বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

মৌলভীবাজারে খঞ্জনপুর হাত-পা বাঁধা ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন

রিপন মিয়া / ২৭০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০২২

রিপন মিয়া মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউপির খঞ্জনপুর এলাকায় সড়কের পাশে বাক্স থেকে হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাতনামা (৫৫) এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এতে পুলিশ ক্লুলেস ঐ হত্যাকাÐের ঘটনায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে জড়িত তিন আসামীকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে। এরমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে এক আসামী।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ০৫ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে খঞ্জনপুর নামক এলাকায় সড়কের পাশে একটি কাগজের বাক্সের ভিতর হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা এবং মুখমন্ডল সাদা পলিথিন দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাতনামা (৫৫) এক ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে স্থানীয় খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মিয়া চৌধুরী থানায় এমন একটি খবর জানান।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশের মৃত. ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করতঃ যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কার্যক্রম সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ মেডিকেল হাসপাতালে মর্গে ঐ লাশটি প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে লাশের কোন ওয়ারিশ বা উপস্থিত লোকজন লাশ সনাক্ত করতে না পারায় লাশের দাফনের নিমিত্তে মৌলভীবাজার পৌরসভা বরাবর প্রেরণ করলে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার ঐ অজ্ঞাতনামা লাশের দাফন সম্পন্ন করেন।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগন পরষ্পর যোগসাজসে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে খুন করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বর্ণিত ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যায় মর্মে পুলিশের এসআই ইফতেখার ইসলাম মৌলভীবাজার সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে তৎপ্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ মৌলভীবার সদর মডেল থানা একটি খুন মামলা রুজু করে মামলার তদন্তভার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) মোঃ মশিউর রহমান এর উপর অর্পন করেন।

এ ঘটনায় মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া এর নিদের্শনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় (ক্রাইম এন্ড অপস) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান, সদর সার্কেল, মৌলভীবাজারের প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে ও তদারকিতে অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ ইয়াছিনুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ তদন্ত টীম ২৪ ঘন্টার মধ্যে উক্ত ক্লু-লেস লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারে সক্ষম হন। তদন্তকালে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ মশিউর রহমান অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় সনাক্তের জন্য বেতার বার্তা সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দত্তগ্রাম এলাকার মৃত. আয়না মিয়ার পুত্র আইয়ুব আলী (৫৫) এর শনাক্ত হয়।

পরবর্তীতে ভিকটিম আইয়ুব আলীর আত্মিয়-স্বজন এবং দত্তগ্রামের অন্যান্য লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় উল্লিখিত হত্যাকাÐের ঘটনার সাথে জনৈক মনসুর রহমান, অনুপ দাস সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগনের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পুলিশি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে । এতে দত্তগ্রাম এলাকা হতে সন্দিগ্ধ আসামী মনসুর রহমান (৩০), পিতা মৃত. শফিকুর রহমান এবং অনুপ দাস (৪০), পিতা-মৃত অহি ভোষন দাস, উভয় সাং-দত্তগ্রাম, থানা-নবীগঞ্জ, জেলা-হবিগঞ্জদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়।

হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষে গ্রেফতারকৃত সন্দিগ্ধ আসামীদ্বয়কে নিবিড় এবং কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামীরা জানায় যে, ভিকটিম আইয়ুব আলীর সাথে টাকা পয়সার লেনদেন এবং পুর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ঐ হত্যাকাÐটি গত-০৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১০টার সময় আসামী মনসুর,অনুপ দাস ও পলাতক আসামী ইকবাল হোসেন মিলে সংঘঠিত করেছে। পরে ৭ জুলাই গ্রেফতারকৃত আসামী মনসুর রহমান (৩০) এবং অনুপ দাস (৪০) দ্বয়কে বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করলে আসামী মনসুর রহমান নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

এছাড়া তাদের দেয়া তথ্যমতে পরবর্তীতে পুলিশ একইদিনে পলাতক অপর আসামী মামুদ ইকবাল,পিতা- ছানু মিয়া,গ্রাম দত্তগ্রাম, নবিগঞ্জ, হবিগঞ্জকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে ০৮ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে। এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের ঘটনায় রুজুকৃত হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন