয়ে “শ্মশানবন্ধু সংঘ” মৌলভীবাজার মৃতদেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সুসম্পন্ন করেছে।
“শ্মশানবন্ধু সংঘ” মৌলভীবাজার এর সমন্বয়ক অমলেন্দু কুমার দাশ সিলেট নিউজ24’কে বলেন ‘
টিমের সদস্যদের মৃতদেহ সৎকারের কাজে পাঠিয়ে আমরা শান্তিতে থাকতে পারি না। আমার বন্ধু ও সংগঠনের সমন্বয়কারী রুদ্রজিত ঘোষ মিশুকে নিয়ে চলে যাই মাসকান্দি গ্রামে। চিতায় তখন আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে,সন্ধ্যা নেমে আসছে। এই কুলিন ব্রাহ্মণের অসময়ের মৃত্যু খুবই কষ্টদায়ক।দরিদ্র ব্রাহ্মণ,পূজা অর্চনা করেই পরিবারের জীবিকা চালাতেন। ভগবান,প্রণব বাবুকে চিরদিনের জন্য নিয়ে গিয়ে শোক সাগরে ভাসিয়ে গেছেন তার কিশোরী মেয়ে প্রাপ্তি ভট্টাচার্য্য ও স্ত্রী অর্পনা ভট্টাচার্যকে। বড় মেয়েটি শ্বশুরবাড়িতে সন্তান সম্ভাবনাময় রয়েছেন। অসহায়ের মতো আমরা বাড়িতে গেলাম। টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনির ঘরের দরজায় অবুঝ মেয়ে ও তার স্ত্রী পাথর হয়ে মাটিতে বসে আছেন। শান্তনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা ছিল না। কী দিয়ে আমি শান্তনার বাণী শুনিয়েছি জানি না। আপনজনের চির বিদায়ে মা ও মেয়ে পাগলের মতো কান্নাকাটি করে নিস্তেজ হয়ে আমাদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন অনেকক্ষণ। আমি মনে মনে বলেছিলাম হায় ভগবান,এ কী হলো!! এ সংসারে তারা আজ যে বড়ই অসহায়। তুমি রক্ষা করো। ঈশ্বর প্রণব ভট্টাচার্য্য কে স্বর্গবাসী করুন,এই প্রার্থনা করি।
আমাদের মৌলভীবাজারের “শ্মশানবন্ধু সংঘ” এই ব্রাহ্মণের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে সম্পন্ন করেছেন; টিম প্রধান কালীপদ শীল।
শ্রী পলাশ চন্দ্র শীল,শ্রী সুমন চন্দ,শ্রী সুদীপ ভট্টাচার্য্য(সদস্যবৃন্দ) ‘।
উল্লেখ্য যে, মৌলভীবাজারে “শ্মশানবন্ধু সংঘ”-এর এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ছিলো ৪র্থ। সকল অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াই সনাতন (হিন্দু) ধর্মীয় বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ও সরকারের স্বাস্থ্য বিধি মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অমলেন্দু কুমার দাশ আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করায় বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন “শ্মশানবন্ধু সংঘ” এর উপদেষ্টা মন্ডলী ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার শ্রী বিনেন্দু ভৌমিক কে।